বৈঠক-নির্দেশই সার, শহরজুড়ে তারের জঙ্গলে লুকিয়ে বিপদ!

কলকাতা: বড় থেকে মাঝারি, ছোট রাস্তা। কোথাও নাকের ডগায় নেমে এসেছে তার। কোথাও আবার তারের কুণ্ডলি। কোথাও আবার হাঁটতে গেলেও হোঁচট লাগে তারে।বিদ্যুতের খুঁটি ব্যবহার করে ইন্টারনেট, কেবল, টেলিফোন সংযোগের তারে হতশ্রী চেহারা শহরের। এরই মধ্যে আবার কোথাও কোথাও খুঁজলে মিলতে পারে হুকিং করে নিয়ে যাওয়া বিদ্যুতের তারও।বর্ষায় যেন শহর কলকাতা জুড়েই ছড়িয়ে তারের ‘মরণফাঁদ’। বছরের পর বছর এভাবেই ঝুলছে তার। কখনও সেই তার পায়ে বা গলায় জড়িয়ে দুর্ঘটনা ঘটছে। কখনও বৃষ্টিতে কারেন্ট হয়ে থাকা বিদ্যুতের খুঁটিতে হাত লাগতেই হচ্ছে মৃত্যু।

বর্ষার আসতেই খুঁটিতে বিদ্যুত্স্পৃষ্ট হয়ে একের এক মৃত্যু ঘটেছে। হরিদেবপুর, রাজাবাজারে দুই কিশোরের মৃত্যুর পর মঙ্গলবার ট্যাংরাতে বিদু্ত্স্পৃষ্ট হয়ে মৃত্যু হয় এক যুবকের। এদিকে একএকটি ঘটনার পরই কলকাতা পুরসভা, বিদ্যুত্ দপ্তর, সিইএসসি বৈঠক করছে। পদক্ষেপও করা হচ্ছে।কিন্তু এই তারের জঙ্গলের মধ্যে বিপদ লুকিয়ে নেই তো? আশঙ্কায় শহরবাসী।

রাস্তার বিদ্যুতের খুঁটির মাধ্যমে ইন্টারনেট লাইন, কেবল লাইন, টেলিফোন সংযোগের তার টানা হয়েছে। আর অলিগলিতে ইন্টারনেটের তারের সঙ্গে আছে কেবল সংযোগের তার। যে কারণে, বাড়ছে ঝুঁকি। বিভিন্ন জনবহুল এলাকার রাস্তায় চোখে পড়ছে তার জড়ানো বিপজ্জনক বাতিস্তম্ভ, বিদ্যুতের ধাতব খুঁটি।

রাজাবাজার এলাকার ব্যবসায়ী ফয়েজ আহমদ সোমবার বললেন, ‘প্রায়ই দোকানের সামনে ডিশ লাইন, ইন্টারনেটের তার ঝুলে থাকে। কারও চোখে-মুখে লাগে। অনেক সময় মাটিতে পড়ে থাকে। কারও পায়ে লাগে। বিভিন্ন সময় আমরা কোনও রকম এগুলো গুছিয়ে রাখি।’

কাছেই দেখা গেল একটি বাসস্টপের সামনে তার জড়ানো বিদ্যুৎতের খুঁটি। যার পাশে জল জমে রয়েছে। পাশ দিয়ে হেঁটে যাচ্ছেন পথচারীরা। নারকেলডাঙা এলাকার রাজা রাজেন্দ্র স্ট্রিটের এক বাসিন্দা বললেন, অনেক সময় গাড়িতে লেগে তার ছিঁড়ে পড়ে। রিকশা, গাড়ির সামনে ঝুলে ছোটখাটো দুর্ঘটনাও ঘটছে।’

গত শনিবার এখানেই বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে মৃত্যু হয়েছে মহম্মদ ফাইজার নামে এক বছর তেরোর কিশোরের। এদিন সেখানে গিয়ে দেখা গেল বিদ্যুৎ পরিবাহী বাতিস্তম্ভটিকে গার্ডরেল দিয়ে ঘিরে রাখা হয়েছে। স্থানীয় এক যুবক জানাচ্ছেন, ‘বহুবার বাড়িওয়ালাদের জানিয়েও কাজ হয়নি। কোনও বাড়িতেই ঠিকঠাক মিটারবক্সের ঘর নেই। একজায়গায় মিটার, অন্য জায়গায় সংযোগ টেনে আনা হচ্ছে। খুবই বিপজ্জনক পরিস্থিতি। বৃষ্টিতে এখানে জল জমে। সেই জলে পা দিয়ে হাঁটতে ভয় লাগে।’
গত রবিবার ১১৫ নম্বর ওয়ার্ডে হরিদেবপুরে জমা জল দিয়ে যাওয়ার সময় বাতিস্তম্ভে হাত লেগে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে মৃত্যু হয়েছিল নীতিশ যাদব নামে এক ছাত্রের।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

20 − six =