লজ্জাজনক, ন্যক্কারজনক! এইসব বললেও বোধহয় কম বলা হয়। রেফারির সিদ্ধান্তে ক্ষুব্ধ হয়ে তাকেই প্রহার। ঘটনাটি ঘটেছে উত্তর ২৪ পরগণা সুপার লিগের ফাইনালে। রবিবার নৈহাটি স্টেডিয়ামে উত্তর ২৪ পরগণা সুপার লিগের ফাইনালে মুখোমুখি হয়েছিল খড়দহ সূর্য সেন ও বেলঘড়িয়া অ্যাথলেটিক ক্লাব। ঘটনার সূত্রপাত ম্যাচের ৬৫ মিনিটে। বেলঘড়িয়ার পক্ষে পেনাল্টি দেন রেফারি, এর জেরে প্রতিবাদ জানান সূর্য সেন দলের ফুটবলাররা। এরপরই মাঠের মাঝখানে রেফারিকে প্রহার শুরু করেন সূর্য সেনের ফুটবলার এবং কর্তারা।
রেফারি লাল কার্ড দেখালে পরিস্থিতি আরও উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। প্রহারের জেরে রেফারি পালানোর চেষ্টা করেন। তবে রিজার্ভ বেঞ্চ থেকে এমনকি গ্যালারি থেকেও অনেকে উঠে এসে রেফারির উপর চড়াও হয়। মাঠেই ফেলে প্রহার চলতে থাকে রেফারির উপর। বাদ যাননি কর্তারাও, রেফারি ও তার সহকারীর দিকেও তেড়ে যান খড়দহ সূর্য সেন ক্লাবের কর্তারা। আহত রেফারিকে হাসপাতালে ভর্তি করে চিকিৎসার পর তিনি সুস্থ হন। অভিযুক্ত সূর্য সেন ক্লাবের ফুটবলারদের বিরুদ্ধে স্থানীয় থানায় অভিযোগ জানানো হয়েছে।
এই ঘটনায় উত্তর ২৪ পরগণা জেলা ক্রীড়া সংস্থার সচিব নবাব ভট্টাচার্যর বক্তব্য, “যারা এই ঘটনা ঘটিয়েছে, তাদের বিরুদ্ধে কঠোরতম ব্যবস্থা নেওয়া হবে। চারজন ইতিমধ্যেই গ্রেফতার হয়েছে। জেলার শৃঙ্খলা রক্ষা কমিটি মিলে আলোচনা করে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। ফুটবল খেলতে গেলে ফুটবলের আইনকে সম্মান করতে হবে। নিয়মকে সম্মান করতে হবে। এইরকম ঘটনা ঘটলে বাংলার সব জেলায় খেলা বন্ধ হয়ে যাবে। দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির প্রয়োজন।”
অন্যদিকে খড়দহ সূর্য সেনের কোচ সায়ন্তন দাস রায় প্রশ্ন তুলছেন, মাঠে কেন পর্যাপ্ত পুলিশি নিরাপত্তা ছিল না? তিনি বলেন, “যে ঘটনা ঘটেছে তা একেবারেই কাম্য নয়। কোনও ভাবেই সমর্থন যোগ্য নয়। রেফারির গায়ে হাত তোলা খারাপ দৃষ্টান্ত। রেফারির সঙ্গে কথা হয়েছে, সুস্থতা কামনা করি। মূল সমস্যা মাঠে পর্যাপ্ত কোনও নিরাপত্তা ছিল না। ফলে গ্যালারি থেকে দর্শকরাও নেমে মাঠে ঢুকে পড়ে।” এই বিষয়ে রেফারি সংস্থার সচিব চিত্তদাস মজুমদার বলেন, “এই বিষয়ে আমাদের কেউ কিছু জানায়নি। আমার একেবারেই অবগত নই। ন্যক্কারজনক ঘটনা। এইভাবে তো নতুন ছেলেরা ম্যাচ খেলাতে যেতে ভয় পাবে!”

