বুবুন মুখোপাধ্যায়, আসানসোল
দীর্ঘ টালবাহানার পর অবশেষে সুপ্রিম কোর্ট দেহ ব্যবসাকে স্বীকৃতি দিল। সুপ্রিম কোর্টের এই নির্দেশের পর স্বভাবতই ভারতবর্ষের বিভিন্ন প্রান্তের সঙ্গে সঙ্গে পশ্চিম বর্ধমান জেলার নিষিদ্ধপল্লি লচ্ছিপুর এলাকায় একদিকে যেমন খুশির হাওয়া গেল তেমনই অপরদিকে সিঁদুরে মেঘ দেখছেন ওই এলাকার স্থানীয়রা। কুলটির নিয়ামতপুর এলাকার লচ্ছিপুর নিষিদ্ধপল্লিতে প্রায় হাজারখানেক মহিলা দেহ ব্যবসা করেন। এই অঞ্চলে গ্রাহকদের প্রবেশ করার জন্য দিতে হয় পুলিশকে উপঢৌকন বলে অভিযোগ। এই নিষিদ্ধপল্লিতে শুধু দেহ ব্যবসা নয়, অভিযোগ এসেছে মাদক, গাঁজা এবং জুয়ার আসরের রমরমা ব্যবসা গজিয়ে উঠেছে এলাকায়। কয়েক মাস আগে ওই এলাকায় নাবালিকাদের নিয়ে জোর করে দেহ ব্যবসা করানোর অভিযোগে বেশ কয়েকজনকে গ্রেপ্তার করা হয়। উদ্ধার হয় বহু নাবালিকা। এই নিষিদ্ধপল্লিতে স্বাস্থ্য সচেতনতা ও স্বাভাবিক জীবনযাপনের জন্য ১৯৯৮ সালে তৈরি হয় স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা ‘দুর্বার’। বর্তমানে এই দুর্বার সমিতি প্রতিনিয়ত যৌনকর্মীদের স্বাস্থ্য সম্পর্কে সচেতনতামূলক বিভিন্ন কর্মসূচি গ্রহণ করেছে। বুধবার, সমন্বয় সমিতির কো-অর্ডিনেটর রবি ঘোষ বলেন, তারা সুপ্রিম কোর্টের এই নির্দেশে উচ্ছ্বাসিত। কিন্তু, তাদের আফসোস, এইচআইভি প্রতিরোধে রাজ্য সরকার কোনও সদর্থক ভূমিকা গ্রহণ করছে না। রবিবাবু অভিযোগ করে বলেন, বর্তমানে এইচআইভি প্রতিরোধ করার জন্য সরকার কোনও কর্মসূচি নিচ্ছে না। তিনি বলেন, বর্তমানে লচ্ছিপুর এলাকায় ৭৩২ এবং চককা এলাকায় ৫৪৫ জন যৌনকর্মী আছেন। এদের মধ্যে অনেকের এইচআইভি পজিটিভ থাকা সত্ত্বেও সরকার তাদের জন্য কোনও উদ্যগ নিচ্ছেন না। যৌন ব্যবসাকে সুপ্রিম কোর্টের স্বীকৃতি দেওয়াকে স্বাগত জানানোর পাশাপাশি যৌনকর্মীদের স্বাস্থ্য সম্পর্কে অবগত করার জন্য রাজ্য সরকারকে আবেদন জানান রবিবাবু।