ভারত–পাকিস্তান ম্যাচ মানেই আলাদা উত্তেজনা। দুবাই আন্তর্জাতিক স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত এশিয়া কাপ সুপার ফোরের ম্যাচও তার ব্যতিক্রম নয়। তবে এবারও ইতিহাসই যেন পুনরাবৃত্তি করল। পাকিস্তান লড়াই করার চেষ্টা করলেও শেষ পর্যন্ত ৭ বল বাকি থাকতে ৬ উইকেটে সহজ জয় পেল টিম ইন্ডিয়া। এই জয়ে যেমন ভারতের সুপার ফোর অভিযান শুভ সূচনা হল, তেমনই দেবীপক্ষের শুরুতেও ভারতবাসীর মুখে হাসি ফুটল।
টসে জিতে প্রথমে বল করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন ভারত অধিনায়ক। পাকিস্তানি ওপেনার সাহিবজাদা ফারহান শুরু থেকেই ঝোড়ো মেজাজে খেলতে থাকেন। তাঁর ব্যাট থেকে আসে ৪৫ বলে ৫৮ রানের ইনিংস। সঙ্গী ফখর জামানও মাত্র ৯ বলে ১৫ রান করে আক্রমণাত্মক শুরু করে দেন। দীর্ঘদিন রান না পাওয়া আয়ুবও এদিন ২১ রান করেন। মিডল অর্ডারে সলমন আঘা (১৭), হুসেইন তালাত (১০), মহম্মদ নওয়াজ (২১) এবং ফাহিম আশরাফ (২০)-এর ছোট ছোট ইনিংসে পাকিস্তান ধীরে ধীরে রানের চাকা ঘুরিয়ে নেয়। ভারতীয় বোলারদের মধ্যে কুলদীপ যাদব এবং অভিষেক শর্মা কিছুটা নিয়ন্ত্রণে রাখলেও ফিল্ডারদের একাধিক ক্যাচ মিসের কারণে পাকিস্তান ১৭১ রানের সম্মানজনক স্কোরে পৌঁছে যায়। জশপ্রীত বুমরাহ বিশেষ কার্যকর প্রমাণিত হননি, যা ভারতীয় শিবিরের চিন্তার কারণ হয়ে দাঁড়াতে পারে।
১৭২ রানের লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে ভারতের শুরুটা ছিল বিস্ফোরক। শাহিন শাহ আফ্রিদির প্রথম বলকেই গ্যালারিতে পাঠান অভিষেক শর্মা। সেখান থেকেই শুরু হয় ভারতীয় ঝড়। অভিষেক এবং শুভমান গিল মিলে রীতিমতো পাকিস্তানি বোলারদের ওপর ঝড় তোলেন। কে আগে হাফসেঞ্চুরি করবেন, তা নিয়েই যেন নীরব প্রতিযোগিতা শুরু হয় দুই তরুণের মধ্যে। গিল ৪৭ রানে আউট হলেও তাঁর সঙ্গে ১০৫ রানের জুটি গড়ে ভারতকে জয় নিশ্চিত করে দেন অভিষেক। তিনি ৭৪ রানের এক ঝকঝকে ইনিংস খেলে ফেরেন। তবে আউট হওয়ার আগে তিনি ম্যাচকে ভারতের নাগালে এনে দিয়ে গিয়েছিলেন।
এরপর সূর্যকুমার যাদব দ্রুত ফিরে গেলেও রান রেট কমতে দেননি। ওমান ম্যাচের নায়ক সঞ্জু স্যামসনও এদিন ব্যর্থ হন, করেন মাত্র ১৩ রান। তবে শেষে হার্দিক পাণ্ডিয়া ও তিলক বর্মা দায়িত্ব নিয়ে সহজেই বাকি রান তুলে নেন। ফলে ভারত জয়লাভ করে ৬ উইকেটে, এবং ম্যাচের আগেই যেন বোঝা যাচ্ছিল পাকিস্তানের ১৭১ কোনওভাবেই ভারতের জন্য চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়াতে পারবে না।
তবু ভারতীয় দলে কিছু উদ্বেগের জায়গা রয়ে গেল। বিশেষ করে ফিল্ডিংয়ে একাধিক সহজ ক্যাচ মিস করা এবং মিডল অর্ডারের পুরনো দুর্বলতা ভারতকে আগামী ম্যাচগুলোতে ভোগাতে পারে। যদিও ওপেনারদের দাপট এবং টিমের সামগ্রিক আত্মবিশ্বাস পাকিস্তানকে হারিয়ে আরও একবার প্রমাণ করল, ভারত বর্তমানে অনেকটাই এগিয়ে।
সব মিলিয়ে, ম্যাচের ফলাফল ভারতীয় সমর্থকদের জন্য আনন্দদায়ক হলেও দলকে আরও নিখুঁত হতে হবে। কারণ সামনে আসছে আরও গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচ। তবে এদিনের জয় নিঃসন্দেহে ভারতীয় ক্রিকেটপ্রেমীদের জন্য এক স্মরণীয় রবিবার উপহার দিল।

