প্রাথমিক টেট দুর্নীতি মামলার জেরে তৃণমূল নেতার দুই কন্যার চাকরি যাওয়ায় শোরগোল আরামবাগে

হুগলি: রাজ্যের ২৬৯ জন প্রাথমিক শিক্ষককে বেআইনি ঘোষণা করে কলকাতা হাইকোর্ট। এর মধ্যে ৬৮ জন রয়েছে হুগলি জেলার শিক্ষক। হুগলি জেলায় ৬৮ জন শিক্ষকের চাকরিকে বেআইনি বলে ঘোষণা করার পাশাপাশি চাকরি থেকে বরখাস্ত করা থেকে শুরু করে বেতন বন্ধের নির্দেশ দেয় কলকাতা হাইকোর্ট। এই ৬৮ জনের মধ্যে আরামবাগ পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি তথা আরামবাগের দাপুটে তৃণমূল নেতা গুণধর খাঁড়ার দুই মেয়ে শিবানী খাঁড়া ও সীমা খাঁড়া বরখাস্ত হয়। এই ঘটনা প্রকাশ্যে আসতেই ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়ায়। সোশ্যাল মিডিয়ায় এই দুর্নীতি নিয়ে একটি লিস্ট ভাইরাল হতেই শোরগোল পড়ে যায় এলাকায়। স্থানীয় মানুষ বলরাম মণ্ডলের অভিযোগ এই দাপুটে তৃণমূল নেতার চার মেয়েই প্রাইমারি চাকরি করে। এর মধ্যে দুই মেয়ে বরখাস্ত হন। উনি ভালো লোক নন। আরও কয়েক জনের চাকরি করে দিয়েছেন। তাদেরও চাকরি গিয়েছে। জানা গিয়েছে, পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতির মেয়ে শিবানী খাঁড়া- সালেরপুর সুকান্ত প্রাথমিক বিদ্যালয়ে চাকরি করেন এবং সীমা খাঁড়া-কোটালপুর প্রাথমিক বিদ্যালয়, তারকেশ্বর দশঘরা এলাকায় চাকরি করেন। এমনটাই জানা যাচ্ছে স্থানীয় মানুষের কাছ থেকে। এই বিষয়ে আরামবাগ শিক্ষা দপ্তরের এসআই কাবেরী সাফুই জানান, আমার কাছে অফিসিয়ালি কোনও অর্ডার আসেনি তাই আপনাদের কিছু বলতে পারব না। অপরদিকে এই বিষয় নিয়ে শিবানী খাঁড়ার শ্বশুরবাড়িতে যাওয়া হলে শিবানীর জা বলেন, সকাল থেকেই উনি বাড়িতে নেই। ওনাদের সঙ্গে আমাদের কোনও সম্পর্ক নেই। কিন্তু প্রশ্ন উঠছে একই বাড়িতে কিভাবে চার মেয়ে প্রাথমিক বিদ্যালয়ে চাকরি পায়। তারপর কিভাবে দু’জন মেয়ে বরখাস্ত হয়। উঠছে প্রশ্ন। স্থানীয় মানুষের অভিযোগ তৃণমূল নেতা গুণধর খাঁড়ার দুই মেয়ে ছাড়াও এই এলাকার আরও বেশ কয়েক জনের প্রাথমিক বিদ্যালয়ে উনি চাকরি করে দিয়েছিলেন। সেই সব শিক্ষকও নাকি বরখাস্ত হন। এই বিষয়ে আরামবাগ পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি তথা তৃণমূল নেতা গুণধর খাঁড়ার সঙ্গে ফোনে যোগাযোগ করা হলে উনি বলেন, মেয়েদের বিয়ে হয়ে গিয়েছে। আমি এই সব ব্যাপারে কিছু জানি না। অপরদিকে আরামবাগ পঞ্চায়েত সমিতির শিক্ষা কর্মাধ্যক্ষ দিপক মাঝি বলেন, দলের যা সিদ্ধান্ত, কেউ যদি অপরাধী হয় তা আইন অনুযায়ী প্রশাসন ব্যবস্থা নেবে। সবমিলিয়ে ব্যাপক পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতির দুই মেয়ের চাকরি থেকে বরখাস্ত হওয়ার ঘটনা নিয়ে শোরগোল এলাকায়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

5 × 4 =