শাহবাজ-অনুষ্টুপদের দাপটে অ্যাডভান্টেজে বাংলা, জয়ের পথে অসুর শুধু বৃষ্টি !

রনজি ট্রফির দ্বিতীয় ম্যাচে তৃতীয় দিনের শেষে সুবিধাজনক জায়গায় পৌঁছে গেল বাংলা। শাহবাজ আহমেদ ও মহম্মদ শামির দুরন্ত বোলিংয়ে মাত্র ১৬৭ রানে গুটিয়ে গেল গুজরাট। ফলে প্রথম ইনিংসে ১১২ রানের গুরুত্বপূর্ণ লিড পায় বাংলা। দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাট করতে নেমে অভিমন্যু ঈশ্বরণের দল দিনের শেষে ৬ উইকেটে ১৭০ রান করে। অর্থাৎ, তিন দিনের শেষে বাংলার মোট লিড দাঁড়িয়েছে ২৮২ রানে—যা ম্যাচ জয়ের পথে দলকে বেশ এগিয়ে দিয়েছে।

দিনের শুরুটা হয়েছিল গুজরাটের দুঃস্বপ্নের মতো। ১০৭ রানে ৭ উইকেট হারিয়ে তৃতীয় দিনের খেলা শুরু করে তারা। প্রথম দিন থেকেই গুজরাটের ব্যাটারদের মধ্যে কেউই বড় ইনিংস খেলতে পারেননি। শুরুতেই চিন্তন গাজার উইকেট তুলে নেন শাহবাজ আহমেদ। প্রত্যাবর্তনের ম্যাচেই তিনি গড়লেন পাঁচ উইকেট নেওয়ার নজির। অভিজ্ঞ বাঁহাতি স্পিনারের ধারালো বলের সামনে একের পর এক গুজরাট ব্যাটার নতিস্বীকার করেন।

তবে অধিনায়ক মানান হিংরাজিয়া কিছুটা প্রতিরোধ গড়ে তোলেন। তাঁর সঙ্গে আরজান নাগওয়াসওয়ালা মিলে ৩৮ রানের একটি জুটি গড়েন। কিন্তু সেই জুটিও ভাঙেন শাহবাজই। তাঁর বলেই লেগ বিফোর হয়ে ফেরেন আরজান। এরপর হিংরাজিয়া কিছুটা চালিয়ে খেললেও সঙ্গীদের সহযোগিতা পাননি। এক প্রান্ত ধরে খেলে তিনি অপরাজিত থাকেন ৮০ রানে, কিন্তু অন্য প্রান্ত থেকে পতন ঘটতেই থাকে উইকেটের। শেষমেশ গুজরাটের ইনিংস থামে ১৬৭ রানে। বাংলার হয়ে শাহবাজ নেন ৬ উইকেট মাত্র ৩৪ রানে। তাঁকে কার্যকর সঙ্গ দেন অভিজ্ঞ পেসার মহম্মদ শামি, যিনি ৪৪ রানে ৩ উইকেট পান। আকাশ দীপও নেন ১টি গুরুত্বপূর্ণ উইকেট।

প্রথম ইনিংসে ১১২ রানের লিড পাওয়ার পর আত্মবিশ্বাসে ভরপুর হয়ে ব্যাট করতে নামে বাংলা। ওপেনিং জুটিতে দৃঢ় সূচনা করেন অধিনায়ক অভিমন্যু ঈশ্বরণ ও সুদীপ ঘরামি। তবে সেই জুটি বেশিদূর টিকল না। সিদ্ধার্থ দেশাইয়ের স্পিনে ভুল করে ২৫ রানে আউট হন অভিমন্যু। কিছুক্ষণ পরই সাজঘরে ফেরেন প্রথম ইনিংসে ৫৬ রান করা কাজি জুনায়েদ সাইফি (১)। তাতে কিছুটা চাপে পড়ে বাংলা।

তবে অভিজ্ঞ অনুষ্টুপ মজুমদার দলকে স্থিতি দেন। ব্যাট হাতে তিনি দারুণ ধৈর্য ও কৌশলে খেলে তৃতীয় দিনের শেষে অপরাজিত থাকেন। অন্যদিকে, শাহবাজ আহমেদ ব্যাট হাতেও আক্রমণাত্মক মানসিকতা দেখান। তবে ঝোড়ো সূচনা করেও মাত্র ২০ রানে আউট হন তিনি। শেষ বিকেলে আলোর অভাবে খেলা বন্ধ হওয়ার সময় বাংলার স্কোর ৬ উইকেটে ১৭০।

তিন দিনের শেষে স্পষ্টভাবে বলা যায়—ম্যাচের নিয়ন্ত্রণ এখন বাংলার হাতেই। ২৮২ রানের বিশাল লিড গুজরাটের সামনে পাহাড়প্রমাণ চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে। তবে আবহাওয়ার পূর্বাভাসে বৃষ্টির সম্ভাবনা থাকায় কিছুটা চিন্তায় অভিমন্যু ঈশ্বরণের দল। চতুর্থ দিনে যদি আকাশ খোলসা থাকে, তাহলে বাংলার জয়ের সম্ভাবনা উজ্জ্বল। শামি ও শাহবাজের বোলিংয়ে যেমন আগুন ঝরছে, তেমনি ব্যাটাররাও যদি লিড আরও বাড়াতে পারেন, তবে এই ম্যাচে বাংলার জয় প্রায় নিশ্চিত বলা যায়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

thirteen − nine =