গীতা জয়ন্তী বক্তৃতা প্রতিযোগিতা ২০২৪

কলকাতা : পরম পূজনীয় পাণ্ডুরঙ্গ শাস্ত্রী আঠাবলে, “দাদাজি”, প্রেরিত স্বাধ্যায় পরিবার মঙ্গলবার, ১৭ই ডিসেম্বর, গীতা জয়ন্তী বক্তৃতা প্রতিযোগিতার পশ্চিমবঙ্গের রাজ্য স্তরের ফাইনাল আনন্দ ও উদ্দীপনার সাথে উদযাপন করে। গত ৪৭ বছর ধরে চলে আসা এই প্রতিযোগিতা, দাদাজি ১৯৭৮ সালে শুরু করেছিলেন। যুবা যুবতীদের গীতার সাথে যুক্ত করা এবং গীতার বিচার তাদের জীবনে স্থির করার উদ্দেশ্যে। সাধারণত সমাজে মনে করা হয় যে “গীতা” কেবল বৃদ্ধ বয়সে পড়ার গ্রন্থ, কিন্তু পরম পূজনীয় দাদাজি বলেছেন, “শ্রীমদ্ভগবদ্‌গীতা ধর্মগ্রন্থ নয়, এটি জীবনগ্রন্থ”; “Geeta is not the bible of Hinduism, but it is the bible of Humanity।”

এই বছর “বিভ্রান্তি দূর করে গীতা, সফল জীবন বানায় গীতা” (উলঝনে সুলঝায়ে গীতা, সফল জীবন বানায়ে গীতা) বিষয়টি নিয়ে প্রায় ৩২টিরও বেশি দেশে এই প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়। এই প্রতিযোগিতার মাধ্যমে ১৭-১৮ লক্ষেরও বেশি যুবা-যুবতীর সাথে সংযোগ স্থাপিত হয় এবং ৩ লক্ষেরও বেশি যুবা-যুবতী গীতা জয়ন্তী বক্তৃতা প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ ক’রে অনন্য রূপে মা গীতার বাক পূজন করে।

পশ্চিমবঙ্গে, গত এক মাসে ৬টি জেলায় এই প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়, যার রাজ্য স্তরের চূড়ান্ত পর্ব অনুষ্ঠিত হয় কলকাতার মৌলালি রামলীলা পার্কে। ওড়িশা, ঝাড়খণ্ড এবং পশ্চিমবঙ্গের ৬টি জেলা (কলকাতা, হাওড়া, মেদিনীপুর, দক্ষিণ ২৪ পরগণা, হুগলি, এবং উত্তর ২৪ পরগণা) থেকে স্বাধ্যায় পরিবারের ৫০০০-এরও বেশি ভাই- বোন এই অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন। প্রায় ৩৫০ যুবা-যুবতী নৃত্যের মাধ্যমে তাদের ভাব-পূজন করে।

স্বাধ্যায় পরিবারের পরিচালিকা শক্তি শ্রীমতি জয়শ্রী তলবলকার ,পূজনীয় দিদিজি, স্বয়ং সবার সাথে দেখা করতে আসেন এবং আশীর্বচনের মাধ্যমে সমস্ত প্রতিযোগী, যুবা-যুবতী তথা স্বাধ্যায় পরিবারের সকলকে উৎসাহ দেন। তিনি তার আশীর্বচনে বলেন, ভারত এমন একটি দেশ যেখানে “বিচার, পুস্তক এবং তত্ত্বজ্ঞান”-কে উদযাপন হয়। তাই আমরা গীতা জয়ন্তী উৎসব পালন করি।

তিনি প্রতিযোগিতার বিষয় সম্বন্ধে বলতে গিয়ে বলেন যে, যা কিছুর সমাধান নেই তাই বিভ্রান্তি বা উলঝন এবং এই বিভ্রান্তির মূল কারণ দ্বন্দ্ব এবং অলসতা। তিনি আরও বলেন, বর্তমান সমাজ বিনামূল্যে সব কিছু পাওয়ার বৃত্তিকে পোষণ করে, অথচ গীতা শেখায় যে, বিনামূল্যে কিছুই পাওয়া যায় না এবং বিনামূল্যে কিছু গ্রহণ করাও উচিত নয়। বর্তমান সমাজের এটাই ধারণা যে যার বৈভব বেশি, সে-ই সফল। কিন্তু পূজনীয় দিদিজি বলেন, যা অর্জন করা যায়, তা হলো বৈভব; আর যা দেওয়া যায় সেটাই সফলতা।

তিনি আরও বলেন, গীতা শুধুমাত্র একটি গাইড নয়, এটি একটি টনিক; এটি ওষুধ নয়, এটি অন্ন। গীতা শক্তি প্রদান করে। গীতার বিচারকে জীবনে স্থির করার জন্য, নিজেকে পরিবর্তন করার জন্য অন্যদের সাথে সম্বন্ধ নির্মাণ করতে হবে। গীতা “I Can Do” (আমি পারি, আমি কিছু হতে পারি, আমি বদলাতে পারি)-এর মনোবৃত্তি নির্মাণ করে।

উপস্থিত সমগ্র পূর্বাঞ্চল পরিবার বক্তাদের অভিবাদন জানায়। অনুষ্ঠানের শেষে পূজনীয় দিদিজি বিজয়ীদের অভিনন্দন জানান এবং তাদের এক অনন্য দৃষ্টিভঙ্গি দিয়ে অনুপ্রাণিত করেন, যেন তারা অন্যদেরও প্রস্তুত করতে পারে। পূজনীয় দিদিজির উপস্থিতি এবং তাঁর সাথে দেখা করতে পেরে সমগ্র পরিবার অত্যন্ত আনন্দিত হয়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

two × 3 =