সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়ের নাম বাংলার ক্রিকেট মানেই এক অন্যরকম আবেগ। খেলোয়াড় জীবনে তিনি যেমন ভারতীয় ক্রিকেটকে নতুন উচ্চতায় পৌঁছে দিয়েছিলেন, তেমনই প্রশাসক হিসেবেও তাঁর ভূমিকা যথেষ্ট গুরুত্বপূর্ণ। আবারও সেই ভূমিকায় ফেরার পথে তিনি। রবিবার আনুষ্ঠানিকভাবে সিএবি নির্বাচনে সভাপতি পদে মনোনয়ন জমা দিলেন প্রাক্তন ভারত অধিনায়ক। উল্লেখযোগ্যভাবে, এই পদে অন্য কোনও প্রার্থী মনোনয়ন জমা দেননি। ফলে ৬ বছর পর ফের বঙ্গ ক্রিকেট প্রশাসনে সৌরভের প্রত্যাবর্তন এখন কার্যত নিশ্চিত।
ইডেনে সৌরভের সঙ্গে তাঁর পুরো প্যানেল মনোনয়ন জমা দেয়। সচিব পদে রয়েছেন বাবলু কোলে, যুগ্ম-সচিব হিসেবে মদন ঘোষ, কোষাধ্যক্ষ পদে সঞ্জয় দাস এবং সহ-সভাপতি হিসেবে অনু দত্তর নাম ঘোষণা করা হয়েছে। আগামী ২২ সেপ্টেম্বর অনুষ্ঠিত হবে সিএবির বার্ষিক সাধারণ সভা। সেখানেই আনুষ্ঠানিকভাবে সৌরভের নতুন ইনিংস শুরু হবে।
মনোনয়ন জমা দেওয়ার পর সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে সৌরভ জানান, গত দেড় বছর ধরে তিনি বাংলার বিভিন্ন জেলায় ঘুরে পরিস্থিতি বোঝার চেষ্টা করেছেন। তাঁর কথায়, “আমরা সবাই এক। আমাদের একসঙ্গে কাজ করতে হবে। সব জায়গাতেই কিছু সমস্যা থাকে, সেগুলো কাটিয়ে উঠতে হবে।” পাশাপাশি তিনি স্পষ্ট করে দেন, মাঠে নামা এখন আর তাঁর কাজ নয়, সেটা ক্রিকেটারদের দায়িত্ব। কিন্তু প্রশাসনিক ক্ষেত্রে তিনি পরিকল্পনা নিয়ে এগোতে চান। সৌরভ আরও বলেন, কোভিডের সময়ে অনেক উন্নয়নমূলক কাজ আটকে গিয়েছিল, এবার তিনি সেগুলো নতুন করে শুরু করতে চান।
২০১৫ থেকে ২০১৯ পর্যন্ত সিএবির সভাপতি ছিলেন সৌরভ। সেই সময় বাংলার ক্রিকেটে অবকাঠামোগত উন্নতি হয়েছিল। বিশেষ করে যুব ক্রিকেটের দিকে নজর দেন তিনি। ২০১৯ সালে বোর্ড অফ কন্ট্রোল ফর ক্রিকেট ইন ইন্ডিয়া (বিসিসিআই)-এর সভাপতি হন তিনি এবং ২০২২ পর্যন্ত সেই দায়িত্ব পালন করেন। তাঁর নেতৃত্বে ভারতের ক্রিকেটে একাধিক গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছিল। এবার ফের তিনি ফিরে এলেন বাংলার মাটিতে।
বাংলা ক্রিকেটপ্রেমীদের কাছে এই প্রত্যাবর্তন নিঃসন্দেহে বড় প্রাপ্তি। সৌরভ সবসময় বাংলার ক্রিকেটারদের পাশে থেকেছেন। নতুন প্রজন্মের ক্রিকেটাররা যাতে আরও সুযোগ পান, তার জন্য তিনি অবকাঠামো এবং প্রতিযোগিতা বাড়ানোর পরিকল্পনা করছেন বলে সূত্রের খবর। বাংলার প্রতিটি জেলা থেকে প্রতিভা উঠে আসুক, সেটাই তাঁর লক্ষ্য।
ফলে বলা যায়, ফের সিএবির সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব নিতে চলা সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়ের এই পদক্ষেপ শুধু একটি আনুষ্ঠানিকতা নয়, বরং বাংলার ক্রিকেটে নতুন দিগন্তের সূচনা। খেলোয়াড়, প্রশাসক এবং প্রাক্তন বোর্ড প্রধান—সব ক্ষেত্রেই তাঁর অভিজ্ঞতা এবার কাজে লাগবে বাংলার ক্রিকেটের উন্নয়নে। আগামী দিনে তাঁর পরিকল্পনা কতটা বাস্তবায়িত হয়, সেটাই দেখার বিষয়।

