ছাগলের ফেলে দেওয়া কানের তরুণাস্থি কেটে প্লাস্টিক সার্জারি, হইচই ফেলে দিলেন ৭ অধ্যাপক-গবেষক

কলকাতা:ছাগলের কান দিয়ে মানুষের প্লাস্টিক সার্জারি? চোখ কপালে উঠল নাকি!

আসলে বিজ্ঞান সবই করতে পারে। অবশ্য চার সঙ্গে রেয়েছে সাত অধ্যাপক গবেষেকর নিরলস প্রচেষ্টা। গবেষণা সফল বলেই জানাচ্ছেন তাঁপা। জানা গিয়েছে, নতুন গবেষণারর সুফল হিসেবে অন্তত ২০ জনের সফল প্লাস্টিক সার্জারি হয়েছে অনেক কম খরচে। আর এই অসাধ্য সাধন করেছন আরজি কর মেডিক্যাল কলেজ ও পশ্চিমবঙ্গ প্রাণী ও মৎস্য বিজ্ঞান বিশ্ববিদ্যলয়ের সাত গবেষক, অধ্যাপক।

জন্মগত শারীরিক ত্রুটি ঠিক করতে অথবা বড় কোনও দুর্ঘটনার পর প্লাস্টিক সার্জারির দরকার। রোগীর শরীরের চামড়া কেটে করা হয়। অথবা কৃত্রিম চামড়া সংগ্রহ করতে হয়। কৃত্রিম চামড়া কতদিন শরীরের সঙ্গে থাকবে তার কোনও নিশ্চয়তা নেই। অনেক সময় বিরূপ পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হয়। আবার নিজের অঙ্গ থেকে চামড়া কেটে করতে গেলে দ্বিতীয়বার অস্ত্রোপোচার করতে হয়। দ্বিতীয়বারের ধকল অনেক রোগীই নিতে পারেন না। একটা দাগ ঢাকতে আরেকটি অস্ত্রোপচারের দাগ থেকে যায়।

তা হলে সমস্যার সমাধান কী? অসাধ্য সাধন করে অসংখ্য রোগীর জীবনে হাসি এনেছে আরজি কর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের প্লাস্টিক সার্জারি ও পশ্চিমবঙ্গ প্রাণী ও মৎস্য বিজ্ঞান বিশ্ববিদ্যলয়ের সাত গবেষক, অধ্যাপক। ঘটনা হল, প্রতিস্থাপন সফল হওয়ার জন্য ভারত সরকারের ডিপার্টমেন্ট অফ বায়োটেকনোলজি থেকে গত ৩০ মে কপিরাইট পেয়েছেন এই সাত গবেষক। ডিপার্টমেন্ট অফ বায়োটেকনোলজির আর্থিক সহায়তায় এই প্রকল্পটি সম্পূর্ণ হয়েছে। সোমবার এই তথ্য জানালেন দুই সংস্থার গবেষকরা।

প্রকল্পের প্রোজেক্ট ইনভেস্টিগেটর রেডিওলজিস্ট ডা. শমিতকুমার নন্দীর কথায়, ‘ছাগলের কান ফেলে দেওয়া হয়। কোনও কাজে লাগে না। কিন্তু ছাগলের কান থেকে তরুণাস্থি বের করে বিশেষ পদ্ধতিতে কোষগুলিকে নষ্ট করে ফেলা হয়। রাসায়নিকভাবে পরিশোধন করতে হয়। তৈরি হয় নতুন এক নতুন কার্টিলেজ। যেটি রাসায়নিকভাবে সম্পূর্ণ ভিন্ন ধর্মের। এবার দেখা হল, এই কার্টিলেজ প্রাণীদেহে কোনও বিরূপ প্রতিক্রিয়া তৈরি করে কি না। তা জানতে ল্যাবরেটরিতে কয়েকটি খরগোশের চামড়ার নীচে প্রায় চার মাস রাখা হয়। নিবিড় পর্যবেক্ষণ করে দেখা হয় সেগুলির শরীরে কোনও পরিবর্তন হচ্ছে কি না। কিন্তু কোনও বিপরীত প্রতিক্রিয়া দেখা যায়নি।’ প্রকল্পের আর এক গবেষক অধ্যাপক ডা. সিদ্ধার্থ জোয়ারদার ইমিউনোলজি ও মাইক্রোবায়োলজির প্রতিটি ধাপ অত্যন্ত নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করেন। আরজি কর মেডিক্যাল কলেজের প্লাস্টিক সার্জারি বিভাগে কাজ শুরু হয়। প্রায় ২০ জন রোগীর কারও নাক বা কানে সম্পূর্ণ নতুনভাবে তৈরি ছাগলের কানের তরুণাস্থি প্রতিস্থাপন হয়। আসলে কম দামে বায়োলজিক‌্যাল ইমপ্ল‌্যান্ট করতেই ছাগলের কানকে বেছে নেওয়া হয়।

 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

3 × 5 =