দুটো টুকরো ছবিই ফারাক গড়ে দিল। প্রথমটা ইন্দৌর দেখেছিল প্রথম ইনিংসে। ৩৫ বছরের এক মেয়ের ১৫ বছরের কেরিয়ারে হাফসেঞ্চুরির নেকলেস থাকতে পারে, সেঞ্চুরির গ্ল্যামার নেই। সেই হেদার নাইটই তিন নম্বরে নেমে দুরন্ত সেঞ্চুরি করে গেলেন। ওটাই ঘাতক ইনিংস বললে ভুল হবে না। আর দ্বিতীয় ছবিটা হতাশার। রান আর বলের দূরত্ব তখনও দিল্লি-মুম্বই হয়নি। ক্রিজে অলরাউন্ডার দীপ্তি শর্মা। হাফসেঞ্চুরিও করেছেন। তারপরই আউট। ওটাই ম্যাচের টার্নিং পয়েন্ট। দীপ্তি আউট হতেই শেষ হয়ে যায় ভারতের লড়াই। মেয়েদের বিশ্বকাপে পর পর হেরে বিপাকে পড়ে গেল হরমনপ্রীত কৌরের ভারত। হাতে বাকি দুটো ম্যাচ। নিউজিল্যান্ড এবং বাংলাদেশকে শুধু হারালে হবে না, শেষ চারে যেতে হলে অন্য টিমের দিকেও তাকাতে হবে ভারতকে।
হেদার নাইটের সেঞ্চুরি ছাড়া ইংল্যান্ডের ইনিংসে আর বলার মতো তেমন কিছু নেই। ওপেনার অ্যামি জোন্স শুধু হাফসেঞ্চুরি করেন। দীপ্তি শর্মা বল হাতে ৪ উইকেট নেন। ৫০ ওভার ব্যাট করে ৮ উইকেটে ২৮৮ তোলে ইংল্যান্ড। তারকাসম্বলিত ভারতীয় ব্যাটিংয়ের কাছে এই লক্ষ্য তেমন কঠিন ছিল না। শুধু দরকার ছিল এক-দুটো পার্টনারশিপ। সেটা কিন্তু ভারত শুরুতেই দেখিয়েছিল। পুরো বিশ্বকাপে ভারতের সহঅধিনায়ক স্মৃতি মান্ধানা দারুণ ফর্মে আছেন। কঠিন ম্যাচেও ছন্দে দেখা গিয়েছে ভারতীয় ওপেনারকে। প্রতীকা রাওয়াল ৬ করে ফিরে গেলেও স্মৃতি টলানো যায়নি। ৯৪ বলে ৮৮ করে যান। তিন নম্বরে নামা হরলীন দেওল ৩১ বলে ২৪ করে ফেরেন। এরপরই স্মৃতির সঙ্গে বড় পার্টনারশিপ গড়েন হরমনপ্রীত। ওই সময় মনে হয়েছিল এই দু’জনই খেলা ঘুরিয়ে দেবেন। বিশ্বকাপে জয়ে ফেরাবেন ভারতকে। হ্যারি আর স্মৃতি ফিরতেই চাপ বেড়ে যায়। তবু ভারতের হারার মতো ম্যাচ ছিল। যদি দীপ্তি আর কিছুক্ষণ ক্রিজে থাকতেন।
ইংল্যান্ডের কাছে ম্যাচ হেরে হতাশ হরমনপ্রীত বলেছেন, ‘স্মৃতির উইকেটটাই টার্নিং পয়েন্ট হয়ে গেল। কিন্তু তারপরও ম্যাচটা জেতা যেত। কিন্তু আমাদের হাত থেকে খেলা প্রতিপক্ষের কাছে চলে যায়। ইংল্যান্ডকে কৃতিত্ব দিতে হবে। ওরা কিন্তু কখনও আশা হারায়নি। জিততে জিততে ম্যাচ হারার মতো কষ্ট আর কিছুতে নেই।’
ইংল্যান্ড ম্যাচ থেকেই ঘুরে দাঁড়ানোর স্বপ্ন দেখেছিলেন হরমনপ্রীত। তা না হওয়ায় হতাশ ঠিকই, তবে ভারতের ক্যাপ্টেন কিন্তু আবার ঘুরে দাঁড়ানোর স্বপ্ন দেখছেন। হরমনপ্রীত বলছেন, ‘পরের ম্যাচটা আমাদের কাছে খুব গুরত্বপূর্ণ। বোলাররা ভালো বল করছে। কিন্তু শেষ ৫ ওভার নিয়ে আমাদের ভাবতে হবে। সে দিক থেকে দেখলে নিউজিল্যান্ডের বিরুদ্ধে শেষ ম্যাচটা খুব গুরুত্বপূর্ণ।’

