কোচ খালিদ জামিলকে নিয়ে মতবিরোধ প্রাক্তনীদের

২ জুলাই ২০২৫, ভারতীয় ফুটবল দলের কোচের পদ থেকে বিদায় নিলেন মানালো মারকুয়েজ। এআইএফএফ ও স্প্যানিশ কোচ মানালো যৌথ আলোচনা করে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। মানালোর নেতৃত্বে ভারতীয় দল আটটি ম্যাচের মধ্যে মাত্র একটি ম্যাচ জিতেছিল। এএফসি এশিয়ান কাপ কোয়ালিফায়ার্সে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে ড্র এবং হংকংয়ের কাছে হারের কারণে মানালোকে দায়িত্ব থেকে সরানোর আওয়াজ ওঠে। কোচের পদে ফিরিয়ে আনতে হবে কোনও ভারতীয়কে, প্রাক্তন ফুটবলার থেকে ফুটবল বিশেষজ্ঞ, আপামর ফুটবলপ্রেমীরা সেটাই চাইছিলেন। বিজ্ঞপ্তির পর ১৭০ টি জীবন পঞ্জী জমা পড়েছিল। শেষমেশ জামশেদপুর এফসির কোচ খালিদ জামিলের হাতেই দায়িত্ব দেওয়া হয়।

ফেডারেশনের সঙ্গে দু’বছরের চুক্তিতে সই করলেন খালিদ জামিল। আরও একবছর চুক্তির মেয়াদ বাড়ানোর বিকল্প রয়েছে। ১৫ আগস্ট থেকে পুরুষদের জাতীয় দলের দায়িত্ব নিয়েছেন তিনি। বেঙ্গালুরুর দ্রাবিড়-পাড়ুকোন সেন্ট্রার অফ স্পোর্টস এক্সেলেন্সে ট্রেনিং শুরু হওয়ার কথা। কোচ হিসেবে খালিদের প্রথম টুর্নামেন্ট হতে চলেছে কাফা নেশনস কাপ। এই প্রতিযোগিতায় ভারত তাজিকিস্তান, ইরান এবং আফগানিস্তানের বিরুদ্ধে ম্যাচ খেলবে।

আইজল এফসির হয়ে আইলিগ জয়ী কোচ খালিদ। ময়দানের ক্লাব ইস্টবেঙ্গল এবং মোহনবাগানে কোচিং করানোর অভিজ্ঞতাও রয়েছে। আইএসএলে নর্থইস্ট ইউনাইটেড এবং জামশেদপুর এফসি-তে সফল ভাবে কোচিং করিয়েছেন খালিদ। প্রশ্ন উঠছে একাধিক বিদেশি অভিজ্ঞরা আবেদন করলেও ভারতীয় দলের কোচের পদের জং বেছে নেওয়া হল খালিদকে। অবশ্যই তিনি যোগ্য। তবে ভারতীয় ফুটবল যে জায়গায় রয়েছে তাতে একেবারে মোড় ঘোরানো কোনও ব্যক্তিকে দরকার হটসিটে। ক্রীড়া জগতের ভাষায় যাকে বলে ‘গেম চেঞ্জার’। বিদেশির পরিবর্তে ভারতীয় কোচকেই প্রাধান্য দিতে চাইছে ফেডারেশন। কারণ বর্তমানে আর্থিক সঙ্কটে থাকা এআইএফএফ বেশি বেতন দিয়ে বিদেশি কোচকে দায়িত্ব দিতে পারবে না। প্রাক্তন মোহনবাগানী ও বর্তমানে চেন্নাই এফসির ফুটবলার প্রীতম কোটাল খালিদ জামিলকে শুভেচ্ছা জানানোর পাশাপাশি

খালিদ জামিলকে শুভেচ্ছা জানিয়ে ফেডারেশনের কোচ নির্বাচনের প্রশংসা করেছেন একাধিক প্রাক্তনী ও বর্তমান ফুটবলাররা। জামিলকে শুভেচ্ছা জানানোর পাশাপাশি বর্তমানে আইএসএল নিয়ে অনিশ্চয়তার কথাও তুলে ধরেছেন প্রীতম। তিনি বলেন, “উনি জামশেদপুরে ভালো কোচিং করিয়েছেন, সেই কারণে সুযোগ দেওয়া হয়েছে। আমরা এই জায়গায় ভারতীয় ফুটবলকে দেখতে চাই না। খেলোয়াড় হিসবে আমাদের যেমন দায়িত্ব রয়েছে, কর্তাদেরই দায়িত্ব একসঙ্গে মিলে ফুটবলকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া।ফুটবলের মতো খেলা যদি বন্ধ হয়ে আমাদের দেশে, তাহলে সবাই জন্যই খারাপ। খেলোয়াড়, সাপোর্ট স্টাফ সকলেরই অনেক ক্ষতি হচ্ছে। আশা করছি দ্রুত সমস্যার সমাধান হবে। এআইএফএফ এবং এফএসডিএল কর্তারা যত দ্রুত সমস্যা মিটিয়ে নিতে পারবে ততই ভালো।” এই ‘কর্তাদের দায়িত্ব’ -নিয়েই সন্তুষ্ট নন অনেক ক্রীড়াপ্রেমী থেকে প্রাক্তন ফুটবলাররা।

খালিদ জামিল অত্যন্ত কঠিন সময়ে দলের দায়িত্ব নিয়েছেন। ‘খালিদের কথা ভেবেই কষ্ট হচ্ছে’, বলে জানালেন প্রাক্তন ভারতীয় অধিনায়ক বাইচুং ভুটিয়া। তিনি, ‘ফেডারেশন কর্তাদের সঙ্গে কাজ করা খুবই কঠিন। ইগর স্টিমাচ ও মানোলো মার্কুয়েজের মতো কোচেরা টিকতে পারল না। খালিদের জন্য খুব খারাপ লাগছে। কল্যাণ জমানায় একের পর এক দুর্নীতি হয়েছে, ফুটবলের ক্ষতি হচ্ছে।’ তিনি মনে করছেন, স্থানীয় কোচের উপর ফুটবল ফেডারেশনের অধিক প্রভাব বিস্তারের ক্ষমতা থাকবে। সেই কারণেই খালিদ জামিলকে কোচ করার মতো সিদ্ধান্ত নিয়েছে ফেডারেশন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

two × one =