ধৃত ৮ ইসিএল-এর প্রাক্তন ও বর্তমান আধিকারিকদের ১৮ জুলাই পেশ করার নির্দেশ সিবিআই আদালতের

কয়লা পাচার মামলায় ইসিএলের প্রাক্তন জেনারেল ম্যানেজার সুভাষ মুখোপাধ্যায়ের তিনদিনের সিবিআই হেপাজত হল। শনিবার সকালে কলকাতার নিজাম প্যালেস থেকে আসানসোলের সিবিআই বিশেষ আদালতে হাজির করা হয় তাঁকে। সিবিআইয়ের আইনজীবী রাকেশ কুমার সওয়াল করে বলেন, এই ইসিএলের কর্তার সঙ্গে কয়লা পাচারে অভিযুক্ত অনুপ মাঝি ওরফে লালার যোগাযোগ রয়েছে। দু’জনের মধ্যে টাকারও লেনদেন হয়েছে। আরও তথ্য তার কাছ পেতে সিবিআই তাঁকে হেপাজত নিয়ে জেরা করবে। তাকে তিনদিন হেপাজত চেয়ে আবেদন করেন সিবিআইয়ের আইনজীবী। সুভাষ মুখোপাধ্যায়ের আইনজীবী উদয়চাঁদ মুখোপাধ্যায় সিবিআইয়ের আইনজীবীর হেপাজতে নেওয়ার বিরোধিতা করে বলেন, আমার মক্কেল সব সময় সহযোগিতা করছেন। এমন কোনও তথ্য সিবিআই আদালতে জমা দিতে পারেনি যাতে অনুপ মাঝির সঙ্গে তার মক্কেলের যোগাযোগ থাকার প্রমাণ পাওয়া যাচ্ছে। দু’পক্ষের সওয়াল-জবাব শেষে বিচারক রাজেশ চক্রবর্তী সিবিআইয়ের আবেদনের ভিত্তিতে জামিন নাকচ করে তিনদিনের সিবিআই হেপাজতের নির্দেশ দেন। প্রসঙ্গত, ইসিএলের প্রাক্তন ও বর্তমান জেনারেল ম্যানেজার সহ ৭ জনকে গ্রেপ্তার আগেই করেছে সিবিআই। তার ৪৮ ঘণ্টার মধ্যেই সদ্য অবসর নেওয়া ইসিএল-এর জেনারেল ম্যানেজার সুভাষ মুখোপাধ্যায়কে সিবিআই গ্রেপ্তার করে শুক্রবার রাতে। এদিন গ্রেপ্তার হওয়া অভিযুক্ত সুভাষ মুখোপাধ্যায় সহ দু’দিন আগে গ্রেপ্তার হওয়া বাকি ৭ জনকে আসানসোল সিবিআই-এর বিশেষ আদালতে আগামী ১৮ জুলাই একসঙ্গে হাজির করানোর হবে। আইনজীবী উদয়চাঁদ মুখোপাধ্যায় জানিয়েছেন, সুভাষ মুখোপাধ্যায় তিন মাস আগে ইসিএলের সাঁকতোরিয়া সদর দপ্তরের জেনারেল ম্যানেজার পদ থেকে অবসর নিয়েছেন। শুক্রবার সকালে সুভাষ মুখোপাধ্যায়কে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য নোটিশ দিয়ে কলকাতার নিজাম প্যালেসে তলব করেছিল সিবিআই। দীর্ঘ জিজ্ঞাসাবাদের পর তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। তারপরই সিবিআই-এর তরফ থেকে তার স্ত্রীকে জানানো হয় শনিবার আসানসোলের বিশেষ সিবিআই আদালতে তাকে পেশ করা হবে। সুভাষবাবুর আইনজীবী আরও বলেছেন, ২০২০ সালের আরসি ২২/২০ বেআইনি কয়লা পাচার কেলেঙ্কারি মামলায় সিবিআই সুভাষবাবুর ফ্ল্যাটে তল্লাশি চালিয়ে কিছু নথি, দলিল এবং ২৬টি কিষাণ বিকাশ পত্র এবং কয়েক লক্ষ টাকা বাজেয়াপ্ত করে। অভিযুক্তর আইনজীবীর দাবি, আবাসন সহ অন্য সবকিছুই ২০০৮ বা তার আগে কেনা হয়েছিল। বেআইনি কয়লা পাচার মামলায় সিবিআই বুধবার রাতে ৭ জনকে গ্রেপ্তার করেছিল। তারা হলেন, প্রাক্তন জেনারেল ম্যানেজার অভিজিৎ মল্লিক, সুশান্ত বন্দ্যোপাধ্যায়, তন্ময় দাস, বর্তমান জেনারেল ম্যানেজার এস সি মৈত্র এবং মুকেশ কুমার। এ ছাড়াও রয়েছেন দুই নিরাপত্তারক্ষী দেবাশিস মুখোপাধ্যায় ও রিঙ্কু বেহেরা। বৃহস্পতিবার সকালে তাদের আসানসোলের বিশেষ সিবিআই আদালতে পেশ করা হয়। বিচারক রাজেশ চক্রবর্তী তাদের জামিন নাকচ করে পাঁচ দিনের সিবিআই হেপাজতের নির্দেশ দেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

five + fifteen =