দিল্লির অরুণ জেটলি স্টেডিয়ামে দ্বিতীয় টেস্টের দ্বিতীয় দিন শেষে ম্যাচের লাগাম দৃঢ়ভাবে ভারতের হাতে। যশস্বী জয়সওয়ালের দুরন্ত ১৭৫ রানের ইনিংস এবং অধিনায়ক শুভমান গিলের অপরাজিত ১২৯ রানে ভর করে প্রথম ইনিংসে ৫১৮ রানের বিশাল স্কোর গড়ে ভারত। জবাবে ব্যাট হাতে কিছুটা প্রতিরোধ গড়েও শেষ বিকেলে চাপে পড়ে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। দ্বিতীয় দিনের শেষে অতিথিদের সংগ্রহ ৪ উইকেটে ১৪০ রান। দিনের শুরুটা ভারতের পক্ষে ছিল রানের বন্যায় ভরপুর। আগের দিন ২ উইকেটে ৩১৮ রান থেকে খেলা শুরু করে ভারত। শুরুতেই হতাশা — ডবল সেঞ্চুরির স্বপ্ন দেখা যশস্বী জয়সওয়াল রান আউট হয়ে যান ১৭৫ রানে। শুভমান গিলের সঙ্গে তাঁর ভুল বোঝাবুঝির কারণেই থেমে যায় দুরন্ত ইনিংসটি। জয়সওয়াল ফিরলেও গিলের ব্যাট থামেনি।
নীতীশ কুমার রেড্ডির সঙ্গে জুটিতে ৯১ রান যোগ করেন তিনি। তবে ওয়ারিকানের বলে বড় শট খেলতে গিয়ে রেড্ডি আউট হন ৪৩ রানে। এরপর ধ্রুব জুরেলকে সঙ্গে নিয়ে দ্রুত রান তোলেন গিল। নিজের কেরিয়ারের দশম টেস্ট সেঞ্চুরি তুলে নেওয়ার পরও থামেননি তিনি। গিলের অপরাজিত ১২৯ রানের ইনিংসে ৫১৮ রানে ইনিংস ঘোষণা করে ভারত। উইকেটরক্ষক জুরেল ৪৪ রানে আউট হন। শেষ ইনিংসে ভারতের রানের গড়ায় বোঝাই গিয়েছে ব্যাটারদের দাপট। জবাবে ব্যাট করতে নেমে সাবধানী সূচনা করে ওয়েস্ট ইন্ডিজের দুই ওপেনার জন ক্যাম্পবেল এবং তেগনারিন চন্দ্রপল। শুরুতে ভারতীয় পেসাররা— মহম্মদ সিরাজ ও জশপ্রীত বুমরাহ— সাফল্য পাননি। ফলে সপ্তম ওভারে অধিনায়ক গিল স্পিনার রবীন্দ্র জাদেজাকে আক্রমণে আনেন।
প্রথম বলেই সাফল্য। ক্যাম্পবেলকে ১০ রানে আউট করেন জাদেজা, ফরওয়ার্ড শর্ট লেগে দারুণ ক্যাচ নেন সুদর্শন। এরপর তেগনারিন চন্দ্রপল ও অ্যালিক আথানাজে মিলে ৬৬ রানের গুরুত্বপূর্ণ পার্টনারশিপ গড়েন। দু’জনেই কিছুটা ম্যাচে ফেরানোর চেষ্টা করেন, কিন্তু জাদেজা আবার ভাঙেন সেই জুটি। তেগনারিন আউট হন ৩৪ রানে, ওয়েস্ট ইন্ডিজ তখন ৮৭/২। অল্প সময়ের মধ্যেই কুলদীপ যাদব আউট করেন আথানাজেকে (৪১)। আর পরের ওভারেই ফের আঘাত হানেন জাদেজা — রানের খাতা না খুলেই ফিরে যান অধিনায়ক রস্টন চেজ। শেষ বিকেলে আর কোনও উইকেট না পড়লেও ভারত স্পষ্টভাবে ম্যাচে আধিপত্য প্রতিষ্ঠা করেছে।
দিনের শেষে অপরাজিত রয়েছেন শাই হোপ (৩১) এবং ইমলাচ (১৪)। ভারতের হয়ে জাদেজা নিয়েছেন ৩ উইকেট, কুলদীপ পেয়েছেন ১টি। দ্বিতীয় দিনের শেষে ওয়েস্ট ইন্ডিজ ১৪০/৪ — ভারতের থেকে পিছিয়ে ৩৭৮ রানে। এখন তৃতীয় দিনের শুরুতে ক্যারিবিয়ানরা কীভাবে এই ব্যবধান কমায়, তার দিকেই নজর ক্রিকেটপ্রেমীদের। ভারতীয় শিবিরে আশাবাদ— আর মাত্র কয়েকটি সেশনেই ম্যাচ নিজেদের করে নেওয়া সম্ভব।

