গুজরাটের বিরুদ্ধে রঞ্জি ট্রফির দ্বিতীয় দিনের শেষে দারুণ অবস্থানে বাংলা। প্রথম দিনের শেষে কিছুটা চাপে থাকলেও দ্বিতীয় দিনে শাহবাজ আহমেদ এবং মহম্মদ শামির আগুনে বোলিংয়ে ম্যাচের মোড় ঘুরিয়ে দেয় বাংলার বোলাররা। ফলে এখন কার্যত বিপর্যস্ত অবস্থায় পড়ে গেছে গুজরাট। খারাপ আলোর কারণে দিনটি আগেভাগে শেষ হলেও, বাংলার ক্রিকেটপ্রেমীদের মনে জয় নিয়ে আশার আলো জ্বলেছে।
প্রথম দিনের শেষে বাংলার রান ছিল ৭ উইকেটে ২৪৪। সুমন্ত গুপ্ত এবং শামির জুটিতে কিছুটা ভরসা জাগিয়েছিল ব্যাটিং লাইনআপ। কিন্তু দ্বিতীয় দিনের শুরুতেই হতাশ করেন সুমন্ত। আগের দিনের ৫৮ রানের সঙ্গে মাত্র ৫ রান যোগ করে ৬৩ রানে সাজঘরে ফেরেন তিনি। আকাশ দীপ কিছুটা লড়াই করলেও বেশি দূর এগোতে পারেননি। ২৯ রানে আউট হন তিনি। শামি অপরাজিত থাকেন ৮ রানে। শেষ পর্যন্ত বাংলার ইনিংস গুটিয়ে যায় ২৭৯ রানে। যদিও প্রথম দিনের মতোই গুজরাটের বোলাররা নিয়মিত সাফল্য পেয়েছিলেন, তবুও বাংলার ব্যাটারদের ছোট ছোট ইনিংসই দলকে প্রতিযোগিতামূলক স্কোরে পৌঁছে দেয়।
এরপর পালা আসে বাংলার বোলারদের। আর সেখানেই শুরু হয় প্রকৃত লড়াই। জবাবে ব্যাট করতে নেমে গুজরাট একেবারে ব্যাটিং বিপর্যয়ে পড়ে। শাহবাজ আহমেদ শুরু থেকেই বল ঘুরিয়ে বোলারদের মধ্যে ছন্দ ফেরান। তার বলের মাপ বুঝে উঠতে পারেননি গুজরাটের ব্যাটাররা। মাত্র ১৭ রানে তিনি তুলে নেন ৪টি গুরুত্বপূর্ণ উইকেট। উমাঙ্গ কুমার (১৮), জয়মিত প্যাটেল (০), উরভিল প্যাটেল (১৫) এবং বিশাল জয়সওয়াল (০) একে একে শাহবাজের শিকার হন। অপর প্রান্ত থেকে সমান তালে আক্রমণ চালিয়ে যান মহম্মদ শামি। তার তীব্র পেসে নড়বড়ে হয়ে যায় প্রতিপক্ষের ব্যাটিং। তিনি নেন ২টি উইকেট। এছাড়া আকাশ দীপও দেন একটি গুরুত্বপূর্ণ আঘাত।
গুজরাটের ইনিংসে একমাত্র প্রতিরোধ গড়ে তুলেছেন অধিনায়ক মানান হিংরাজিয়া। ১৬৩ বল খেলে ৪১ রানে অপরাজিত রয়েছেন তিনি। বাকিরা কেউই দুই অঙ্কের রান ছুঁতে পারেননি। দ্বিতীয় দিনের শেষে গুজরাটের রান ১০৭/৭। তারা এখনও বাংলার থেকে পিছিয়ে ১৭২ রানে। খারাপ আলোর কারণে দিনের খেলা বন্ধ হয়ে যায়, নইলে সম্ভবত বাংলার বোলাররা আরও দ্রুত গুজরাটের ইনিংস গুটিয়ে দিতে পারতেন।
এখন সমস্ত নজর তৃতীয় দিনের দিকে। বাংলার লক্ষ্য একটাই— যত দ্রুত সম্ভব গুজরাটের বাকি তিন উইকেট তুলে নেওয়া। শাহবাজ ও শামির বর্তমান ফর্ম দেখে বলা যায়, তারা সেটা করতেও সক্ষম। তবে আবহাওয়া এখন প্রধান চিন্তার বিষয়। বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে, যা ম্যাচের গতিকে বাধা দিতে পারে। খেলা যদি বৃষ্টিবিঘ্নিত হয়, তবে বাংলার জয়ের সম্ভাবনাও কিছুটা ক্ষীণ হতে পারে।
তবু, এই মুহূর্তে ম্যাচের পাল্লা স্পষ্টতই বাংলার দিকে ঝুঁকে আছে। প্রথম ইনিংসে ২৭৯ রানের পর প্রতিপক্ষকে ১০৭ রানে ৭ উইকেটে নামিয়ে আনা নিঃসন্দেহে দলকে মানসিকভাবে এগিয়ে দিয়েছে। এখন বাকি কাজটা শেষ করাই লক্ষ্য। যদি আবহাওয়া অনুকূল থাকে, তবে তৃতীয় দিনেই বাংলার জয়ের সুর শোনা যেতে পারে।

