হরিদেবপুরে তড়িদাহত হয়ে ছাত্রের মৃত্যুর রিপোর্টে দায়সাড়া কাজ, গাফিলতির উল্লেখ

কলকাতা: দায়সাড়া কাজ। বিপদ সম্পর্কে উদাসীনতা। তার জেরেই কি চলে গেল স্কুল পড়ুয়ার প্রাণ। হরিদেবপুরে বিদ্যুত্স্পৃষ্ট হয়ে কিশোরের মৃত্যুতে উঠে আসছে এমনই তথ্য। হরিদেবপুরের কিশোরের মৃত্যু উস্কে দিয়েছিল একাধিক প্রশ্ন। বিদ্যুৎ দপ্তর থেকে সিইএসসি,  পুরসভা থেকে প্রশাসনের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছিল। গত রবিবারের ঘটনার পর সোমবারই কলকাতা পুরসভা একটি জরুরি বৈঠকে বসে। সেখানে একটি কমিটি তৈরি হয়। বুধবার সেই রিপোর্ট জমা পড়ল পুরসভায়।

রিপোর্টের ত্রুটি ও গাফিলতির বিষয়টি স্পষ্ট। কলকাতা পুরসভা সূত্রে খবর,  যে স্তম্ভ ছুঁয়ে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে মৃত্যু হয়েছে নীতীশ যাদবের,  সেখানকার তার অধিকাংশ জায়গায় ছেঁড়া ছিল বলে রিপোর্টে উল্লেখ করা হয়েছে। এমনকী বিএসএনএল স্তম্ভ ব্যবহার করা উচিত হয়নি বলেও রিপোর্টে উল্লেখ করা হয়েছে বলেই সূত্রের খবর। সিইএসসি ওই স্তম্ভের নিচে খোঁড়াখুঁড়ি করে কাজ করে যাওয়ার পর সেখানকার চারপাশে ছিদ্র থাকায় সেখান থেকে জমা জল প্রবেশ করেছিল বলে রিপোর্টে উল্লেখ করা হয়েছে। কলকাতা পুরসভায় জমা পড়া ওই রিপোর্টে ১২ থেকে ১৩টি বিষয়ের উল্লেখ করা হয়েছে বলে জানা গিয়েছে। তাতে মূলত, বিদ্যুতের তার যেভাবে ওই এলাকার একাধিক বাতিস্তম্ভের গায়ে ছেঁড়া অবস্থায় রয়েছে, সেই ত্রুটিকেই তুলে ধরা হয়েছে। পাশাপাশি ওই এলাকার গলির ভিতরে নিকাশির সমস্যাও রিপোর্ট সহকারে তুলে ধরা হয়েছে কলকাতা পুরনিগমের কাছে। বিএসএনএলের স্তম্ভগুলি পরিত্যক্ত অবস্থায় থাকলেও সেগুলিতে আলো বা বাতি লাগানো অনুচিত হয়েছে বলেও কমিটির সদস্যরা মনে করছেন।

রিপোর্টে উল্লেখ করা হয়েছে, যদিও সিইএসসি বলছে সেখানে মাটির ওপর নিয়ে তারের কোনও সংযোগ নেই। কিন্তু বাস্তবে দেখা গিয়েছে এলাকার সমস্ত আলোর তার খোলা অবস্থায় ওপর দিয়েই গিয়েছে। এমনকী ওই স্তম্ভে কোনওরকম আর্থিংও ছিল না। ওয়েল্ডিংয়ের কাজও ঠিকমত করা হয়নি। বিদ্যুতের তারগুলি জটলা পাকিয়ে ছিল বিভিন্ন অংশে। একাধিক তারের সামনের অংশ ছেঁড়া ছিল।

রিপোর্ট বলছে, ওই এলাকার ভূগর্ভস্থ বিদ্যুৎ পরিবাহী লাইনগুলিকে ভালোভাবে পরীক্ষা করতে হবে। বাতিস্তম্ভগুলির আশেপাশে কোথাও জমা জল নিকাশি নালার জল প্রবেশ করে যাচ্ছে কি না সেগুলিও দেখার ক্ষেত্রে জোর দেওয়া প্রয়োজন। জমা জল কোনওভাবে মাটির নীচে প্রবেশ করে গিয়েছিল এবং লাইনের সংস্পর্শে এসে ছিল বলেও কমিটির রিপোর্টে উল্লেখ করা হয়েছে।

ঠিক হয়েছে বাতিস্তম্ভের নীচে যাতে জল না ঢোকে তার জন্য সিমেন্ট দিয়ে বাঁধানো হবে। তা ঠিক আছে কি না দেখার জন্য তৃতীয় পক্ষকে দিয়ে অডিট করানো হবে। বাতিস্তম্ভে পুরনিগমের আলো কে লাগাচ্ছে, তা দেখবে বরোভিত্তিক টিম।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

three − 1 =