আসানসোল জেলা হাসপাতালে রোগীর জটিল অস্ত্রপচার, অগ্ন্যাশয় থেকে বের করা হল প্রায় ১২ সেন্টিমিটারের টিউমার 

বুবুন মুখোপাধ্যায়

আসানসোল জেলা হাসপাতালে এক মহিলা রোগীর জটিল অস্ত্রপচার করা হল। ওই রোগীর অগ্ন্যাশয় বা প্যানক্রিয়াটিক থেকে একটি ১০ থেকে ১২ সেন্টমিটারের সিস্ট বা টিউমার বের করা হয়েছে। শনিবার এই অস্ত্রোপচার করেন জেলা হাসপাতালের সার্জেন ডাঃ অমিত গুপ্তা। জেলা হাসপাতালের সুপার ডাঃ নিখিল চন্দ্র দাস বলেন, এই ধরনের অস্ত্রপচার সাধারণত জেলা হাসপাতালের পরিকাঠামোয় করা যায় না। এর আগে কখনও আসানসোলে এমন জটিল অস্ত্রপচার হয়নি বলে জানা গিয়েছে। কিন্তু, রোগীর পরিবারের কথা ভেবে সার্জেন ডাঃ অমিত গুপ্তা ও তার টিম ঝুঁকি নিয়ে এই কাজ করেন। তার জন্য টিমের সবাইকে ধন্যবাদ। এতে আসানসোল জেলা হাসপাতালের ওপর সাধারণ মানুষের ভরসা আরো বাড়বে বলে জানান সুপার।
কুলটি থানার শাঁকতোড়িয়ার বাসিন্দা ২৬ বছর বয়সের ওই রোগীর নাম সুনিতা বাউরি। তিনি গত ৮ মাস ধরে প্যানক্রিয়েটিক সিস্টের রোগে ভুগছিলেন। এই কারণে তিনি ঠিক খেতে পারছিলেন না। স্বাভাবিকভাবেই তিনি প্রতিদিনের কাজও করতে পারছিলেন না। ওই মহিলা শারীরিকভাবে দুর্বল হয়ে পড়েছিলেন। জেলা হাসপাতালের চিকিৎসক ডাঃ অমিত গুপ্তা তাকে দেখে পরীক্ষা করার পর, রোগীকে এই সিস্ট অপারেশনের জন্য গ্যাস্ট্রো সার্জারি করার পরামর্শ দেন। কিন্তু রোগীর পরিবারের আর্থিক অবস্থার ভালো না থাকার কারণে তিনি তা করে উঠতে পারেননি। শেষ পর্যন্ত শনিবার আসানসোল জেলা হাসপাতালেই ডাঃ অমিত গুপ্তা দুই অ্যানাস্থেটিস্ট ডাঃ শর্মিলা গুহ ও ডাঃ মাধব মণ্ডল ‘সিস্টোগাস্ট্রোস্টমি’ নামে এই জটিল অস্ত্রোপচার করেন। পরে ওই চিকিৎসক বলেন, বাইপাসের মাধ্যমে করা এই অপারেশন সফল হয়েছে। সবমিলিয়ে আড়াই ঘণ্টার মতো সময় লেগেছে। ১০ থেকে ১২ সেন্টিমিটারের মতো একটি সিস্ট বার করা হয়েছে। এছাড়াও তার গলব্লাডারের স্টোনও বার করা হয়েছে। রোগীর শারীরিক অবস্থা আপাতত স্থিতিশীল রয়েছে। তাকে দিন কয়েক পর্যবেক্ষণে রাখা হবে। তিনি বলেন, এই সিস্ট হওয়ার কারণে রোগীর খাদ্যনালী সরু হয়ে যায়। তিনি খেতে পারছিলেন না। স্বাভাবিক ভাবেই তার নানা সমস্যা হচ্ছিল। রোগীকে গ্যাস্ট্রো সার্জারি করা হয়, এমন জায়গায় যেতে বলেছিলাম। যেহেতু আসানসোল জেলা হাসপাতালে এই অপারেশন করা যায় না। কিন্তু রোগী আর্থিক অবস্থা ঠিক না থাকায় তিনি কোথাও যেতে পারেননি। তাই ঝুঁকি নিয়ে এই অস্ত্রপ্রচার করতে হল। অপারেশন হওয়ায় রোগীর পরিবারের সদস্যরাও খুশি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

twenty + ten =