‘আই এম ভাইরাস’ করোনা নিয়ে গান বেঁধে বিশ্বের দরবারে সুনাম কুড়িয়ে নিয়েছেন মালদার বাসিন্দা পেশায় অধ্যাপক ড. শিবশংকর চৌধুরী। সম্প্রতি মিউজিক কম্পোজিশন ও মিউজিক টেকনোলজির ওপর সুইডেনের রয়্যাল কলেজ অফ মিউজিকে (Royal college of music) এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। মিউজিক কম্পোজিশনের ওপর এই প্রথম ভারতীয় কোনও গান গবেষক সুযোগ পেলেন ইনোভেশন ইন মিউজিকে। বিশ্বের বিভিন্ন দেশের মোট ৭৭ জন এই সৃজনশীলতা অনুষ্ঠানে সুযোগ পান। প্রত্যেককে নিজের গানের সৃজনশীলতার বিষয়বস্তু তুলে ধরার পাশাপাশি গান গাওয়ার সুযোগ মেলে। মালদার অধ্যাপকের হাত ধরেই এই প্রথম গোটা দেশ বিশ্বদরবারে গর্বিত হল। শিবশংকরবাবুর গান লেখার পাশাপাশি নিজের গলায় গান গেয়ে বিশ্বজুড়ে সাড়া ফেলেছেন। বিশ্বের একাধিক দেশের আলোচনা সভায় তাঁর লেখা গান জায়গা করে নিয়েছে।
চলতি বছরের ইনোভেশন ইন মিউজিকে জায়গা করে নিয়েছে ডক্টর শিবশংকরবাবুর লেখা ও গাওয়া ‘আই এম ভাইরাস’। মূলত করোনা সংক্রমণের ওপরই এই গানটি তৈরি করেছেন শিবশংকরবাবু। বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে প্রতিযোগীরা অংশগ্রহণ করেন। মিউজিক কম্পোজিশন ও মিউজিক টেকনোলজি, এই দুই বিষয়ের উপর গান বেছে নেন উদ্যোক্তারা।
উল্লেখ্য, মালদা শহরের দেশবন্ধু পাড়ার বাসিন্দা ড. শিবশঙ্কর চৌধুরী (৩৬)। দিল্লির ইগনু বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইংরেজিতে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর পাশ করেন। চালর্স বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এথোনোমিউজিকলজি কোর্স করেন। ২০১২ সালে মালদা গনিখান চৌধুরী কারিগড়ি বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজির অধ্যাপক হিসাবে যোগদান করেন। আমেরিকা ও ব্রিটিশ পপ গানের ওপর পিএইচডি সম্পন্ন করেন। এছাড়াও দশ বছরের বেশি সময় ধরে গবেষণামূলক পাশ্চাত্য গান লিখে চলেছেন ড. শিবশংকর চৌধুরী। তারপর থেকেই ওয়েস্টার্ন গানের ওপর ঝুঁকি বারে। যদিও পিএইচডি করার আগে থেকেই তাঁর ওয়েস্টার্ন গানের প্রতি ভালোবাসা ছিল। এখন পর্যন্ত তিনি মোট ১৬ টি গান নিজে লিখেছেন। অস্ট্রেলিয়া, ইংল্যান্ড, ইউএসএ সহ বিভিন্ন দেশের নামিদামী স্টুডিওতে তিনি গান রেকর্ড করিয়েছেন। বিখ্যাত বিদেশি মিউজিক কোম্পানি থেকে তার লেখা ও গাওয়া গান প্রকাশিত হয়েছে। সমস্ত গানগুলি ইংরেজিতে, কোনও কমার্শিয়াল নয়, তিনি মূলত গবেষণামূলক গান নিয়েই কাজ করে চলেছেন। সুইডেনের ইনোভেশন ইন মিউজিকে যে গানটি নির্বাচিত হয়েছে। সেই গান ‘আই এম ভাইরাস’ অস্ট্রেলিয়ার বিখ্যাত স্টিভ রবিনের স্টুডিওতে সমস্ত কাজ হয়েছে। আর এই গান গেয়েই বিশ্ব বাজারে বাংলার অধ্যাপক সুনাম অর্জন করে নিয়েছেন।
অধ্যাপক ড. শিবশংকর চৌধুরী বলেন, দীর্ঘদিন ধরে আমি নানান ভাষায় গানের উপর চর্চা করে আসছি, গবেষণাও করছি। কমপক্ষে দশটি দেশের ভাষা ওপর আমি গান বাধার চেষ্টা করছি। সম্প্রতি করোনা ভাইরাসের উপর ‘আই এম ভাইরাস’ গান বেঁধেছিলাম। তারপরেই সেটি সুইডেনের একটি প্রতিযোগিতায় সাফল্য পেয়েছে। আগামীতে আরো উচ্চ মাপের গান তৈরি করে বাংলার চর্চা তুলে ধরার প্রচেষ্টা রয়েছে।