বাংলাদেশের স্বপ্নকে বাস্তব রূপ দিল পদ্মা সেতু, উদ্বোধন করলেন শেখ হাসিনা

বহু যুগের স্বপ্নপূরণ হল আজ। অবশেষে বাংলাদেশবাসীর স্বপ্নকে বাস্তব করে তুলল পদ্মা সেতু। শনিবার, ২৫ জুন ৬ দশমিক ১৫ কিলোমিটার দীর্ঘ পদ্মা সেতুর উদ্বোধন করলেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা (Bangladesh PM Sheikh Hasina)। আর উদ্বোধনী ভাষণে তিনি বললেন, ‘পদ্মা সেতু আত্মমর্যাদা ও বাঙালির সক্ষমতা প্রমাণের সেতু শুধু নয়, পুরো জাতিকে অপমান করার প্রতিশোধও।’ আর পদ্মা সেতুতে প্রথম টোল দিলেন শেখ হাসিনা নিজে। বিশ্বের দ্বিতীয় খরস্রোতা নদী পদ্মার উপর সেতু নির্মাণ বাংলাদেশ তো বটেই, বিশ্বের প্রযুক্তির ইতিহাসে নিঃসন্দেহে বড় মাইলস্টোন।

শনিবার পদ্মা সেতুর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কণ্ঠে শোনা গেল সুকান্ত ভট্টাচার্যের কবিতার লাইন। হাসিনা বলেন, ‘কারও বিরুদ্ধে আমার কোনও অনুযোগ নেই। আমরা নানা প্রতিকূলতা পেরিয়ে এগিয়ে যাচ্ছি। আমরা দেশবাসীকে নিয়ে সব সমস্যা মোকাবিলা করে যাচ্ছি।’ হাসিনা এরপর সুকান্তের কবিতাতে থেকে দুটি লাইন শোনান, ‘জ্বলে পুড়ে-মরে ছারখার, তবু মাথা নোয়াবার নয়। আমরা মাথা নোয়াইনি, আমরা মাথা নোয়াব না। জাতির পিতা আমাদের মাথা নোয়াতে শেখাননি।’ ২০১০ সাল। পদ্মার উপর একটি দোতলা সেতু তৈরির পরিকল্পনার কথা ঘোষণা করে বাংলাদেশ সরকার। সেতুর নীচতলায় থাকবে রেলপথ। উপরে চার লেনের চওড়া রাস্তায় ছুটবে গাড়ি। বলা হয়, রেলপথে কলকাতা থেকে ঢাকা যেতে সময় লাগবে মাত্র ছয় থেকে সাড়ে ছয় ঘণ্টা।

মোট ৩০ হাজার ১৯৪ কোটি টাকা ব্যয়ে তৈরি হওয়া পদ্মা সেতুর (Padma Bridge) কাজের চুক্তিমূল্য ছিল প্রায় ১২ হাজার ৪৯৪ কোটি টাকা। সেতুটি তৈরি হতে সময় লেগেছে ৯০ মাস ২৭ দিন। দিনরাত খেটে কাজ করেছেন প্রায় ১৪ হাজার দেশি-বিদেশি শ্রমিক, ইঞ্জিনিয়ার ও পরামর্শদাতা মধ্যে প্রায় ১ হাজার ২০০ দেশি, ২ হাজার ৫০০ বিদেশি ইঞ্জিনিয়ার। শ্রম দিয়েছেন প্রায় ৭ হাজার ৫০০ দেশি শ্রমিক, আড়াই হাজার বিদেশি শ্রমিক এবং প্রায় ৩০০ দেশি-বিদেশি পরামর্শদাতা। অবশেষে শনিবার সব শেষে স্বপ্নের বাস্তব রূপ দেখলেন বাংলাদেশবাসী। এই দিন বাংলাদেশ জুড়ে উৎসবের মেজাজ। বলা হচ্ছে, যেন দ্বিতীয়বার স্বাধীনতা উপভোগ করছেন সকলে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

seven + 11 =