“পাকিস্তান আর চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী নয়, সাধারণ প্রতিপক্ষই” ম্যাচ শেষে বিস্ফোরক ভারতীয় অধিনায়ক

ভারত-পাকিস্তান ম্যাচ মানেই ছিল উত্তেজনা, তীব্র প্রতিদ্বন্দ্বিতা আর বাইশ গজে যুদ্ধের আবহ। তবে সময় বদলেছে। সাম্প্রতিক দুবাই সাক্ষাতে ভারত আবারও সহজ জয় পেল পাকিস্তানের বিরুদ্ধে। ছয় উইকেটের জয়ে মাঠ ছাড়ল সূর্যকুমার যাদবের দল। কিন্তু ম্যাচ শেষে ভারত অধিনায়কের বক্তব্যে যেন আরও বড় ধাক্কা খেল প্রতিদ্বন্দ্বীরা। তিনি স্পষ্ট জানিয়ে দিলেন, ভারত-পাক ম্যাচকে আর কোনও বিশেষ মর্যাদা দিতে রাজি নন তিনি। তাঁর চোখে এই ম্যাচ এখন আর পাঁচটা আন্তর্জাতিক ম্যাচের মতোই।

ম্যাচ শেষে সংবাদমাধ্যমের প্রশ্নে সূর্যকুমারের সোজাসাপ্টা উত্তর—“আপনারা আর এই চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী শব্দটা ব্যবহার করবেন না, প্লিজ।” তাঁর মতে, প্রকৃত প্রতিদ্বন্দ্বিতা তখনই বলা যায়, যখন দুই দল অনেকগুলো ম্যাচে সমানতালে লড়াই করে। যেমন ১৫-২০টি ম্যাচে মুখোমুখি হয়ে যদি ফলাফল ৭-৭ বা ৮-৭ হয়, তখন সেটিকে রাইভ্যালরি বলা যায়। কিন্তু ভারত ও পাকিস্তানের সাম্প্রতিক রেকর্ডে একতরফা আধিপত্যই ফুটে উঠছে। ভারত বেশ কয়েক বছর ধরে টানা ম্যাচ জিতছে, পাকিস্তান কেবল নামমাত্র লড়াই করছে। তাই সূর্যের মতে, এই ম্যাচ আর কোনওভাবেই রাইভ্যালরি নয়।

এই মন্তব্য নিঃসন্দেহে পাকিস্তানি সমর্থকদের জন্য বড় ধাক্কা। কারণ, এতদিন ধরে তারা ভারত-পাক ম্যাচকে বিশেষ মর্যাদা দিয়ে এসেছে। ভক্তদের কাছে এই লড়াই মানেই সম্মান-অপমানের প্রশ্ন। কিন্তু ভারত অধিনায়কের কথায় সেই মর্যাদা যেন মুহূর্তে মুছে গেল। এতে প্রতিবেশী দেশের সমর্থকরা আরও হতাশ হবেন, এ কথায় দ্বিমত নেই।

তবে শুধু প্রতিদ্বন্দ্বিতা নিয়েই নয়, সূর্যকুমার দলের খেলোয়াড়দের নিয়েও স্পষ্ট মন্তব্য করেছেন। এই ম্যাচে বুমরাহ প্রত্যাশিত ছন্দে ছিলেন না। তাঁর বোলিং ফিগার দাঁড়ায় ৪ ওভারে ৪৫ রান, কোনও উইকেট নেই। যা মোটেই বুমরাহসুলভ নয়। তবুও সূর্য শান্ত থেকে বলেন, “বুমরাহ রোবট নয়। ওর খারাপ দিন আসতেই পারে।” অর্থাৎ দলের ভরসার বোলারের জন্য অধিনায়কের পূর্ণ সমর্থন রয়েছে।

অন্যদিকে, শিবম দুবের পারফরম্যান্সে সন্তুষ্ট সূর্য। সঠিক সময়ে দলের হয়ে অবদান রাখায় তাঁর প্রশংসা করেছেন তিনি। এটি প্রমাণ করে, দলের সাফল্যে একক কারও অবদান নয়, বরং সমষ্টিগত প্রয়াসই মুখ্য।

সব মিলিয়ে এই জয় শুধু আরেকটি পরিসংখ্যান নয়, বরং মানসিক লড়াইতেও ভারতের প্রাধান্য স্পষ্ট করে দিল। পাকিস্তানের বিরুদ্ধে জয় এখন আর বিশেষ কিছু নয়, বরং নিয়মিত ঘটনা হয়ে দাঁড়িয়েছে। অধিনায়ক সূর্যকুমারের বক্তব্যে সেটিই প্রতিফলিত হল—ভারতের কাছে পাকিস্তান আর চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী নয়, শুধু আর পাঁচটা সাধারণ প্রতিপক্ষের মতোই একটি দল।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

seventeen − ten =