নাতনির অন্নপ্রাশনে মঙ্গলে জমি কিনে দিলেন আইনজীবী ঠাকুমা

ডায়মন্ড হারবার: বিজ্ঞানের কল্যাণে হাতের মুঠোয় চলে এসেছে গোটা দুনিয়া। পৃথিবী ছাড়িয়ে অন্যগ্রহেও ঘর বাঁধার স্বপ্ন দেখছে মানুষ। চাঁদে জমি কেনা শুরু হয়েছিল আগেই। সেই গন্ডি ছাড়িয়ে মঙ্গলগ্রহেও জমি কেনা শুরু হয়েছে। এবার নাতনির জন্য মঙ্গলগ্রহে জায়গা কিনলেন আইনজীবী ঠাকুমা। অন্নপ্রাশনে ঠাকুমার উপহার ছিল এটাই।
ডায়মন্ড হারবার পুরসভার ১৩ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা শিখা হালদার ডায়মন্ড হারবার মহকুমা আদালতের আইনজীবী। তাঁর ছেলে ও পুত্রবধূ দু’জনেও আইনজীবী। গত ৭ মাস আগে একটি কন্যা সন্তান প্রসব করেন পুত্রবধূ পিয়ালী হালদার। নবাগতের নাম দেওয়া হয় দেবাংশ্রী। ঠাকুমা শিখা দেবী ভেবেছিলেন পরিবারের নতুন অতিথিকে এমন কিছু উপহার দিতে হবে যা কিছুটা অন্যরকম। এরপর মঙ্গল গ্রহে জায়গা কেনার পরিকল্পনা করেন শিখা। বেশ অনেক রকম বাধা পেরিয়ে অবশেষে ইন্টারনেটের মাধ্যমে মঙ্গলগ্রহে জমি কেনার জন্য আবেদন করেন তিনি। তবে মঙ্গলে জমি কেনার জন্য ব্যাপক টাকা খরচ করতে হয়নি তাঁকে। বলা যায় জলের দরেই মঙ্গলে জমি পেয়েছেন তিনি। মঙ্গল গ্রহে ১ একর জমি কিনতে সব মিলিয়ে খরচ পড়েছিল ১ লক্ষ টাকার কাছাকাছি। ইতিমধ্যেই মঙ্গলের জায়গা কেনার রেজিস্ট্রেশন হিসেবে ‘মার্স ডিড’ সার্টিফিকেট হাতে পেয়েছেন ওই মহিলা। রবিবার ছিল ছোট্ট দেবাংশ্রীর অন্নপ্রাশন। পরিবারে সবার কোলে কোলে ঘুরছিল সে। এদিন তার হাতে মঙ্গলের জমির সেই রেজিস্ট্রেশন তুলে দেন ঠাকুমা। সেই জমির রেজিস্ট্রেশন সার্টিফিকেটের ফ্লেক্সও টাঙিয়ে রাখা হয়েছিল অনুষ্ঠানে। এই ঘটনার কথা জেনে কার্যত তাজ্জব হয়ে যান অনুষ্ঠানে আগত অতিথিরা। পরিবারের সদস্যরা জানিয়েছেন, কিছু দিনের মধ্যেই ছোট্ট দেবাংশ্রীর নামে একটি চিপ মঙ্গলে পাঠাবে নাসা। ঠাকুমা শিখা হালদার বলেন, ‘সোনা দানা, হিরে উপহার দেওয়ার অনেক কিছুই রয়েছে। কিন্তু আমার একমাত্র ছেলে ও বউমার সন্তান আমার কাছে খুব স্পেশ্যাল। তাই নাতনির জন্য স্পেশ্যাল উপহার দেওয়ার ইচ্ছে ছিল। তাই মঙ্গলে জমি কেনার পরিকল্পনা করি। আসলে নারী শক্তির বিকাশ ঘটুক, এই লক্ষ্য নিয়েই নাতনিকে বিশেষ উপহার দিয়েছি। আগামী দিনে হয়ত বিজ্ঞানের কল্যাণে মঙ্গলে বসবাসও করবে মানুষ।’
অন্যদিকে, পুত্রবধূ পিয়ালী বলেন, ‘মা এমন উপহার দেবেন বুঝতে পারিনি। তিনি সব সময় নারীর ক্ষমতায়ন নিয়ে কথা বলেন। কিন্তু বাস্তবেও যে নাতনির জন্য এমন স্পেশ্যাল উপহার দেবেন আমাদের জানা ছিল না। সত্যিই মামনির জন্য আমি গর্বিত।’

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

fourteen − eleven =