ভুল করে কুকুর কামড়ানোর ইনজেকশন গৃহবধূকে, হরিশ্চন্দ্রপুর গ্রামীণ হাসপাতালে বিক্ষোভ

বাড়িতে কাজ করার সময় কাঁচিতে সামান্য হাত কেটে ছিল এক গৃহবধূর। সংক্রমণ যাতে না হয়, তার জন্য ভরসা করে নিকটবর্তী সরকারি হাসপাতালে প্রতিষেধক ইনজেকশন নিতে এসেছিলেন হরিশ্চন্দ্রপুরের গৃহবধূ সংগীতা গুপ্তা (৩০)। কিন্তু টক্সাইড ইনজেকশনের বদলে ওই গৃহবধূকে কুকুরে কামড়ানোর পরপর তিনটি প্রতিশেধকমূলক ইনজেকশন দিয়ে দেওয়া হয় বলে অভিযোগ। আর এই ঘটনাকে ঘিরে হরিশ্চন্দ্রপুর গ্রামীণ হাসপাতাল ডাক্তার, নার্সকে ঘেরাও করে বিক্ষোভ দেখান ওই গৃহবধূর পরিবার এবং গ্রামবাসীরা। এত বড় ভুল কি করে হল, তার কৈফিয়ত তলব করে স্বাস্থ্যকেন্দ্রের মধ্যে ঘেরাও করে রাখেন বিক্ষোভকারী গ্রামবাসীরা। বুধবার রাতে এই ঘটনার পর থেকেই ঘন ঘন বমি করছেন হরিশ্চন্দ্রপুর থানার কলমপাড়া এলাকার ওই গৃহবধূ সংগীতা গুপ্তা। বৃহস্পতিবার তাকে হরিশ্চন্দ্রপুর গ্রামীণ হাসপাতাল চিকিৎসা ব্যবস্থার মধ্যে রাখা হয়েছে। কিন্তু তার আগে সংশ্লিষ্ট স্বাস্থ্য কেন্দ্রের এমন ভুলকে কার্যত তুলোধোনা করে বিক্ষোভ দেখিয়েছেন গ্রামবাসীরা। পরে পুলিশ ও স্থানীয় স্বাস্থ্য দপ্তরের হস্তক্ষেপে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, সংগীতা গুপ্তা নামে ওই গৃহবধূ একটি সেলাইয়ের দোকান চালান। বুধবার রাতে সেলাই করতে গিয়ে কাঁচি দিয়ে তার ডান হাতের তালু কেটে যায়। তিনি দেরি না করে স্থানীয় হরিশ্চন্দ্রপুর গ্রামীণ হাসপাতালে যান টক্সাইড ইনজেকশন নিতে। সেই সময় হাসপাতালে কুকুর বিড়াল, কামড়ানর ইনজেকশন তাকে দেওয়া হয় বলে অভিযোগ।
ওই গৃহবধূ সংগীতা গুপ্তা জানিয়েছেন, তিনি হাত কাটার প্রতিষেধক টিকা নিতে এসেছিলেন। সেই সময় হরিশ্চন্দ্রপুর গ্রামীণ হাসপাতালে কর্তব্যরত এক নার্স সংগীতা দেবীর হাতে পরপর দুটি ইনজেকশন দিয়ে দেয়। এরপর আবার তার হাতে তৃতীয় ইনজেকশন দিতে আসলে সংগীতা দেবীর সন্দেহ হয়। তিনি ইনজেকশন দিতে বাধা দেন। তার সঙ্গে সঙ্গে কর্তব্যরত নার্সকে জিজ্ঞেস করেন তাকে এতগুলি ইনজেকশন দেওয়া হচ্ছে কেন? তখনই তিনি জানতে পারেন তাকে ভুলবশত কুকুর কামড়ানোর অ্যান্টি র‌্যাবিস ইনজেকশন দিয়ে দেওয়া হয়েছে। ওই গৃহবধূ সংগীতা গুপ্তা আরও বলেন, এরপরই হরিশ্চন্দ্রপুর ১ বিএমএইচ ডা: অমল কৃষ্ণ মণ্ডলের কাছে যান। ডাক্তারবাবু তাকে আশ্বস্ত করে বলেন ভয় পাওয়ার কিছু নেই। ভুল করে কুকুর কামড়ালে ইনজেকশন দিয়ে দেওয়া হয়েছে। তাকে শীঘ্রই টিটেনাস নেওয়ার জন্য হাসপাতালে আবার পাঠিয়ে দেন। তার সঙ্গে জানিয়ে দেওয়া হয় কুকুর কামড়ানোর ভ্যাকসিনের বাকি ডোজ পরবর্তী দিনে এসে নিয়ে নিতে। তারপরই ওই গৃহবধূর মনে আশঙ্কা তৈরি হয় এবং বাড়িতে গিয়ে তিনি অসুস্থ হয়ে পরেন।
এদিকে হরিশ্চন্দ্রপুর গ্রামীন হাসপাতালে এই ঘটনায় ক্ষুব্ধ এলাকার বাসিন্দারা। স্থানীয় বাসিন্দারা জানিয়েছেন, এভাবে রোগীদের সঙ্গে ছিনিমিনি খেলা হচ্ছে। যেটা কখনোই মেনে নেওয়া যায় না। আমাদের পাড়ার গৃহবধূ সংগীতাকে ভুল ইনজেকশন দিয়ে দেওয়া হল। এখন যদি তার কিছু হয়ে যায় তাহলে এর দায় কে নেবে? যদিও এ প্রসঙ্গে মুখে কুলুপ এঁটেছেন হরিশ্চন্দ্রপুর গ্রামীণ হাসপাতালের স্বাস্থ্য আধিকারিক চিকিৎসক সুব্রত চৌধুরী। তিনি কোনো মন্তব্য করতে চাননি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

18 − seven =