কুলদীপ-কৃষ্ণার যুগলবন্দী, শতরান যশস্বীর ! সাদা বলে কামব্যাক মেন ইন ব্লুয়ের !

সাদা বলের ক্রিকেটে ফিরে দারুণ ছন্দে নিজেদের তুলে ধরল ভারত। বিশাখাপত্তনমের দিন-রাত্রির ম্যাচে টস জিতে পরে বল করার সিদ্ধান্তই বদলে দিল ম্যাচের মোড়। বছরের এই সময় ভারতের মাটিতে রাতে পরে বল করা কতটা কঠিন, তা আগের দুই ম্যাচে ভারতীয় বোলারদের মতোই এবার উপলব্ধি করল দক্ষিণ আফ্রিকা। লক্ষ্যমাত্রা ছিল ২৭১—ভারত সে রান তাড়া করে ম্যাচ জিতে নিল ৯ উইকেটে, তাও ৬১ বল হাতে রেখে। সিরিজ় পকেটে পেলেন লোকেশ রাহুলরা। হাসলেন কোচ গৌতম গম্ভীরও। টেস্ট সিরিজ়ে দুর্দশার পরে সাদা বলের ছন্দে ফিরল ভারত।

টস জেতার পর রাহুল বাঁ হাতে কয়েন তুলে ভাগ্য ফেরালেন। টসের পরেই ভারতীয় ক্রিকেটারদের উচ্ছ্বাস যেন ইঙ্গিত দিচ্ছিল অর্ধেক কাজ সেরে ফেলেছেন তাঁরা। দক্ষিণ আফ্রিকার ওপেনিংয়ে রায়ান রিকেলটনকে ফিরিয়ে ম্যাচের শুরুতেই বড় ধাক্কা দেন অর্শদীপ সিংহ। শূন্য রানে ফিরে যান রিকেলটন। তবে দ্বিতীয় উইকেটে পরিস্থিতি সামাল দেন কুইন্টন ডি’কক ও টেম্বা বাভুমা। ভারতের বিরুদ্ধে বরাবরই ভাল রেকর্ড থাকা ডি’কক আগের দুই ম্যাচে ব্যর্থ হলেও এ দিন ছন্দে ফিরলেন। ১১৩ রানের জুটি গড়লেন বাভুমাকে সঙ্গে নিয়ে। দেখে মনে হচ্ছিল বড় স্কোর গড়বে প্রোটিয়ারা।

কিন্তু ঠিক তখনই ম্যাচে ফের ভারত। বাভুমাকে ৪৮ রানে ফেরান রবীন্দ্র জাডেজা। এরপরই নিজের দ্বিতীয় স্পেলে চমক দেখালেন প্রসিদ্ধ কৃষ্ণ। প্রথম স্পেলে খরচা হলেও দ্বিতীয় স্পেলে একই ওভারে ব্রিৎজ়কে (২৪) ও শতরানকারী এডেন মার্করামকে (১) ফিরিয়ে বিপদে ফেলেন দক্ষিণ আফ্রিকাকে। অন্য প্রান্তে ঝড় তুলছিলেন ডি’কক। মাত্র ৮৯ বলে ১০৬ রান করে শতরান পূর্ণ করেন তিনি। ভারতের মাটিতে এটি তাঁর সপ্তম শতরান। তবে শতরানের পর বেশিক্ষণ টিকতে পারেননি—প্রসিদ্ধের বলেই আউট হন ডি’কক। শেষ পর্যন্ত ২৭০ রানে থেমে যায় দক্ষিণ আফ্রিকার ইনিংস। সাম্প্রতিক দিন-রাতের ম্যাচের প্রেক্ষিতে এই স্কোর যথেষ্ট নয়, তা স্পষ্ট ছিল।

রান তাড়ায় নেমে একপ্রকার নিখুঁত ব্যাটিং প্রদর্শন করেন রোহিত শর্মা ও যশস্বী জয়সওয়াল। শুরুতে সাবধানী হলেও পরে হাত খোলেন তাঁরা। দ্রুতই গড়ে ওঠে শতরানের জুটি। দুই ব্যাটারই অর্ধশতরান করেন। ১৫৫ রানের ওপেনিং জুটি ভাঙলেও ভারতের জয় তখন সময়ের অপেক্ষা। রোহিত ৭৫ রানে ফেরেন মহারাজের বলে। শতরান করতে না পারলেও ইনিংসের ভিতটা শক্ত করে যান তিনি।

বিরাট কোহলি নামেন আক্রমণাত্মক মনোভাব নিয়ে। শতরান করা সম্ভব না হলেও দ্রুত রান তোলার দিকে নজর ছিল তাঁর। অন্য প্রান্তে নিজের দ্বিতীয় এক দিনের শতরান তুলে নেন যশস্বী জয়সওয়াল। শেষ পর্যন্ত যশস্বী ১১৬* ও কোহলি ৬৫* রান করে অপরাজিত থাকেন। দক্ষিণ আফ্রিকার বোলারদের এক মুহূর্তও ম্যাচে ফিরে আসতে দেননি তাঁরা।

৬১ বল হাতে রেখে ৯ উইকেটে জিতে ভারত শুধু সিরিজ়ই জেতেনি, বরং প্রমাণ করেছে সাদা বলের ক্রিকেটে এ দলই সেরা ছন্দে রয়েছে। বিশাখাপত্তনমের এই দাপুটে জয় ভারতীয় শিবিরে ফের আত্মবিশ্বাস জাগাল, বিশেষত কোচ গম্ভীর ও অধিনায়ক রাহুলের কাছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

8 − six =