ঘরে ফিরেও ইস্টবেঙ্গলের হারের হ্যাটট্রিক

মানোলো মার্কোয়েজ এবং কার্লেস কুয়াদ্রাতের মস্তিষ্কের লড়াই। এর আগে তিন বারের সাক্ষাতে মানোলোকে হারাতে পারেননি কার্লেস। দুটি ম্যাচে হার, একটি ড্র। তালিকায় যোগ হল আরও একটা হার। ম্যাচ শেষ হতেই গ্যালারি থেকে কার্লেস কুয়াদ্রাতকে গো ব্যাক স্লোগান সমর্থকদের। গত মরসুমে ইস্টবেঙ্গলের স্বপ্নের কারিগর হয়ে এসেছিলেন কার্লেস কুয়াদ্রাত। ডুরান্ড কাপে রানার্স, কলিঙ্গ সুপার কাপে জয় এবং আইএসএলে তুলনামূলক সাফল্য। সময়ের সঙ্গে উন্নতি হওয়াই কাম্য। ইস্টবেঙ্গলের ক্ষেত্রে পরিস্থিতি উল্টো। কার্লেস রয়েছেন, তাঁর পরিকল্পনায় যেন মরচে ধরেছে। এ মরসুমে ডুরান্ড কাপে হতাশা, আইএসএল মরসুমও শুরু হারের হ্যাটট্রিকে। দুটো অ্যাওয়ে ম্যাচের পর এ বার ঘরের মাঠে মানোলোর এফসি গোয়ার কাছে ২-৩ ব্যবধানে হার।

প্রাক্তনীকেই নিয়েই মাতল ইস্টবেঙ্গল। ম্যাচের নায়ক এফসি গোয়ার বোরহা হেরেরা। তাঁর নামে জয়ধ্বনি দিলেন ইস্টবেঙ্গল সমর্থকরা। আর কার্লেসকে গো ব্যাক! তার যথেষ্ট কারণও রয়েছে। গত বছর সুপার কাপ জয়ের নেপথ্যে বোরহার বিরাট অবদান ছিল। সেই বোরহাকেই সুপার কাপ জেতার পর ছেড়ে দেয় ইস্টবেঙ্গল। সেই বোরহার কাছেই হার।

বেঙ্গালুরু এফসির বিরুদ্ধে হার দিয়ে এ বারের আইসএল শুরু হয়েছিল। গত ম্যাচে কোচিতে কেরালা ব্লাস্টার্সের কাছে হার। অনেকটা সময় পেয়েও দলের ডিফেন্স গুছিয়ে উঠতে পারেননি। এফসি গোয়া ম্যাচের আগে ইস্টবেঙ্গল কোচ জানিয়েছিলেন, প্রথম দুটো অ্যাওয়ে ম্যাচ হওয়ায় আনলাকি মনে হচ্ছিল নিজেকে। ঘরে ফিরে সমর্থকদের সামনে ভালো কিছুর প্রত্যাশা। কিন্তু তা আর হল না।

প্রথম একাদশে এ দিন নানা বদল করেন কার্লেস। ম্যাচের আনলাকি ১৩ মিনিটে ইস্টবেঙ্গল ডিফেন্সের ভুল বোঝাবুঝির সুযোগে গোল বোরহা হেরেরার। প্রথম শট আটকে দিয়েছিলেন গোলকিপার দেবজিৎ মজুমদার। ইস্টবেঙ্গল তিন কাঠির নিচে তাঁর প্রত্যাবর্তনের ম্যাচ। যদিও ক্লিনশিট হল না। দেবজিৎ প্রাথমিক শট বাঁচিয়ে দিলেও ডিফেন্ডাররা ছড়িয়ে ছিটিয়ে ছিলেন। আনমার্কড বোরহা সহজ সুযোগ পান এবং তা কাজেও লাগান।

সবচেয়ে হতাশার, দলের সবচেয়ে নির্ভরযোগ্য ডিফেন্ডার হিজাজি মাহেরের থেকে বল নিয়ে নাটমেগ করে মাইনাস বরিসের। আবারও আনমার্কড বোরহার কাছে বল। রেজাল্টও একই। ১৩-র পর ২১ মিনিট। বোরহার জোড়া গোলে ২-০ লিড নেয় এফসি গোয়া। প্রথমার্ধেই এক গোল শোধ করে ইস্টবেঙ্গল। ২৭ মিনিটে সৌভিকের ক্রস ধরেছিলেন মাদিহ তালাল। বল কার্যত ক্লিয়ার করে দিয়েছিলেন। কিন্ত শেষ মুহূর্তে তালালের বুটে স্টাড মেরে ভুল করেন এফসি গোয়া ডিফেন্ডার। পেনাল্টি পায় ইস্টবেঙ্গল। ২৯ মিনিটে তালালের স্পট কিকে পরাস্থ এফসি গোয়া গোলরক্ষক কাট্টিমানি। পেনাল্টি গোলে সামান্য হলেও স্বস্তি ইস্টবেঙ্গল শিবিরে।

বিরতির পরই নাওরেম মহেশের জায়গায় পিভি বিষ্ণুকে নামান কার্লেস। কিন্তু ডিফেন্স তো সেই ছন্নছাড়াই! ৭১ মিনিটে অনবদ্য শটে গোল এবং হ্যাটট্রিক পূর্ণ করেন বোরহা। অস্বস্তি বাড়ছিল। কার্ল ম্যাকহিউ জোড়া হলুদ কার্ড দেখে মাঠ ছাড়তে কিছুটা যেন স্বস্তি ইস্টবেঙ্গলে। ১০ জনের এফসি গোয়ার বিরুদ্ধে অন্তত যদি এক পয়েন্টও আনা যায়! আনোয়ারের লম্বা পাস ধরে দুর্দান্ত গোল ডেভিড লালহানসাঙ্গার। আইএসএলে তাঁর প্রথম গোল। তাতে স্কোরলাইন সামান্য বদলালেও ম্যাচের ফল বদলাল না।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

15 − five =