বুন্দেলখণ্ড এক্সপ্রেসওয়ে উদ্বোধনে বিরোধীদের ‘মিষ্টি প্রতিশ্রুতি’ থেকে সতর্ক থাকার বার্তা মোদির

ভোটের লোভে পাইয়ে দেওয়ার রাজনীতি চলছে দেশজুড়ে। বিনামূল্যে পরিষেবার ঢালাও প্রতিশ্রুতির দিচ্ছেন রাজনীতিবিদরা। এই সংস্কৃতি মারাত্মক। দেশের উন্নয়নের জন্য ক্ষতিকারক এভাবে ভোটের মুখে মিষ্টি মিষ্টি প্রতিশ্রুতি দেওয়া। এই বিষয়ে সতর্ক থাকুন। বুন্দেলখণ্ড এক্সপ্রেসওয়ে (Bundelkhand Expressway) উদ্বোধনের গিয়ে দেশবাসীকে সতর্ক করলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি (Narendra Modi) ।

শনিবার উত্তরপ্রদেশের (Uttar Pradesh) জালাউনে ২৯৬ কিলোমিটার দীর্ঘ এক্সপ্রেসওয়ে উদ্বোধন করেন মোদি।প্রসঙ্গত, ২৯৬ কিলোমিটার লম্বা বুন্দেলখণ্ড এক্সপ্রেসওয়ের ফলে এই অঞ্চলের চিত্রকূট ইটাওয়া লখনউ- আগ্রা এক্সপ্রেসওয়ের সঙ্গে যুক্ত হবে। ৪ টি লেনের এই এক্সপ্রেসওয়ে তৈরি করতে খরচ হয়েছে মোট ১৪ হাজার ৮৫০ কোটি টাকা। এই এক্সপ্রেসওয়ে তৈরিতে সময় লেগেছে ২৮ মাস। নির্ধারিত সময়ের ৮ মাস আগেই নির্মাণ কাজ শেষ হয়েছে এই এক্সপ্রেসওয়ের। এদিন যোগী আদিত্যনাথকে এই এক্সপ্রেসওয়ের ধারে ট্যুরিজম সার্কিট গড়ে তোলার কথা বলেছেন মোদি।

এদিন মোদি বলেন, ‘রেভডি সংস্কৃতি (Revdi culture) দেশের সার্বিক উন্নয়নের জন্য ক্ষতিকর। যারা এই রাজনীতি করেন, তাঁরা কখনওই দেশবাসীর জন্য নতুন এক্সপ্রেসওয়ে, নতুন বিমানবন্দর, নতুন প্রতিরক্ষা করিডর নির্মাণ করেন না। যৌথভাবে এই ক্ষতিকর সংস্কৃতিকে হারাতে হবে আমাদের। ভারতীয় রাজনীতি থেকে এই সংস্কৃতি নির্মূল করুন।’

তিনি এদিন বিরোধীদের খয়রাতি সংস্কৃতির তীব্র সমালোচনা করেছেন। তিনি বলেছেন, ‘আজকাল আমাদের দেশে বিনামূল্যে রেভডি বিতরণ করে ভোট কেনার চেষ্টা করা হচ্ছে। দেশের বিকাশের জন্য এই সংস্কৃতি ঘাতকের মতো। এই খয়রাতি সংস্কৃতি থেকে দেশের নাগরিকদের ও বিশেষ করে যুবদের সতর্ক থাকার দরকার রয়েছে। তাঁরা আপনাদের জন্য কখনও নতুন এক্সপ্রেসওয়ে বানাবে না। নতুন এয়ারপোর্ট বা ডিফেন্স করিডর বানাবে না। এই সংস্কৃতির রাজনৈতিক দলগুলি মনে করে আম জনতাদের বিনামূল্যে খাদ্য বিতরণ করে তাঁদের কিনে নেবে। আমাদের একসঙ্গে মিলে এই চিন্তাভাবনাকে হারাতে হবে। খয়রাতি সংস্কৃতি দেশ থেকে সরিয়ে দিতে হবে। আমরা খয়রাতি সংস্কৃতির বাইরে নতুন সড়কপথ, রেল রুট বানিয়ে লোকের আকাঙ্খা পূরণ করার কাজ করছি। আমরা গরিবের জন্য কোটির বেশি ঘর বানিয়েছি। ছোটো বড় ড্যাম তৈরি করেছি। নতুন নতুন বিজলির কারখানা করছি যাতে কৃষক, গরিবের জীবনযাপন সহজ হয় এবং দেশের যুবদের আগামী ভবিষ্য়ত অন্ধকারে ডুবে না যায়।’

তিনি এদিন উত্তরপ্রদেশে বিজেপি সরকারের উন্নয়নের খতিয়ান তুলে ধরেন। তিনি বলেন, ‘২০১৪ সালের আগে ১১ হাজার কমন সার্ভিস সেন্টার ছিল। আজ ১ লক্ষ ৩০ হাজারের বেশি কমন সার্ভিস সেন্টার কাজ করছে। আগে ১২ মেডিক্যাল কলেজ, আজ ৩৫ এর বেশি মেডিক্যাল কলেজ। নতুন ১৪ টি মেডিক্যাল কলেজ নিয়ে কাজ হচ্ছে। দেশের বর্তমানের জন্য শুধুমাত্র সুবিধা করছি না, দেশের ভবিষ্যতও গড়ছি আমরা।’ মোদির কণ্ঠে এদিন রাজ্যের আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি ও যোগাযোগ ব্যবস্থার কথাও শোনা যায়। এই আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে বিরোধীদের নিশানায় একাধিকবার পড়তে হয়েছে যোগী সরকারকে। তিনি এদিন বলেন, ‘যদি দুটি জিনিস- আইন-শৃঙ্খলা ও যোগাযোগ ব্যবস্থার সংশোধন করা হয় আমি জানতাম সবরকম বাধার বিরুদ্ধে কাজ করতে সক্ষম হবে এই দেশ। আমরা দুটিই উন্নত করেছি। রাজ্যে আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি ও যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়ন হচ্ছে।’

এরপর বুন্দেলখণ্ড এক্সপ্রেসওয়ের বিষয়ে মোদি বলেছেন যে এই এক্সপ্রেসেওয়ের ফলে এই অঞ্চলে যোগাযোগ ব্যবস্থা ও অর্থনৈতিক উন্নতি ঘটবে। তিনি বলেছেন,’এই এক্সপ্রেসওয়ের হাত ধরে এই অঞ্চলে শিল্পের বিকাশ ঘটবে। এটা মোদি ও যোগী সরকার, আমরা উন্নয়ন শুধুমাত্র শহরাঞ্চলে আটকে রাখব না। তাকে গ্রাম অবধি পৌঁছে দেব।’

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

fifteen − three =