তৃতীয় দিনেই ম্যাঞ্চেস্টার টেস্টের ছবিটা যেন অনেকটাই স্পষ্ট। ভারতের প্রথম ইনিংসে করা ৩৫৮ রানের জবাবে ইংল্যান্ড যে দাপট দেখাল, তাতে টিম ইন্ডিয়ার চিন্তা বাড়ছে বই কমছে না। তৃতীয় দিনের শেষে ইংল্যান্ড ৭ উইকেট হারিয়ে তুলেছে ৫৪৪ রান। লিড দাঁড়িয়েছে ১৮৬ রানের। এখন সিরিজে ভারতের ভাগ্য অনেকটাই নির্ভর করছে গিলদের দ্বিতীয় ইনিংসের পারফরম্যান্সের উপর।দিনের শুরুতেই জো রুট ও অলি পোপ মিলে ভারতীয় বোলারদের চাপে ফেলেন। আগের দিন রাতের ২২৫/২ রানের ইনিংসকে এদিন বিশাল রূপ দেন তাঁরা। একদিকে ছিল রুটের ধৈর্য, অন্যদিকে পোপের আগ্রাসন। রুট এদিন ১৫০ রানের অনবদ্য ইনিংস খেলে ফিরে যান জাদেজার বলে। এই ইনিংস তাঁকে পৌঁছে দেয় টেস্ট ক্রিকেটে সর্বাধিক রানকারীদের দ্বিতীয় স্থানে—শচীনের (১৫,৯২১) ঠিক পরেই। তিনি টপকে যান দ্রাবিড়, ক্যালিস, পন্টিংদের মতো কিংবদন্তিদের। পাশাপাশি ৩৮তম টেস্ট সেঞ্চুরি করে ছুঁয়ে ফেলেন সঙ্গাকারাকে।ভারতের বোলিং সম্পূর্ণ নিষ্প্রভ ছিল এদিন। অংশুল কাম্বোজের বল থেকে গতি বা টার্ন কিছুই পাওয়া যায়নি। বুমরাহ বা সিরাজও পিচ থেকে কোনও সাহায্য পাননি। একজন অভিষিক্ত বোলারের ওপর এতখানি ভরসা করাটাও প্রশ্ন তোলে। গিলের অধিনায়কত্ব নিয়েও উঠছে প্রশ্ন—লর্ডস টেস্টে যেমন উইকেটকিপারকে সামনে নিয়ে চাপ তৈরি করেছিলেন, তেমন কিছুই দেখা গেল না এখানে। সময়মতো বোলিং পরিবর্তনও হয়নি। দিনের বড় আক্ষেপ—ওয়াশিংটন সুন্দরকে দেরিতে আক্রমণে আনা। তিনি এসেই পোপকে (৭১) ফিরিয়ে দেন, এরপর হ্যারি ব্রুককেও বোকা বানান। তবে দিনের আসল নায়ক নিঃসন্দেহে জো রুট। তিনি যেমন দক্ষতায় খেলে গেলেন, তেমনই শান্ত, সংহত থেকেও ভারতীয় আক্রমণের সব সম্ভাবনা নিঃশেষ করে দেন। তাঁর ইনিংসে যেমন রেকর্ডের ঝলক, তেমনই ছিল পরিণত ব্যাটিংয়ের নিদর্শন। শেষ দিকে অবশ্য একটু খুঁড়িয়ে খেলছিলেন, আর সেই সুযোগেই স্টাম্পড করে দেন জাদেজা। ভারতের জন্য এখন সামনে একটাই রাস্তা—দ্বিতীয় ইনিংসে একজোট হয়ে লড়াই। কারণ এই টেস্টে হারলে সিরিজ হাতছাড়া হবে। আর ড্র করলেও সিরিজ জেতা সম্ভব নয়। ভাঙা পায়ে পন্থ যে সাহস দেখিয়েছেন প্রথম ইনিংসে, দ্বিতীয় ইনিংসে শুভমান, যশস্বী, গিল, কোহলিদেরও সেই মানসিকতা নিয়েই নামতে হবে।ইংল্যান্ডে বাজবলের ঝড়ে টিকে থাকতে হলে, এখনই সময় ভারতীয় ব্যাটিংয়ের প্রকৃত পরিচয় দেওয়ার। সময় এখন সত্যিকারের নেতৃত্ব দেখানোর।

