ফর্ম টেম্পোরারি, ক্লাস পার্মানেন্ট ! রো – কো এর ব্যাটিংয়ে অনায়াসে জয়ে হোয়াইটওয়াশ বাঁচালো গিলবাহিনী

‘ফর্ম টেম্পোরারি, ক্লাস পার্মানেন্ট’— ক্রিকেটের এই চিরন্তন উক্তিটি আবারও যেন জীবন্ত হয়ে উঠল সিডনির মাটিতে। অনেকের কাছেই এই কথাটা এখন ক্লিশে, কিন্তু রোহিত শর্মা ও বিরাট কোহলির ব্যাটে সেটাই যেন নতুন প্রাণ পেল। অজিদের বিরুদ্ধে তৃতীয় ওয়ানডে ছিল ভারতের কাছে মর্যাদার লড়াই। সিরিজ ইতিমধ্যেই হাতছাড়া, তাই লক্ষ্য একটাই— হোয়াইটওয়াশের লজ্জা এড়িয়ে সম্মান বাঁচানো। সেই দায়িত্ব কাঁধে তুলে নিলেন দুই ‘বুড়ো’ ব্যাটসম্যান, যাঁদের ফর্ম ও ফিটনেস নিয়ে সম্প্রতি প্রশ্ন উঠেছিল।

টার্গেট ছিল মাত্র ২৩৭ রান। কাগজে কলমে সহজ মনে হলেও, আগের দুই ম্যাচে ভারতের ব্যাটিং ভরাডুবি দেখে চিন্তা ছিলই। কিন্তু রোহিত ও বিরাট সেই টেনশনকে উড়িয়ে দিলেন তাঁদের অভিজ্ঞতা ও নিখুঁত ব্যাটিং দিয়ে। শুরুতে অধিনায়ক শুভমান গিলের সঙ্গে ৬৯ রানের জুটি গড়ে দেন রোহিত। গিল আউট হওয়ার পর নেমে পড়েন বিরাট, আর সেখান থেকেই শুরু হয় এক অনবদ্য অধ্যায়। দুই মহারথী যেন সময়টাকে উল্টে দিলেন। একদিকে রোহিত তাঁর চিরচেনা ফ্লিক, পুল আর কভার ড্রাইভে দাপট দেখালেন, অন্যদিকে বিরাট মাপা ইনিংস খেললেন নিজের ছন্দে।

রোহিত করলেন কেরিয়ারের ৩৩তম শতরান, যা তাঁর ক্লাস ও ধারাবাহিকতার প্রতীক। অন্যপ্রান্তে অপরাজিত রইলেন বিরাট, ৭৪ রানের নান্দনিক ইনিংসে। দু’জনের মধ্যে ১৯তম শতরান পার্টনারশিপ গড়ে ইতিহাসে জায়গা করে নিলেন তাঁরা— এটি এখন ক্রিকেটের তৃতীয় সর্বাধিক শতরান জুটি। তাঁদের ব্যাটিং দেখে মনে হচ্ছিল, ক্রিকেট যেন সহজ এক শিল্প, আর তাঁরা সেই শিল্পের শ্রেষ্ঠ কারিগর।

শেষ পর্যন্ত অনায়াসেই জয় পায় ভারত, কিন্তু তার চেয়েও বড় জয় রোহিত ও বিরাটের ব্যক্তিগত প্রত্যাবর্তন। সমালোচকরা যাঁরা তাঁদের নিয়ে সংশয় প্রকাশ করেছিলেন, তাঁদের সবাইকে নিঃশব্দে জবাব দিলেন এই দুই মহারথী। তাঁরা আবারও প্রমাণ করলেন, ফর্ম হয়তো আসে যায়, কিন্তু প্রকৃত ক্লাস— সেটাই অমর। আর সেই ক্লাসের দাপটেই টিম ইন্ডিয়া পেল নিজেদের হারানো আত্মবিশ্বাস ফিরে পাওয়ার পথ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

13 + eighteen =