সৌরভ-হরভজন নন ! বিসিসিআই প্রেসিডেন্ট হচ্ছেন এক অখ্যাত খেলোয়াড়

বোর্ড প্রেসিডেন্ট নির্বাচন যে কোনও আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টি ম্যাচের থেকেও কম আকর্ষণীয় নয়, তার প্রমাণ মিলল ফের। শনিবার নয়াদিল্লিতে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহর বাসভবনে একটি বেসরকারি বৈঠকে বিসিসিআইয়ের আগামী সভাপতি পদে চমকপ্রদ নাম উঠে এল—মিঠুন মানহাস। অবাক করার মতো বিষয়, ভারতীয় দলে একটিও আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলেননি তিনি। তবে ঘরোয়া ক্রিকেটে দিল্লির অন্যতম ভরসাযোগ্য ব্যাটার ছিলেন দীর্ঘদিন। দিল্লির অধিনায়কত্বও করেছেন। বর্তমানে তিনি জম্মু-কাশ্মীর ক্রিকেট উন্নয়ন সংক্রান্ত কর্মকাণ্ডের সঙ্গে যুক্ত।

তবে এখনও নিশ্চিতভাবে বলা যাচ্ছে না যে তিনিই সভাপতি হচ্ছেন। কারণ মনোনয়ন জমার আগে পরিস্থিতি যেকোনও সময় পাল্টে যেতে পারে। বিসিসিআইয়ের নির্বাচনে নাটকীয় মোড় নেওয়ার নজির এর আগেও একাধিকবার রয়েছে। সেক্ষেত্রে সম্ভাব্য নাম তালিকায় থাকা মানহাসের অবস্থান নিয়ে শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত ধোঁয়াশা থেকেই যাবে।

অন্যদিকে, বিসিসিআইয়ের অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ পদ নিয়েও চলছে জল্পনা। এক সময় সভাপতি পদে দাবিদার ছিলেন রঘুরাম ভাট, তবে এখন তিনি সম্ভবত কোষাধ্যক্ষ হতে চলেছেন। ভাইস প্রেসিডেন্ট পদে রাজীব শুক্লার থাকার সম্ভাবনা প্রবল। যুগ্ম সচিব পদে আসতে পারেন প্রভতেজ ভাটিয়া। আর আইপিএলের প্রধান হিসেবে অরুণ ধুমালের নাম প্রায় নিশ্চিত হিসেবেই ধরা হচ্ছে। তবুও, এ সবই সম্ভাব্য তালিকা—শেষ মুহূর্তের পরিবর্তন অস্বাভাবিক নয়।

সাম্প্রতিক অতীতে শোনা গিয়েছিল, বিসিসিআই সভাপতির দৌড়ে রয়েছেন সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়। তাঁর মতো বিশ্বজোড়া জনপ্রিয় ব্যক্তিত্ব আবারও বোর্ডের শীর্ষপদে ফিরতে পারেন, এমন ধারণাও ছড়িয়েছিল। হরভজন সিংয়ের নামও আলোচনায় আসে কিছু মহলে। কিন্তু সর্বশেষ হিসেব বলছে, মিঠুন মানহাসই বোর্ডের সর্বোচ্চ পদে বসতে চলেছেন।

প্রশ্ন উঠছে, আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে খেলার অভিজ্ঞতা নেই, বিশ্বজোড়া জনপ্রিয়তা নেই, তবুও কেন তাঁকে ভাবা হচ্ছে এত বড় দায়িত্বে? অনেকের মতে, এর পেছনে রয়েছে গভীর রাজনৈতিক সমীকরণ। ভারতের ক্রিকেট প্রশাসনে রাজনীতির প্রভাব নতুন কিছু নয়। বোর্ড প্রেসিডেন্ট পদের মতো ক্ষমতাশালী আসনে কাকে বসানো হবে, তা নির্ভর করে মাঠের পারফরম্যান্সের থেকেও বেশি রাজনৈতিক সমঝোতার ওপর।

সব মিলিয়ে বোর্ড নির্বাচনের এই লড়াই একেবারেই ক্রিকেট মাঠের বাইরের খেলা। কে সভাপতি হবেন, কে কোষাধ্যক্ষ বা ভাইস প্রেসিডেন্ট হবেন—এসব সিদ্ধান্তের নেপথ্যে থাকে ক্ষমতা, প্রভাব আর কূটনীতির জটিল সমীকরণ। তাই মিঠুন মানহাসের নাম আপাতত শীর্ষে থাকলেও, চূড়ান্ত ফলাফলের আগে নিশ্চিতভাবে কিছু বলা যাচ্ছে না। তবুও একটি বিষয় পরিষ্কার—বোর্ড প্রেসিডেন্ট নির্বাচন যে কোনও বড় টুর্নামেন্টের মতোই নাটকীয়তা, উত্তেজনা আর আলোচনায় ভরপুর।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

fourteen + 3 =