টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের স্কোয়াডে নাম নেই ভারতের সহ  অধিনায়কের! দলে নেই ফিনিশার জিতেশও, ওয়াইল্ডকার্ড এন্ট্রি ঈশান কিষানের !

একেই বলে চমক! সমস্ত জল্পনা, অঙ্ক কষা আর সম্ভাবনার তালিকায় জল ঢেলে অবশেষে ঘোষণা হয়ে গেল টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে ভারতের ১৫ জনের স্কোয়াড। আর দল ঘোষণার সঙ্গেই তৈরি হল বিতর্ক, প্রশ্ন ও চমকের ঝড়। সবচেয়ে বড় ধাক্কা—দল থেকে বাদ শুভমান গিল। আর ঠিক তার উল্টো দিকে, আচমকাই জাতীয় দলে প্রত্যাবর্তন ঈশান কিষানের।
আগামী বছরের ফেব্রুয়ারিতে, দেশের মাটিতেই বসছে টি-টোয়েন্টি বিশ্বযুদ্ধ। সেই মেগা টুর্নামেন্টের আগে বোর্ড সচিব দেবজিৎ সইকিয়া, প্রধান নির্বাচক অজিত আগরকর ও অধিনায়ক সূর্যকুমার যাদব একসঙ্গে ঘোষণা করে দিলেন ভারতের বিশ্বকাপ স্কোয়াড। এই দলটাই আসন্ন নিউজিল্যান্ডের বিরুদ্ধে টি-টোয়েন্টি সিরিজেও মাঠে নামবে। সদ্য দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধে সিরিজ জয়ের পর ধারণা ছিল, সেই দলই মোটামুটি বিশ্বকাপের রূপরেখা। কিন্তু নির্বাচকরা যে এত বড় চমক রাখছেন, তা বোধহয় কেউ ভাবেননি। সবচেয়ে আলোচিত সিদ্ধান্ত শুভমান গিলকে বাদ দেওয়া। এশিয়া কাপের আগে যাঁকে ফের সহ-অধিনায়ক করা হয়েছিল, সেই গিলই এবার বিশ্বকাপের বাইরে। ফর্ম যে নেই, তা বেশ কিছুদিন ধরেই স্পষ্ট। কিন্তু প্রশ্ন উঠছেই—তাহলে এতদিন সহ-অধিনায়কের দায়িত্ব দেওয়া হল কেন? ফর্মহীনতার যুক্তি যদি আজ এতটাই গুরুত্বপূর্ণ হয়, তবে সেই সিদ্ধান্ত আগে নেওয়া হয়নি কেন? নির্বাচকদের এই দ্বিচারিতাই এখন আলোচনার কেন্দ্রে। গিলের জায়গায় সহ-অধিনায়ক করা হয়েছে অক্ষর প্যাটেলকে।
চমক এখানেই থামেনি। সাম্প্রতিক সময়ে ‘ফিনিশার’ হিসেবে যাঁকে ঘন ঘন ব্যবহার করা হচ্ছিল, সেই জিতেশ শর্মাও বাদ পড়েছেন। অথচ দলে জায়গা পেয়েছেন রিঙ্কু সিং—যাঁর নাম ভারতীয় ক্রিকেটে ‘ফিনিশার’ বললেই প্রথমে মনে আসে। তবে এখানেও প্রশ্ন রয়েই যাচ্ছে। যদি রিঙ্কুই বিশ্বকাপের ভরসা হন, তবে দক্ষিণ আফ্রিকা সিরিজে তাঁকে সুযোগ দেওয়া হয়নি কেন? ধারাবাহিকতার অভাব আবারও চোখে আঙুল দিয়ে দেখাল নির্বাচন প্রক্রিয়ার দুর্বলতা। সবচেয়ে বড় চমক অবশ্যই ঈশান কিষান। প্রায় দু’বছর জাতীয় টি-টোয়েন্টি দলে নেই তিনি। শেষ খেলেছিলেন ২০২৩ সালের নভেম্বরে। সেই ঈশানই সরাসরি ঢুকে পড়লেন বিশ্বকাপ স্কোয়াডে। সৈয়দ মুস্তাক আলি ট্রফিতে তাঁর পারফরম্যান্স অবশ্য চোখ ধাঁধানো—৫১৭ রান, প্রায় ২০০ স্ট্রাইক রেট। ফাইনালে হরিয়ানার বিরুদ্ধে ৫১ বলে সেঞ্চুরি করে ঝাড়খণ্ডকে প্রথম জাতীয় টি-টোয়েন্টি খেতাব এনে দিয়েছেন।
ঘরোয়া ক্রিকেটে এমন বিধ্বংসী ফর্ম উপেক্ষা করা কঠিনই ছিল। গিল না থাকায় ওপেনিং জুটি নিয়েও স্পষ্ট ইঙ্গিত মিলেছে। সঞ্জু স্যামসনই ওপেন করবেন, সেটাই প্রায় নিশ্চিত। তবে ফর্মের ভিত্তিতে যদি গিল বাদ পড়েন, তাহলে সূর্যকুমার যাদব কি শুধুমাত্র অধিনায়ক বলেই দলে আছেন—এই প্রশ্নও উঠছে ক্রিকেটমহলে। বিশ্বকাপের আগে এই বিতর্ক অস্বস্তি বাড়ালেও, মাঠের পারফরম্যান্সই শেষ কথা বলবে। নির্বাচকদের সাহসী সিদ্ধান্ত কি ট্রফিতে রূপ নেবে, না কি নতুন বিতর্কের জন্ম দেবে—তার উত্তর দেবে সময়ই।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

eleven + 10 =