ফের একবার শাকিব আল হাসানকে নিয়ে উত্তাল বাংলাদেশ ক্রিকেট। তাঁর সঙ্গে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড ও সংস্থার প্রধান নজমুল হাসান পাপনের সম্পর্ক ধীরে ধীরে জটিল থেকে জটিলতর হচ্ছে। বলা ভাল মনোমালিন্য বাড়ছে দুই পক্ষের। সেই ফাটল যেন ধীরে ধীরে আরও প্রকট হচ্ছে। যার স্পষ্ট ইঙ্গিত পাওয়া গেল ফের পাপনের কথায়। শাকিব সম্প্রতি তাঁর মানসিক স্থিতির কথা জানিয়ে দক্ষিণ আফ্রিকা সফরে যেতে রাজি হননি। সেই কথা স্পষ্ট করে দিয়েছেন। আর তার পরেই পাপনের চাঁচাছোলা ভাষায় বক্তব্য, বেতন নিয়ে কেন খেলবেন না শাকিব। বিসিবি প্রধান পাপন আগেই জানিয়েছিলেন, কোন ক্রিকেটার কোন সংস্করণে খেলতে চায় সেটা জানার পরেই তাঁদের সঙ্গে চুক্তি করেছে বোর্ড। তবুও দল সমস্যায় পড়তেই এ বার চটলেন বোর্ড প্রধান। আঙুল তুললেন শাকিবের দিকে।
পাপন বলেন, “চুক্তি অনুযায়ী মাসে মাসে বেতন নেবে আর খেলবে না, এটা কেমন কথা। আমার কাছে তালিকা পাঠানো হয়েছে কে কোন সংস্করণে খেলতে চায়। সেটার ওপর ভিত্তি করেই আমি চুক্তি করব। কাকে কোন ফর্ম্যাটে আমরা নেব সেই অনুযায়ী ঠিক হবে। অনেক ক্রিকেটার আছে, যারা সব ফর্ম্যাটে খেলতে চায়। কিন্তু আমরা তাদের সব ফরম্যাটে রাখব কি না এটা কোচিং স্টাফ, নির্বাচক প্যানেল, ম্যানেজমেন্ট ঠিক করবে। ক্রিকেটার চাইলেই তো আর হবে না।”
এ বার শাকিবের ইস্যুতে পাপনের বক্তব্য “মানসিকভাবে বিপর্যস্ত হলে আইপিএল খেলতে চাইছিল কেন? মানসিকভাবে বিপর্যস্ত থাকলে তো বলতো আমি আইপিএলেও খেলব না! আমি বুঝতে পারছি না, বিষয়টা মেলাতে পারছি না। ধরুন আইপিএলে ওকে নেওয়া হল, তখন কি মানসিকভাবে বিপর্যস্ত বলতো? জিনিসটা আমার মাথাতেই ঢুকছে না।” এরপরেই মেজাজ হারিয়ে পাপন ফের বলেন, “শাকিব বলে যেতে পারে না, এই ম্যাচ খেলব, ওই ম্যাচ খেলব না। আমরা যাদের ভালবাসি, তাদের প্রতি সব সময়ই নমনীয় থাকি। কিন্তু তাদেরও পেশাদার হতে হবে। না হলে আমাদের কঠিন সিদ্ধান্ত নিতে হবে, যেটা পছন্দ নাও হতে পারে।”
বিসিবি সভাপতির আরও দাবি, শাকিবের জন্য বারবার অনিশ্চয়তায় পড়ছে দল। সেটা মেনে নিয়ে বোর্ড প্রধান ফের বলেন, “ঝামেলা তো হচ্ছেই। বোর্ডের কিছু সমস্যা হচ্ছে না, তবে ঝামেলা হচ্ছে টিম ম্যানেজমেন্টের, ঝামেলা হচ্ছে কোচিং স্টাফদের, ঝামেলায় পড়ছেন অধিনায়করা। অধিনায়ক আর কোচ তো জানেই না শাকিবের এই কাহিনী। এই ব্যাপারে আমি নিশ্চিত। খালেদ মাহমুদ সুজন এতদিন ওর সঙ্গে ছিল, সাধারণত পরিকল্পনা নিয়ে শাকিবের সঙ্গে আলোচনা করে, সুজনকে জিজ্ঞেস করলেও, সেও জানে না, যেন আকাশ থেকে পড়েছে!”
দক্ষিণ আফ্রিকা বিরুদ্ধে টেস্ট এবং এক দিনের সিরিজের জন্য যে দল নির্বাচন করা হয়েছিল, সেখানে নাম ছিল শাকিবের। আফগানিস্তানের বিরুদ্ধে তিনটি এক দিনের ম্যাচ এবং দু’টি টি-টোয়েন্টি ম্যাচে ৭৪ রান এবং সাতটি উইকেট নিয়েছেন শাকিব।