ভারতের দাবিদাওয়া পুরো মানতে নারাজ সিএবি ! পিচে দেওয়া হচ্ছে জল

ইডেন টেস্টের আগে দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধে প্রস্তুতি ও মনোভাব স্পষ্ট করে দিয়েছে গৌতম গম্ভীরের নেতৃত্বাধীন ভারতীয় দল। এই সিরিজ শুধু আরেকটি টেস্ট নয়—বরং এটি মর্যাদা, প্রস্তুতি ও কৌশলের এক বড় পরীক্ষা। কারণ, বাভুমার নেতৃত্বে দক্ষিণ আফ্রিকা এখন অন্যতম সুষম ও ব্যালান্সড দল। তাই ভারত কোনওভাবেই তাদের হালকাভাবে নিচ্ছে না।

বরং প্রতিটি বিভাগ—ব্যাটিং, পেস, স্পিন—সব দিকেই নিজেদের শক্তি বাড়াতে এবং কোনও দুর্বলতা যাতে না থাকে, তার জন্য নিরন্তর প্রস্তুতি চালাচ্ছে টিম ইন্ডিয়া। দক্ষিণ আফ্রিকার দলে মার্করাম, ব্রেভিস, স্টবস, রিকেলটনের মতো ব্যাটার রয়েছেন, যারা উপমহাদেশীয় কন্ডিশনে ভালো খেলতে জানেন। অলরাউন্ডার বিভাগে করভিন বশ ও মার্কো জানসেনের মতো প্রতিভা রয়েছে, যারা ব্যাট ও বল দু’দিকেই ম্যাচ ঘোরানোর ক্ষমতা রাখেন। তাছাড়া কাগিসো রাবাডা নামটাই যথেষ্ট ভয় ধরানোর জন্য। স্পিন বিভাগেও রয়েছে কেশব মহারাজ, সেনুরুন মুথুস্বামী ও সাইমন হারমার—যাদের উপস্থিতিতে আফ্রিকার দলটি অনেকটা উপমহাদেশীয় ঘরানার মতো হয়ে উঠেছে। তাই রায়ান টেন দুশাখাতে স্বীকার করেই নিলেন, “এই সিরিজে তিন স্পিনার খেলানোর সম্ভাবনা রয়েছে দক্ষিণ আফ্রিকার। খেলা অনেকটাই ভারতীয় দলের মতো পরিস্থিতিতে হবে।” তবে ভারতের চিন্তা কেবল প্রতিপক্ষ নয়, ইডেনের বাইশ গজ নিয়েও। প্রস্তুতি পর্বে গম্ভীর, সীতাংশু কোটাক এবং অধিনায়ক শুভমান গিলকে একাধিকবার পিচ পরিদর্শন করতে দেখা গিয়েছে।

এমনকি অলরাউন্ডার রবীন্দ্র জাদেজাকেও কিউরেটর সুজন মুখোপাধ্যায়ের সঙ্গে দীর্ঘ আলোচনায় ব্যস্ত থাকতে দেখা যায়। সহকারী কোচের বক্তব্য অনুযায়ী, প্রথম দু’দিন ব্যাটিং কিছুটা সহজ হলেও ম্যাচের শেষের দিকে স্পিনাররাই বড় ভূমিকা নিতে পারেন। অর্থাৎ, ইডেনের উইকেটকে এমনভাবে রাখা হচ্ছে যাতে টেস্টটি পাঁচ দিন পর্যন্ত টানতে পারে। এই কারণেই পিচে বাড়তি জল দেওয়া বা কৃত্রিমভাবে টার্ন বাড়ানোর মতো কোনও সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি। বুধবার সকাল ছ’টায় জল দেওয়া হয় পিচে, যখন কোনও দলই তখনো ইডেনে পৌঁছায়নি। আরও আকর্ষণীয় বিষয় হলো, ভারতের অনুশীলন শেষ হওয়ার পরও (বিকেল সাড়ে চারটে নাগাদ) ইডেনের মূল উইকেট ঢাকা হয়নি। নিয়ম অনুযায়ী, খেলার আগের দিনই পিচ ঢেকে রাখা হয়, তার আগের দিন নয়। ফলে বোঝা যায়, সিএবি চায় খেলা পাঁচ দিন পর্যন্ত চলুক—দর্শকরা যেন টেস্ট ক্রিকেটের পূর্ণ আনন্দ নিতে পারেন।

সব মিলিয়ে গৌতম গম্ভীরের ভারত প্রস্তুত এক কঠিন লড়াইয়ের জন্য। কৌশল, আত্মবিশ্বাস ও ভারসাম্যের মেলবন্ধনে দলটি চাইছে দক্ষিণ আফ্রিকার মতো প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে নিজেদের সামর্থ্যের প্রমাণ দিতে। ছ’বছর পর ইডেনে ফিরছে টেস্ট—সিএবি ও ক্রিকেটপ্রেমী শহর কলকাতা চায় এটি হোক এক স্মরণীয় ক্রিকেট উৎসব। তবে শেষ পর্যন্ত ফল যাই হোক, এই টেস্ট ঘিরে তৈরি হওয়া উত্তেজনা ও কৌশলগত নাটকীয়তা ইতিমধ্যেই ইডেনকে এনে দিয়েছে এক অনন্য আবহ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

3 × two =