৩৫ বছর বয়স হলেও ঘরোয়া ক্রিকেটে এখনও ধারালো, ম্যাচ জেতানো বোলার মহম্মদ শামি। রনজি ট্রফি থেকে টি–২০—সব ফরম্যাটেই তিনি ধারাবাহিক পারফরম্যান্স করে চলেছেন। কিন্তু তবুও জাতীয় দলের দরজা তাঁর জন্য খুলছেই না। সম্প্রতি সৈয়দ মুস্তাক আলি ট্রফিতে চার উইকেট নিয়ে আবারও নিজের দক্ষতার প্রমাণ দিয়েছেন শামি।
ঠিক সেই সময়েই নির্বাচক কমিটির প্রধান অজিত আগরকরকে লক্ষ্য করে ক্ষোভ উগরে দেন প্রাক্তন অফ-স্পিনার হরভজন সিং। নাম না করেই তিনি প্রশ্ন তোলেন—শামির মতো অভিজ্ঞ ও ফর্মে থাকা একজন পেসারকে কেন বারবার উপেক্ষা করা হচ্ছে? দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধে দ্বিতীয় ওয়ানডেতে ভারতের হারই যেন বিতর্ককে আরও উসকে দিয়েছে। হরভজনের দাবি, ভারতের বোলিং লাইন আপ বুমরাহকে ছাড়া বেশ দুর্বল হয়ে পড়ে। প্রসিদ্ধ কৃষ্ণ প্রতিভাবান বটে, কিন্তু এখনও অনেক কিছু শেখার বাকি আছে। তাঁর কথায়, “বুমরাহ ছাড়া ম্যাচ জেতা উচিত ভারতের। দেশের হাতে এমন বোলার রয়েছে, যাঁরা অভিজ্ঞতা ও দক্ষতায় আন্তর্জাতিক পর্যায়ে ম্যাচ ঘোরাতে পারেন।” সেই সেরা উদাহরণ হিসেবে ভাজ্জি তুলে ধরেছেন শামির নাম।
তাঁর প্রশ্ন, “শামি কোথায়? তাঁকে কেন খেলানো হচ্ছে না?” হরভজন স্মরণ করিয়ে দিয়েছেন, ইংল্যান্ড সফরে বুমরাহ না থাকলেও সিরাজ দুর্দান্ত বোলিং করেছিলেন। এমনকি বুমরাহকে ছাড়াই যে ক’টি টেস্ট খেলেছিল ভারত, সবকটিতে জিতেছিল। অর্থাৎ দক্ষ বোলারের অভাব নেই ভারতের হাতে। কিন্তু অভিজ্ঞ ক্রিকেটারের অভিযোগ—নির্বাচকরা ইচ্ছাকৃতভাবে কিছু বোলারকে ‘কোণঠাসা’ করে রেখেছেন। চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির পর থেকেই জাতীয় দলে দেখা যায়নি শামিকে।
তবুও তিনি ঘরোয়া মঞ্চে নিয়মিত নজর কাড়ছেন, যা দেশের নির্বাচকদের চোখ এড়ায়নি। অভিযোগ উঠছে, তাঁরা মাঠে গিয়ে শামির বোলিং দেখলেও নির্বাচন প্রক্রিয়ায় তাঁর কোনও জায়গা হচ্ছে না। প্রসিদ্ধ কৃষ্ণ ও হর্ষিত রানার ধারাবাহিক ব্যর্থতার পরেও তাঁদেরই সুযোগ দেওয়া হচ্ছে, অথচ ফিট ও ফর্মে থাকা শামির প্রতি নজর নেই। এমন অবস্থায় আগরকর দাবি করেছেন—শামিকে নিয়ে তাঁর কাছে বিশেষ কোনও তথ্য নেই! স্বাভাবিক ভাবেই এই মন্তব্যে আরও বিতর্ক সৃষ্টি হয়েছে। অনেকেই মনে করছেন, শামির বয়স, তাঁর অতীত চোট-আঘাত বা দলের ‘ব্যাকআপ প্ল্যান’-এর কারণে নির্বাচকরা তাঁকে দূরে সরিয়ে রাখছেন।
কিন্তু প্রশ্ন একটাই—যখন ঘরোয়া ক্রিকেটে তিনি এখনও ভারতের সেরা পেসারদের একজন, তখন তাঁকে জাতীয় দলে ফেরানো হচ্ছে না কেন? এই প্রশ্নের উত্তর হয়তো নির্বাচকদের কাছেই। কিন্তু শামির ধারাবাহিক পারফরম্যান্স ও হরভজনের তোলা প্রশ্ন আবারও আলোচনায় এনে দিল ভারতীয় ক্রিকেটে নির্বাচন প্রক্রিয়ার স্বচ্ছতা ও যুক্তিগ্রাহ্যতার বিষয়টি।

