জঙ্গলের মধ্যে বোমা বাঁধতে গিয়ে আচমকায় বিস্ফোরণ। আর তাতেই দু’জনের দেহ ছিন্ন ভিন্ন হয়ে গেল। ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় দু’জনের। আহত হয়েছে দু’জন। যদিও এই ঘটনায় মৃতের সংখ্যা আরো বাড়ার সম্ভাবনা রয়েছে বলেই অনুমান পুলিশের। বোমা ফেটে বিস্ফোরণের ঘটনার পর দেহ লোপাট করা হতে পারে বলে আশঙ্কা তদন্তকারী পুলিশ কর্তাদের। রবিবার ভোরে ঘটনাটি ঘটেছে মালিকচক থানার গোপালপুর এলাকায়। আহতদের মধ্যে একজনকে চিকিৎসার জন্য মালদা মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে। অপর আহতকে মানিকচকের গঙ্গা নদী পার করে ঝাড়খণ্ডে নিয়ে যাওয়া হয়েছে বলেও প্রাথমিক তদন্তে জানতে পেরেছে পুলিশ। কি কারণে বোমা বাঁধার কাজ চলছিল, সে ব্যাপারেও তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ। রবিবার সকালে এই বোমা বিস্ফোরণের ঘটনার পর মানিকচকের গোপালপুর এলাকায় যায় জেলা পুলিশ সুপার প্রদীপ কুমার যাদব, ডিএসপি প্রশান্ত দেবনাথ সহ পদস্থ কর্তারা। বিস্ফোরণ স্থল তদন্ত করে দেখে পুলিশ কর্তারা। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, মৃত দু’জনের নাম শফিকুল ইসলাম (৩২) এবং ফারজান আলি (৩৭)। আহত দু’জনের নাম ও পরিচয় এখনো জানতে পারেনি পুলিশ। যে পরিত্যক্ত জঙ্গলে বোমা বাঁধার কাজ চলছিল, সেখান থেকে দু’জনের শরীরের কয়েকটি অংশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। বোমা বিস্ফোরণের তীব্রতা এতটাই ছিল যে মৃতদের শরীর থেকে হাত পা ছিন্নভিন্ন হয়ে যায়।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, গোপালপুর এলাকার নির্জন একটি পাট ক্ষেতের মধ্যে এদিন ভোরে ছয় থেকে সাতজন মিলে বোমা বাঁধার কাজ করছিল। সেই সময় আচমকায় বিস্ফোরণ ঘটে। পুলিশের অনুমান, একসঙ্গে তিন থেকে চারটি বোমা পরপর ফেটে যায়। তাতেই ঘটনাস্থলে মারা যায় দু’জন। আহতদের সংখ্যা বেশি রয়েছে। তবে একজনকে মালদা মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে পাওয়া ভর্তি করা হয়েছে তার কোনও জ্ঞান নেই। পুলিশি ঘেরাটোপে ওই ব্যক্তির চিকিৎসা চলছে।
এদিকে মৃত ফারজান আলির স্ত্রী আজমিরা বিবি জানিয়েছেন, এদিন ভোরে গ্রামের কয়েকজন এসে স্বামীকে ডেকে নিয়ে যায়। কারণ একটি গোষ্ঠীর সঙ্গে বেশ কিছুদিন ধরে গ্রাম্য বিবাদ চলছিল। ওরা আমাদের ওপর হামলা করতে পারে। মারধর করতে পারে। এভাবেই আমার স্বামীর দলবল তৈরি হওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছিল। তা বলে ওরা যে বোমা বানাতে পারে সেটা ভাবিনি। পরে গ্রামবাসীদের মুখে জানতে পারি বোমা বিস্ফোরণে দুইজনের মৃত্যু হয়েছে। আমার স্বামী জখম হয়েছে।
পুলিশ সুপার প্রদীপ কুমার যাদব জানিয়েছেন, পুরো বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। প্রাথমিকভাবে দুজনের মৃত্যুর বিষয়টি শনাক্ত করা হয়েছে আহত একজন মেডিক্যাল কলেজ রয়েছে। এই ঘটনার পিছনে কারা কিভাবে জড়িয়ে তুলেছে পুরো বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।