ধৈর্যশীল গিল ও স্পিনিং জালে আটক অজিবাহিনী ! সিরিজে লিড মেন ইন ব্লুয়ের

হাতে ছিল মাত্র ১৬৭ রানের পুঁজি। টি-২০ ক্রিকেটে যা বর্তমান মানদণ্ডে খুব বেশি কিছু নয়। তবুও এই স্বল্প রান নিয়েই বল হাতে ম্যাজিক দেখালেন ভারতের বোলাররা। ওয়াশিংটন সুন্দর, অর্শদীপ সিং, অক্ষর প্যাটেল, বরুণ চক্রবর্তী এবং শিবম দুবের বোলিং দাপটে ৪৮ রানের জয়ে সিরিজে ২-১ ব্যবধানে এগিয়ে গেল সূর্যকুমার যাদবের নেতৃত্বাধীন ভারত।

কুইন্সল্যান্ডের মাঠে টস জিতে প্রথমে ফিল্ডিং করার সিদ্ধান্ত নেয় অস্ট্রেলিয়া। ভারতীয় ব্যাটারদের শুরুটা ছিল সাবধানী। প্রথম তিন ম্যাচে একেবারেই ছন্দে না থাকা শুভমান গিলের ব্যাটে অবশেষে দেখা মিলল কিছুটা স্থিরতার। কোচ গৌতম গম্ভীর তাঁকে নিয়ে ম্যাচের আগে আলাদা সেশন করেন, যার ফল মাঠে স্পষ্ট—৩৯ বলে ৪৬ রানের গুরুত্বপূর্ণ ইনিংস। যদিও স্ট্রাইক রেট ছিল ১১৭, কিন্তু মন্থর পিচে এই ইনিংসই পরবর্তীতে ম্যাচের মোড় ঘুরিয়ে দেয়। ওপেনার অভিষেক শর্মা ২১ বলে ২৮ রান করে শুরুটা মজবুত করেন।

মধ্য ওভারে কিছুটা চাপে পড়ে ভারত। তবে শিবম দুবে (১৮ বলে ২২) ও সূর্যকুমার যাদব (১০ বলে ২০)-এর ঝোড়ো ইনিংস রান তোলায় গতি আনে। শেষদিকে অক্ষর প্যাটেল ১১ বলে ২১ রানের ঝলক দেখিয়ে দলকে নিয়ে যান ১৬৭ রানে—যা এই পিচে একপ্রকার লড়াকু স্কোরই ছিল।

অস্ট্রেলিয়ার ইনিংসের শুরুতেও দেখা যায় আত্মবিশ্বাস। প্রথম উইকেটে ৩৭ রান যোগ করে ভালো সূচনা করে তারা। দ্বিতীয় উইকেট পড়ার সময়ও স্কোরবোর্ডে ৬৭ রান। কিন্তু এরপরই ম্যাচের চিত্র পাল্টে দেন ভারতীয় বোলাররা। পিচের গতি ছিল তুলনামূলক ধীর—যা ব্যাটারদের জন্য হয়ে ওঠে বিপজ্জনক ফাঁদ। স্পিনাররা সেই মন্থরতাকে দুর্দান্তভাবে কাজে লাগান। ওয়াশিংটন সুন্দর তার সঠিক লেন্থ ও ভ্যারিয়েশনে তিনটি গুরুত্বপূর্ণ উইকেট তুলে নেন।

অক্ষর প্যাটেল এবং শিবম দুবে পান দুটি করে উইকেট, আর অর্শদীপ, বরুণ চক্রবর্তী ও বুমরাহ প্রত্যেকে তুলে নেন একটি করে। শিবম দুবের বলের নিখুঁত লাইন ও লেন্থ মাঝের ওভারে রান চেপে রাখে। অস্ট্রেলিয়ার ব্যাটাররা ছন্দ খুঁজে পাননি একবারও। শেষ পাঁচ ব্যাটারের কেউই দুই অঙ্কে পৌঁছতে পারেননি।

শেষ পর্যন্ত ১১৯ রানে গুটিয়ে যায় অজিদের ইনিংস, ফলে ৪৮ রানের সহজ জয়ে উল্লাসে ভাসে ভারতীয় শিবির। এই জয়ের পিছনে মূল কৃতিত্ব ভারতের পরিকল্পিত বোলিং ইউনিটের।

টি-২০ ক্রিকেটে বড় রান না করেও কীভাবে দলগত প্রয়াস ও সঠিক কৌশলে ম্যাচ জেতা যায়, তার উৎকৃষ্ট উদাহরণ হয়ে রইল গোল্ড কোস্টের এই ম্যাচ। সিরিজে ২-১ ব্যবধানে এগিয়ে গিয়ে এখন ভারতের সামনে সুযোগ, শেষ ম্যাচে জয় তুলে সিরিজ নিজেদের করে নেওয়ার।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

five × 4 =