আইপিএলে কোহলিদের নতুন হোম !

রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরু আইপিএল শিরোপা জেতার পর সারা দেশ আনন্দে মেতেছিল। কিন্তু সেই আনন্দ মুহূর্তেই রূপ নেয় এক হৃদয়বিদারক ঘটনায়। চিন্নাস্বামী স্টেডিয়ামে কোহলিদের সেলিব্রেশনে যোগ দিতে গিয়ে পদপিষ্ট হয়ে প্রাণ হারান ১১ জন, আহত হন বহু দর্শক। ঘটনাস্থলে পর্যাপ্ত পুলিশ না থাকা, ভিড় নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থতা এবং জরুরি চিকিৎসা ব্যবস্থার অভাবের কারণে পরিস্থিতি ভয়াবহ আকার ধারণ করেছিল।

চিন্নাস্বামী স্টেডিয়ামের ধারণক্ষমতা মাত্র ৩৩ হাজার হলেও সেদিন সেখানে ঢোকার চেষ্টা করেছিলেন দু’ থেকে তিন লক্ষ মানুষ। ছোট প্রবেশদ্বার ভেঙে যায়, মানুষজন ঠাসাঠাসি করে প্রবেশের চেষ্টা করেন। আহতদের দ্রুত হাসপাতালে নেওয়ার মতো পর্যাপ্ত অ্যাম্বুল্যান্সও উপস্থিত ছিল না। এই দুর্ঘটনা থেকে শিক্ষা নিয়েই কর্নাটক সরকার নিল বড় সিদ্ধান্ত।

মুখ্যমন্ত্রী সিদ্দারামাইয়ার নেতৃত্বে রাজ্য সরকার ঘোষণা করেছে, বেঙ্গালুরুর দক্ষিণে বোম্মাসান্দ্ররার সূর্য সিটির স্পোর্টস কমপ্লেক্সে গড়ে তোলা হবে দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম ক্রিকেট স্টেডিয়াম। ৮০ হাজার দর্শকাসনের এই স্টেডিয়াম তৈরিতে বরাদ্দ করা হয়েছে ১,৬৫০ কোটি টাকা। ইতিমধ্যেই ১০০ একর জমি কর্নাটক হাউসিং বোর্ডের হাতে হস্তান্তর করা হয়েছে।

শুধু ক্রিকেট নয়, এখানে ইনডোর ও আউটডোর মিলিয়ে মোট আট ধরনের খেলাধুলোর সুযোগ থাকবে। জাতীয় ক্রীড়া অ্যাকাডেমিও এই স্টেডিয়ামের অধীনে আনা হবে। আধুনিক সুযোগ-সুবিধা, উন্নত নিরাপত্তা ব্যবস্থা এবং পর্যাপ্ত জরুরি পরিষেবা নিশ্চিত করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে সরকার।

ভারতের সবচেয়ে বড় ক্রিকেট স্টেডিয়াম বর্তমানে গুজরাটের নরেন্দ্র মোদি স্টেডিয়াম, যার ধারণক্ষমতা ১,৩২,০০০। নতুন এই বেঙ্গালুরু স্টেডিয়াম হবে দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম। তবে শুধু কর্নাটকই নয়, আরও দুই রাজ্য বড় স্টেডিয়াম নির্মাণের প্রতিযোগিতায় নেমেছে। মুম্বইয়ে এমসিএ-র তত্ত্বাবধানে এবং অন্ধ্র প্রদেশের অমরাবতীতে বিশ্বের সর্ববৃহৎ ক্রিকেট স্টেডিয়াম গড়ার পরিকল্পনা চলছে।

কর্নাটক সরকারের আশা, এই বিশাল স্টেডিয়াম শুধু বড় ম্যাচ আয়োজনেই নয়, আন্তর্জাতিক মানের ক্রীড়া প্রশিক্ষণ ও প্রতিভা গড়ে তুলতেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। একইসঙ্গে, ২০২৪ সালের মর্মান্তিক দুর্ঘটনার মতো পরিস্থিতি এড়াতে উন্নত ব্যবস্থাপনা ও নিরাপত্তা থাকবে এখানে।

এই প্রকল্প বাস্তবায়িত হলে বেঙ্গালুরু ক্রীড়াঙ্গনে এক নতুন অধ্যায়ের সূচনা হবে, যেখানে আনন্দ আর নিরাপত্তা—দুটোই থাকবে সমানভাবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

one × three =