যে মুখাগ্নি করবে, সেই হবে সম্পত্তির মালিক। মৃত্যুর আগে এমনটাই নাকি জানিয়েছিলেন পুরাতন মালদা থানার সাহাপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের ছাতিয়ান মোড় এলাকার মণ্ডল পরিবারের ৮০ বছর বয়সি এক বৃদ্ধা। এরপর বুধবার রাতে মালদা মেডিক্যাল কলেজে চিকিৎসারত অবস্থায় মৃত্যু হয় ওই বৃদ্ধার। তারপরে শুরু হয় যত কাণ্ড। গ্রামবাসীদের কথামতো মৃতদেহ নিজেদের দখলে রাখা নিয়ে শুরু হয় ননদ এবং বউদির মধ্যে চুলোচুলি। আর সেই বিবাদ গড়ায় রীতিমতো মারামারিতে। বুধবার রাতে এই ঘটনায় তুমুল শোরগোল পড়ে যায় মালদা মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতাল চত্বরে। ওই বৃদ্ধার মৃতদেহ কে শ্মশানে নিয়ে যাবে? আর মুখাগ্নি বা কে করবে? তা নিয়ে শুরু হয় চরম বিবাদ। এরপরই ননদ ও বউদির দুই গোষ্ঠীর পরিবারের লোকেদের মধ্যে মেডিক্যাল কলেজের সামনে প্রকাশ্যে শুরু হয়ে যায় হাতাহাতি। কাপড় ধরে টানাটানি করার পাশাপাশি মাটিতে লুটোপুটি করে মারামারি হয় বলে অভিযোগ। বিষয়টি জানতে পেরে হতচকিত হয়ে পড়েন মেডিক্যাল কলেজ সংলগ্ন পুলিশ ক্যাম্পের কর্মীরা। তাদের হস্তক্ষেপে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে। দুই পক্ষকেই দীর্ঘক্ষণ ক্যাম্পে বসিয়ে রেখে বিবাদ মেটানোর চেষ্টা চালায় পুলিশ। পরে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে পাড়া-প্রতিবেশীরা পুরাতন মালদা থানা এলাকায় এক বৃদ্ধের মৃতদেহ নিয়ে যায় তার বাড়িতে। পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, মৃত বৃদ্ধার নাম মালতি মণ্ডল (৮০)। তার বাড়ি পুরাতন মালদা থানার সাহাপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের ছাতিয়ান মোড় এলাকায়। তিনি দীর্ঘদিন ধরে মেয়ের বাড়ি গাজোলের ছিটকামহলে ছিলেন। কিছুদিন আগে সেখানে অসুস্থ হয়ে পড়লে তাঁকে মালদা মেডিক্যালে ভর্তি করা হয়। বুধবার রাতে তাঁর মৃত্যু হয়। এদিকে মৃত্যুর পরই এদিন রাতে মেডিক্যাল কলেজের সামনে দুই পক্ষের মধ্যে দেহ দাহ করা নিয়ে বিবাদ বাধে। মৃত বৃদ্ধার মেয়ে জানকি মণ্ডল বলেন, এতদিন ধরে মাকে আমি বাড়িতে রাখলাম। বউদি- দাদা একবারের জন্য মায়ের খোঁজ খবর নেয়নি। এখন মায়ের সম্পত্তি হাতিয়ে নেওয়ার জন্য ওরা মৃতদেহ নিতে এসেছে। প্রতিবাদ করাতে ওরা আমাদের মারধর করেছে। মৃত বৃদ্ধার পুত্রবধূ বেবি মণ্ডলের অভিযোগ, শাশুড়ি মায়ের সম্পত্তি হাতিয়ে নেওয়ার জন্য অনেকদিন ধরে চেষ্টা চালাচ্ছিল ননদ জানকি মণ্ডল। ওরা শাশুড়িকে নিজেদের বাড়িতে জোর করে নিয়ে গিয়েছিল। শাশুড়িকে অসুস্থ করে মেডিক্যাল কলেজে ভর্তি করেছে। তার মৃত্যুর পিছনে ননদ ও তাদের পরিবারের উদাসীনতার অভিযোগ তুলেছেন। যদিও এই ঘটনার ব্যাপারে কোনও লিখিত অভিযোগ দায়ের হয়নি। সুতরাং সেই সম্পর্কে পুরাতন মালদা থানার পুলিশের কাছ থেকে কোনো প্রতিক্রিয়া মেলেনি।