ফিনিক্স-ফিনিশ। শব্দদুটি নিয়ে অনেক খেলা হয়। টেস্ট ক্রিকেটকে কেন বেস্ট ক্রিকেট বলা হয়, তার আরও একটা জলজ্যান্ত উদাহরণ দেখা গেল। ঠিক ছয় বছর আগে একমাত্র ওয়ান ডে বিশ্বকাপ জিতেছিল ইংল্যান্ড। রুদ্ধশ্বাস সেই ম্যাচ টাই হয়েছিল। এরপর গড়ায় সুপার ওভারে। কিন্তু সুপার ওভারও টাই হয়। বাউন্ডারি নিয়মে চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল ইংল্যান্ড। লর্ডসের মাঠে ছয় বছর পর আরও একটা তেমনই জয় ইংল্যান্ডের। ফরম্যাট আলাদা। কিন্তু রোমাঞ্চ ঠিক একইরকম। ভারত হারলেও সেরাটা দিয়েছেন রবীন্দ্র জাডেজা। লাঞ্চ বিরতিতে যেখানে মনে হয়েছিল, ভারতের হার শুধু সময়ের অপেক্ষা, একটা গোটা সেশন খেলে দিয়েছিলেন বুমরাকে নিয়ে। ক্রমশ ক্লোজ হতে থাকে ম্যাচ। কিন্তু শেষটা যেন এভাবে হওয়ার ছিল নাখ। মাত্র ২২ রানে হার ভারতের।
লর্ডসে প্রথম ইনিংস টাই হয়েছিল। দু-দলই করেছিল ৩৮৭ রান। ফলে রেজাল্ট নির্ভর করছিল দ্বিতীয় ইনিংসের পারফরম্যান্সের উপরই। ইংল্যান্ডকে মাত্র ১৯২ রানেই অলআউট করে ভারত। আশা বেশি ছিল, আশঙ্কা কম। চতুর্থ দিনের শেষ দিকে হঠাৎই বাক্যটা উল্টে যায়। ৫৮ রান তুললেও ৪ উইকেট হারিয়ে ছিল ভারত। সঙ্গে পরিসংখ্য়ানটা মনে করিয়ে দিচ্ছিল, গত ১০ বছরে তিন বার ২০০-র কম টার্গেট তাড়ায় হেরেছে ভারত। চতুর্থ বারও তাই হল।
দিনের প্রথম সেশনেই সমস্ত আশায় জল। বিশেষ করে ঋষভ পন্থ, লোকেশ রাহুলের আউটে। রবীন্দ্র জাডেজা ও নীতীশ কুমার রেড্ডি জুটি গড়তেই ফের পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে। কিন্তু লাঞ্চ ব্রেকের ঠিক আগে নীতীশকে ফেরান বেন স্টোকস। লাঞ্চের পর ভারতের প্রয়োজন ছিল আরও ৮১ রান। ক্রিজে জাডেজা। সঙ্গী বুমরা-সিরাজ। এখান থেকে কেউই জয়ের আশা দেখেননি। কিন্তু বিরতির পর টিমের পরিস্থিতি ফের পরিবর্তন হয়।
জাডেজার ব্যাটিং দক্ষতা নিয়ে কারও সন্দেহ নেই। সঙ্গীর অভাবে ভুগছিলেন। তাই অনেকে সিঙ্গল এড়িয়ে যেতে হয়। উল্টোদিকে ব্লকাথনে ভরসা দিচ্ছিলেন জসপ্রীত বুমরা। ৫৩টি ডেলিভারি সামলে দেন। ৫৪-তে আউট। তারপরও ভারতের জয়ের আশা ছিল। মহম্মদ সিরাজকে নিয়ে দলকে খুব কাছে পৌঁছে দেন জাডেজা। সিরাজও দুর্দান্ত ডিফেন্স করছিলেন। কিন্তু শোয়েব বশিরের একটা ডেলিভারিতে চূড়ান্ত দুর্ভাগ্যের শিকার। ডিফেন্স করেছিলেন। বল ক্রিজে পড়ে গড়িয়ে যায় উইকেটের দিকে। উইকেটে লাগে। বেলও পড়ে। যা অনেক ক্ষেত্রেই দেখা যায়, বেল পড়ে না। কিন্তু সিরাজের ভাগ্য সঙ্গ দিল না। সব লড়াই জলে।

