
এশিয়া কাপ ফাইনালের আগে ভারতীয় ক্রিকেট শিবিরে দেখা দিয়েছে চোট-উদ্বেগ। পাকিস্তানের বিরুদ্ধে বহুল প্রতীক্ষিত ফাইনালের আগে দলের দুই গুরুত্বপূর্ণ ক্রিকেটার অভিষেক শর্মা এবং হার্দিক পাণ্ড্যের খেলা নিয়ে প্রশ্নচিহ্ন তৈরি হয়েছে। শুক্রবার শ্রীলঙ্কার বিরুদ্ধে সুপার ফোরের ম্যাচে দু’জনকেই মাঝপথে মাঠ ছাড়তে দেখা যায়। এই ঘটনার পর থেকেই ক্রিকেটপ্রেমী থেকে শুরু করে টিম ম্যানেজমেন্ট—সবাই উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েন। যদিও ভারতীয় বোলিং কোচ মর্নি মর্কেল আশ্বস্ত করেছেন, পরিস্থিতি গুরুতর নয়।
শ্রীলঙ্কার ইনিংসের শুরুতে বল করতে আসেন হার্দিক। মাত্র এক ওভার বল করে ৭ রান দিয়ে একটি উইকেট নেন তিনি। কিন্তু এরপর তাঁকে আর বল হাতে নেননি অধিনায়ক সূর্যকুমার যাদব। আরও উদ্বেগজনক বিষয় হলো, হার্দিককে আর ফিল্ডিংয়েও দেখা যায়নি। কয়েক ওভার বাদেই মাঠ ছাড়েন তিনি। এরপর ৯.২ ওভারের পর মাঠ ছাড়েন অভিষেক শর্মাও। তাঁর জায়গায় অন্য ফিল্ডার নামানো হয়। এই দৃশ্য দেখে মুহূর্তেই সমর্থকদের মধ্যে জল্পনা শুরু হয়—ফাইনালে কি তবে দুই তারকা খেলোয়াড়কে পাওয়া যাবে না?
ম্যাচ শেষে মর্নি মর্কেল সাংবাদিক বৈঠকে জানান, দু’জনেরই চোট খুব গুরুতর নয়। আসলে খেলার সময় পেশিতে টান ধরায় তাঁদের মাঠ ছাড়তে হয়েছে। অভিষেক অনেকটাই সুস্থ আছেন, তবে হার্দিককে নিয়ে কিছুটা চিন্তা রয়ে গিয়েছে। তাঁর অবস্থা শুক্রবার রাতে ও শনিবার সকালে খতিয়ে দেখা হবে। তারপরই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। তবে টিম ম্যানেজমেন্ট আশাবাদী, ফাইনালে হার্দিককে পাওয়া যাবে।
শ্রীলঙ্কার বিরুদ্ধে জয়ের পর ভারতের সামনে একদিন বিশ্রামের সুযোগ রয়েছে। তার পরই ফাইনালে নামতে হবে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে। ব্যস্ত সূচির কারণে ক্রিকেটারদের ক্লান্তি নিয়ে স্বাভাবিক ভাবেই প্রশ্ন উঠছে। তবে মর্কেল জানিয়েছেন, খেলোয়াড়দের পুনরুদ্ধারের জন্য ইতিমধ্যেই ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। ক্রিকেটাররা আইস বাথ নিয়েছেন, ম্যাসাজ সেশন করা হচ্ছে এবং পর্যাপ্ত ঘুম নিশ্চিত করার দিকেই জোর দেওয়া হচ্ছে। অনুশীলনের চাপ না বাড়িয়ে মানসিক ও শারীরিক ভাবে সতেজ রাখাটাই এখন মূল লক্ষ্য।
এশিয়া কাপের ইতিহাসে এই প্রথম ফাইনালে মুখোমুখি হচ্ছে ভারত ও পাকিস্তান। এবারের প্রতিযোগিতায় ইতিমধ্যেই দু’বার দেখা হয়েছে দুই দলের। দুই বারই ভারত স্বচ্ছন্দে জিতেছে। তবে শ্রীলঙ্কার বিরুদ্ধে ভারতের কিছু দুর্বলতা প্রকাশ্যে এসেছে। তাই সূর্যকুমার যাদবের নেতৃত্বে দলকে ফাইনালের আগে অতিরিক্ত সতর্ক থাকতে হচ্ছে। বিশেষত, পাকিস্তানের মতো শক্তিশালী প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে কোনও খামতি মারাত্মক হতে পারে।
সব মিলিয়ে বলা যায়, ফাইনালের আগে চোটের মেঘ কিছুটা হলেও ভারতীয় শিবিরকে অস্বস্তিতে ফেলেছে। যদিও অভিষেককে নিয়ে আশঙ্কা কম, হার্দিকের ব্যাপারে এখনও অনিশ্চয়তা রয়েছে। তবে টিম ম্যানেজমেন্ট এবং চিকিৎসকরা সর্বোচ্চ চেষ্টা করছেন যাতে দুই তারকাকেই পাওয়া যায়। শেষ পর্যন্ত কে ফাইনালে মাঠে নামবেন, সেটাই এখন ক্রিকেটপ্রেমীদের কৌতূহলের কেন্দ্রবিন্দু।

