দুর্গাপুর পুরসভার ২৭ নম্বর ওয়ার্ড বিধাননগরের দ্য মিশন হাসপাতাল লাগোয়া ৭০২ মিটার সড়ক নির্মাণের কাজ শুরু হল শুক্রবার। এদিন নারকেল ফাটিয়ে এই সড়ক নির্মাণের কাজ শুরু করা হয়। উপস্থিত ছিলেন, দুর্গাপুর পুরসভার মেয়র অনিন্দিতা মুখোপাধ্যায়, ডেপুটি মেয়র অমিতাভ বন্দ্যোপাধ্যায়, ২৭ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর ডাঃ ছবি নন্দী এবং পুরসভার আধিকারিক সহ অন্যান্য কর্মীবৃন্দরা। দুর্গাপুরের মহানাগরিক অনিন্দিতা মুখোপাধ্যায় জানান, এই ৭০২ মিটারের রাস্তাটি ‘ম্যাস্টিক রোড’ তৈরি করা হবে। যার ৬২ লক্ষ টাকার এ্যাস্টিমেট (অনুমান) দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু তাতে কাটছাঁট করে পুরসভার নিজস্ব ফান্ড থেকে ৫৭ লক্ষ টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে। সেই ম্যাস্টিক রোডের নির্মাণ কাজ শুরু করা হল। তিনি জানান, এর পাশাপাশি বিধাননগর থেকে শঙ্করপুর মোড় পর্যন্ত রাস্তার অবস্থা বেহাল ছিল। সেই রাস্তা নির্মাণ কাজ এদিন শুরু করা হয়। পুরসভার নিজস্ব ফান্ড থেকে প্রায় ৯০ লক্ষ টাকা ব্যয়ে এই রাস্তা নির্মাণ করা হচ্ছে। এদিনের নির্মাণ কাজের সূচনায় উপস্থিত ২৭ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর ডাঃ ছবি নন্দী জানান, বিধাননগর দ্য মিশন হাসপাতাল লাগোয়া সড়ক ‘ম্যাস্টিক রোড’ তৈরি করার জন্য একজন কাউন্সিলর হিসেবে আমি কোনও প্রস্তাব পুরসভায় জমা করিনি। কারণ, রাস্তাটি অবস্থা ঠিকই রয়েছে। কেন এই রাস্তাটিকে ম্যাস্টিক রোডে পরিণত করা হচ্ছে, তা বলতে পারব না। মেয়র আমায় উপস্থিত থাকতে বলেছেন, তাই উপস্থিত থেকে নির্মাণ কাজের সূচনা করা হল। তবে, ২৭ নম্বর ওয়ার্ডের বিধাননগর এলাকায় আরও অনেক সড়কের অবস্থা বেহাল রয়েছে। সেই রাস্তাগুলি তৈরি করা হলে স্থানীয়দের সুবিধে হত বলে জানান কাউন্সিলর ডাঃ ছবি নন্দী। এই বিষয়ে প্রাক্তন মেয়র দিলীপ কুমার অগস্তি সরাসরি পুরসভার বর্তমান বোর্ডের ওপর টাকা অপচয় করার অভিযোগ তুলেছেন। তিনি প্রশ্ন তোলেন, ২০১৮ সালে যে রাস্তাটি তৈরি করা হয়েছিল, যার নির্মাণ সংস্থা দ্বারা গ্যারান্টির মেয়াদ ৫ বছর এবং রাস্তাটি এখনও মজবুত রয়েছে, সেই রাস্তাটি ফের তৈরি করার কি কারণ রয়েছে? তিনি গুরুতর অভিযোগ আনেন পুরসভার বর্তমান পুরবোর্ডের ওপর। তিনি বলেন, হাসপাতালের সামনের রাস্তা কোনো অন্য মানসিকতার ব্যক্তিত্বরা ম্যাস্টিক রোডে পরিণত করবে। কারণ, ম্যাস্টিক রোডে রোগী নিয়ে অ্যাম্বুল্যান্স যাতায়াতে সমস্যা তৈরি হয়। প্লেন রোড থাকলে তাতে রোগী সহ অ্যাম্বুল্যান্স এবং রোগীর পরিজনরা অটো-টোটো নিয়ে তাদের যাতায়াত মসৃণ হয়। তিনি বলেন, বিধাননগর সহ আশপাশে বহু রাস্তার অবস্থা বেহাল হয়ে গিয়েছে। সেই রাস্তাগুলির সংস্কার করা হলে সরকারি টাকার অপচয় হত না। এতে সুবিধে হত অনেকেরই। তিনি প্রশ্ন তোলেন, যে রাস্তাটির গ্যারান্টির মেয়াদ এখনও শেষ হয়নি, সেই রাস্তা পুরসভা সাধারণের ট্যাক্সের টাকা খরচ করে ফের কেন তৈরি করবে। এই থেকেই পরিষ্কার হয়ে যাচ্ছে টাকা অপচয় করছে বর্তমান পুরবোর্ড। দুর্গাপুর পুরসভার বিরোধী কাউন্সিলর তথা জেলা বিজেপির মুখপাত্র চন্দ্রশেখর বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, যে রাস্তার গ্যারান্টির মেয়াদ এখনও শেষ হয়নি, সেই নির্মাণ সংস্থাকে দিয়েই রাস্তা সংস্কার করতে পারত পুরসভা। জন সাধারণের ট্যাক্সের ৫৭ লক্ষ টাকা দিয়ে শহরের বহু ভেঙে পড়া রাস্তা মেরামতির কাজ করতে পারে পুরসভা। জনগণের টাকা এই ভাবে নয়ছয় না করে, প্রকৃত সড়ক উন্নয়নের কাজ অনায়াসে করা যায়। তিনি বলেন, সর্বক্ষেত্রে লুটপাট চালানোর কাজ চলছে, এর শেষ কোথায় হবে কেউ জানে না।