“ভারতীয় ক্রিকেটের স্বার্থে অধিনায়কত্ব ছাড়ুক হরমন” ! বিশ্বজয়ের পরের দিনে বিস্ফোরক মন্তব্য ভারতীয় মহিলা দলের প্রাক্তন অধিনায়কের

ভারতীয় মহিলা ক্রিকেটে এমন ঘটনা খুব একটা দেখা যায় না—বিশ্বকাপ জয়ের পরদিনই অধিনায়কত্ব নিয়ে প্রশ্ন উঠছে! কিন্তু ঠিক এমনই এক আলোচনার কেন্দ্রে এখন হরমনপ্রীত কৌর। একদিন আগেই দক্ষিণ আফ্রিকাকে ৫২ রানে হারিয়ে প্রথমবারের মতো ওয়ানডে বিশ্বকাপ জয় করেছে ভারতের মহিলা দল। গোটা দেশ যখন উদ্‌যাপনে মেতে, ঠিক তখনই প্রাক্তন অধিনায়ক শান্তা রঙ্গস্বামী বললেন এমন এক কথা, যা শিরোনাম দখল করেছে ভারতীয় ক্রিকেটমহলে।

তাঁর মতে, “বিশ্বজয়ী” হলেও হরমনপ্রীতের এখনই নেতৃত্ব থেকে সরে দাঁড়ানো উচিত। ভারতের মহিলা দলের প্রথম অধিনায়ক শান্তা রঙ্গস্বামী মনে করেন, হরমনপ্রীত কৌর ব্যাটার এবং ফিল্ডার হিসেবে নিঃসন্দেহে দলের অন্যতম সম্পদ, কিন্তু অধিনায়ক হিসেবে তাঁর সিদ্ধান্ত গ্রহণে বেশ কিছু ভুল দেখা যায়। শান্তার কথায়, “অধিনায়কত্বের বোঝা ওর কাঁধ থেকে নামলে হরমন আরও ভালো পারফর্ম করতে পারবে। ভারতীয় ক্রিকেটের ভবিষ্যতের কথা ভেবে এখনই নেতৃত্বে পরিবর্তন প্রয়োজন।” বিশ্বজয়ের পরই এমন মন্তব্যকে অনেকেই সাহসী বলছেন, আবার কেউ কেউ সমালোচনাও করছেন।

শান্তা নিজেও জানেন, তাঁর বক্তব্য অনেকের ভালো লাগবে না। তবু তিনি নিজের মতেই অনড়। তাঁর মতে, হরমনপ্রীতের হাতে এখনও তিন থেকে চার বছরের ভালো ক্রিকেট বাকি আছে, কিন্তু সেই সময়টা যেন শুধু ব্যাট হাতে উপভোগ করতে পারে, অধিনায়কত্বের চাপে নয়। আগামী বছর ইংল্যান্ডে অনুষ্ঠিত হবে মহিলা টি-২০ বিশ্বকাপ, আর ২০২৯ সালে পরবর্তী ওয়ানডে বিশ্বকাপ। শান্তা চান, এই দুই বড় টুর্নামেন্টের আগে ভারতীয় দলের নেতৃত্ব নতুন হাতে তুলে দেওয়া হোক। তিনি উদাহরণ টেনে বলেন, “পুরুষদের ক্রিকেটে যেমন ভবিষ্যতের কথা মাথায় রেখে রোহিত শর্মার পরিবর্তে শুভমান গিলকে নেতৃত্বে আনা হয়েছে, মহিলাদের ক্ষেত্রেও সেই সাহসী পদক্ষেপ নেওয়া উচিত।” নতুন অধিনায়কের নামও দিয়েছেন তিনি—স্মৃতি মান্ধানা।

শান্তার মতে, স্মৃতির মধ্যে রয়েছে নেতৃত্ব দেওয়ার যোগ্যতা, কৌশলগত চিন্তাভাবনা এবং সতীর্থদের অনুপ্রাণিত করার ক্ষমতা। তিনি বলেন, “স্মৃতির নেতৃত্বে ভারতীয় দল আরও সংগঠিত, আক্রমণাত্মক ও ধারাবাহিক হতে পারবে।” তবে শুধুমাত্র নেতৃত্ব নয়, ভারতীয় দলের সামগ্রিক পারফরম্যান্স নিয়েও উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন শান্তা রঙ্গস্বামী। তাঁর মতে, ব্যাটিং বিভাগ বিশ্বকাপে ভালো খেললেও বোলিং এবং ফিল্ডিংয়ে উন্নতির জায়গা এখনও রয়ে গেছে। বিশেষ করে বড় দলের বিপক্ষে ফিল্ডিংয়ে যে ফাঁকফোকর দেখা গেছে, তা ভবিষ্যতের জন্য চিন্তার বিষয়। তবু এই জয় ভারতীয় মহিলা ক্রিকেটের জন্য এক ঐতিহাসিক মুহূর্ত বলেই মনে করেন তিনি। শান্তা বলেন, “জেমাইমা রডরিগেজ, শেফালি ভার্মা, রিচা ঘোষদের মতো তরুণদের এই জয় ভারতীয় মহিলা ক্রিকেটে নতুন বিপ্লবের সূচনা করবে। মেয়েরা এবার জানবে—বিশ্বজয় অসম্ভব নয়।”

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

eight + two =