মেলবোর্নে টি-টোয়েন্টি সিরিজের দ্বিতীয় ম্যাচে কার্যত মুখ থুবড়ে পড়ল ভারত। শক্তিশালী অস্ট্রেলিয়ার সামনে পুরো ২০ ওভারও টিকতে পারল না সূর্য কুমার যাদবের কাছে দল। ১২৫ রানে গুটিয়ে গেল ভারতীয় ইনিংস, ফলে জয়ের জন্য মাত্র ১২৬ রানের সহজ লক্ষ্যই পেল অস্ট্রেলিয়া। শেষ দিকে বুমরাহ কিছুটা লড়াইয়ের ইঙ্গিত দিলেও ততক্ষণে অনেক দেরি হয়ে গেছে। মাত্র ১৩.২ ওভারে ৬ উইকেট হারিয়ে জয় তুলে নিল অজিরা। পাঁচ ম্যাচের সিরিজে ১-০ লিড নিয়ে এগিয়ে গেল মিচেল মার্শের দল।
টসে জিতে প্রথমে ফিল্ডিং করার সিদ্ধান্ত নেন অজি অধিনায়ক মিচেল মার্শ। অস্ট্রেলিয়া দলে একটি পরিবর্তন আনা হয়— জশ ফিলিপের পরিবর্তে সুযোগ পান ম্যাট শর্ট। অপরদিকে ভারতীয় দল ছিল অপরিবর্তিত। প্রথমে ব্যাট করতে নেমে ভারতের শুরুটা মোটেই আশানুরূপ হয়নি। একদিকে অভিষেক শর্মা সাহসী ব্যাটিংয়ে দলের রান তুলছিলেন, অন্যদিকে একে একে ভেঙে পড়ছিল ভারতের ব্যাটিং অর্ডার। অভিষেক ৬৮ রান করে দলের ভরসা হয়ে ওঠেন, তাঁকে কিছুটা সঙ্গ দেন হর্ষিত রানা (৩৫)। তবে এই দুই ব্যাটার ছাড়া বাকিদের স্কোরশিট দেখতে মোবাইল নম্বরের মতো — এক অঙ্কের রানেই থেমেছেন অধিকাংশ ব্যাটার। ফলে নির্ধারিত ওভার শেষ হওয়ার আগেই, ৮ বল হাতে রেখেই ১২৫ রানে অলআউট হয়ে যায় ভারত।
অল্প রানের লক্ষ্যের সামনে ঝড়ো সূচনা করেন অস্ট্রেলিয়ার দুই ওপেনার মিচেল মার্শ এবং ট্র্যাভিস হেড। পাওয়ার প্লে থেকেই তাঁরা আক্রমণাত্মক মেজাজে খেলতে শুরু করেন। ভারতীয় বোলারদের ওপর চেপে বসেন তাঁরা, বিশেষ করে বুমরাহর মতো বোলারও ছাড় পাননি। তাঁর এক ওভার থেকে আসে ১৮ রান। এরপর হর্ষিত রানার এক ওভারে ওঠে ২০ রান। মাত্র চার ওভারেই পঞ্চাশের গণ্ডি পার করে ফেলে অস্ট্রেলিয়া।
ভারতকে প্রথম সাফল্য এনে দেন বরুণ চক্রবর্তী। তাঁর বলে বড় শট হাঁকাতে গিয়ে ২৮ রানে আউট হন ট্র্যাভিস হেড। কিন্তু ততক্ষণে দলীয় রান অনেকটাই এগিয়ে যায়। পরের দিকে মার্শ ও জশ ইংলিশ দ্রুত রান তোলার ধারা বজায় রাখেন। ৪৬ রানে কুলদীপ যাদবের বলে আউট হন মার্শ, কিন্তু তাঁর ২টি চার ও ৪টি ছক্কা দেওয়া ইনিংস ভারতের আশা কার্যত নিভিয়ে দেয়। কিছুক্ষণ পর বরুণ চক্রবর্তীর বলে মাত্র ১ রানে আউট হন টিম ডেভিড, ফলে ৯০ রানে ৩ উইকেট পড়ে যায় অস্ট্রেলিয়ার।
শেষ দিকে বুমরাহ এক ঝটকায় দুটি উইকেট নিলেও তখন আর কিছু করার ছিল না। অস্ট্রেলিয়ার ব্যাটাররা চাপের মুখে না পড়ে ১৩.২ ওভারে জয় নিশ্চিত করে নেয়। ভারতীয় বোলারদের মধ্যে বুমরাহ ও বরুণ কিছুটা লড়াই দেখালেও অন্যরা ছিলেন পুরোপুরি ব্যর্থ।
এই পরাজয়ে সিরিজে পিছিয়ে পড়ল ভারত। ব্যাটিংয়ে অভিষেক শর্মা ও হর্ষিত ছাড়া কেউই দায়িত্ব নিতে পারেননি, আর বোলিংয়ে প্রাথমিক ওভারে রান চাপে ভুগেছে দল। অস্ট্রেলিয়ার আত্মবিশ্বাসী খেলা এবং মার্শের আক্রমণাত্মক নেতৃত্ব প্রমাণ করে দিল, তাদের ঘরের মাঠে হারানো সহজ নয়। আগামী রবিবার সিরিজের দ্বিতীয় ম্যাচে ফিরতে মরিয়া থাকবে টিম ইন্ডিয়া, নাহলে পাঁচ ম্যাচের সিরিজে শুরুতেই কঠিন অবস্থায় পড়তে হবে তাদের।

