গুজরাটের লালভাই কনট্রাক্টর স্টেডিয়ামে রণজি ট্রফির ম্যাচে দুর্দান্ত অবস্থানে বাংলা। ত্রিপুরার বিরুদ্ধে কার্যত জেতা ম্যাচ থেকে এক পয়েন্ট পাওয়া নিয়ে হতাশা ছিল দলের মধ্যে। কিন্তু রেলওয়েজের বিরুদ্ধে সেই হতাশা উড়িয়ে দিয়ে জোরদার কামব্যাক করেছে বাংলা। শুরুতেই ধাক্কা খেলেও এখন ম্যাচের নিয়ন্ত্রণ পুরোপুরি বাংলার হাতে।
বাংলার পাহাড় প্রমাণ ৪৭৪ রানের জবাবে দ্বিতীয় দিনের শেষে রেলওয়েজের স্কোর ৫ উইকেটে ৯৭, । অর্থাৎ, বাংলা এগিয়ে আছে ৩৭৭ রানে, আর পুরো পয়েন্টের স্বপ্ন দেখা শুরু হয়েছে সমর্থকদের মধ্যে। এই ম্যাচে নিয়মিত অধিনায়ক অভিমন্যু ঈশ্বরণ ভারতীয় ‘এ’ দলের হয়ে খেলছেন। তাঁর ডেপুটি অভিষেক পোড়েলও রাইজিং স্টার এশিয়া কাপে ব্যস্ত। ফলে অধিনায়কত্বের দায়িত্ব নেন সুদীপ ঘরামি। তবে দুর্ভাগ্যবশত ঘরামি শূন্য রানে আউট হন।
অভিষেক হওয়া আদিত্য পুরোহিতও মাত্র ৬ রান করে ফেরেন। একসময় ৬১ রানে ৪ উইকেট হারিয়ে বড় বিপদে পড়ে বাংলা। সেই সময় পরিস্থিতি সামলান অভিজ্ঞ অনুষ্টুপ মজুমদার ও শাহবাজ আহমেদ। তাঁদের জুটিতে ওঠে ১৩৪ রান। ১০৬ বলে ৮৬ রান করে আউট হন শাহবাজ, তবে অনুষ্টুপ খেলেন এক ধৈর্যশীল ইনিংস। প্রথম দিনের শেষে ৫ উইকেটে ২৭৩ রানে স্বস্তিতে ছিল বাংলা। দ্বিতীয় দিনে অনুষ্টুপ ১৩৫ রানে আউট হন, আর তরুণ সুমন্ত গুপ্ত করেন দারুণ সেঞ্চুরি — ১২০ রান। শেষদিকে বিশাল ভাটির ৩৬ ও রাহুল প্রসাদের ৪০ রানের ইনিংসে ৪৭৪ রানের বিশাল স্কোর দাঁড় করায় বাংলা।
রেলওয়েজের ব্যাটিং শুরুতেই ভেঙে পড়ে। আগুনে স্পেলে রেলওয়েজের টপ অর্ডার ধ্বংস করে দেন সুরজ সিন্ধু। মাত্র ১৭ রান খরচে তুলে নেন ৪ উইকেট। তাঁর শিকার জুবের আলি, সুরজ আহুজা ও আরও দুই গুরুত্বপূর্ণ ব্যাটার। রেলওয়েজের ব্যাটিং একসময় ছিল ১৬ রানে ৪ উইকেট! এরপর ভার্গব মেরাই (৩৭) কিছুটা প্রতিরোধ গড়লেও দল এখনও গভীর সংকটে। পঞ্চম উইকেট হিসেবে শাহবাজ আহমেদ ফেরান আহুজাকে। এই অবস্থায় বাংলা ফলোঅন করাতে পারলে ইনিংসে জয়ের সম্ভাবনা প্রবল। ইনিংসে জিতলে ৭ পয়েন্ট, এমনকি ১০ উইকেটে জিতলেও পূর্ণ পয়েন্ট পেতে পারে বাংলা।
সুরজের আগুনে বোলিং, ব্যাটারদের ধারাবাহিক পারফরম্যান্স, আর দলের মনোবল—সব মিলিয়ে দ্বিতীয় দিনের শেষে বাংলার ড্রেসিংরুমে আত্মবিশ্বাস তুঙ্গে। সমর্থকরাও এখন আশাবাদী, এই ম্যাচেই মরশুমের প্রথম বড় জয় তুলে নিতে চলেছে বাংলা ক্রিকেট দল।

