হ্যাটট্রিকের স্বপ্ন কি পূরণ হবে? গত বছরটা চোট আঘাতে কেটে গিয়েছে। একটাই মাত্র টুর্নামেন্টের ফাইনালে উঠতে পেরেছিলেন তিনি। মনে হয়েছিল, অলিম্পিকেও খোঁড়াতে হবে তাঁকে। আপাতত সেই সম্ভাবনা নেই। উল্টে বলতে হচ্ছে, ভারতের মেয়ের পদকের গন্ধ পেতে শুরু করে দিয়েছেন। গ্রুপের দ্বিতীয় ম্যাচ জিতে স্ট্রেট গেমে প্রি-কোয়ার্টারে উঠে পড়লেন পিভি সিন্ধু। একা কি সিন্ধু, লক্ষ্যভেদের পথে এগিয়ে চলেছেন লক্ষ্য সেনও। জোনাথন ক্রিস্টিকে হারিয়ে প্রি-কোয়ার্টারে উঠে পড়লেন লক্ষ্যও।
ফর্ম, ফিটনেস, বিপক্ষকে পড়তে পারা, পরিস্থিতি অনুযায়ী স্ট্র্যাটেজি বদল, নিজের উপর ভরসা রাখা; অনেক কিছু নির্ভর করে পদকের কাছাকাছি পৌঁছনোর জন্য। পিভি সিন্ধু অভিজ্ঞ শাটলার। তিনি জানেন, বড় টুর্নামেন্টে সেরাটা দিতে হলে এ সবের বাইরে দরকার পড়ে আরও একটা জিনিস, স্বপ্নপূরণের তাগিদ। রিও, টোকিওর মতো প্যারিসেও সিন্ধুর মধ্যে আবার দেখা তাই-ই। ক্রিস্টিন কুব্বাকে দাঁড়াতেই দিলেন না সিন্ধু। ২১-৫, ২১-১০এ জিতলেন। এই ফলাফলই প্রমাণ করে দিল, সিন্ধু কতটা আগ্রাসী অলিম্পিকে পদকের হ্যাটট্রিক করার জন্য, ইতিহাসে পাকাপাকি থেকে যাওয়ার জন্য।
লক্ষ্যর লড়াই অনেক কঠিন ছিল। বিশ্বের তিন নম্বর শাটলার জোনাথন। লক্ষ্যর বিরুদ্ধে এর আগে জিতেওছেন। কিন্তু প্যারিসের মঞ্চে লক্ষ্যকে টলাতে পারলেন না। প্রথম গেমটা লক্ষ্য জিতেছিলেন ২১-১৮। এটুকু বললে ম্যাচের গভীরে ঢোকা হবে না। একটা সময় ২-৮ পিছিয়ে ছিলেন লক্ষ্য। সেখান থেকে নিজের নার্ভ ধরে রাখেন। টানা লড়াই চালিয়ে যান তাঁর থেকে ব়্যাঙ্কিংয়ে অনেক এগিয়ে থাকা শাটলারের বিরুদ্ধে। সুযোগসন্ধানী থেকেছেন। স্ম্যাশের বিরুদ্ধে ডিফেন্সিভ খেলেছেন যেমন, পাল্টা লড়াইও করেছেন। প্রথম গেমটার পর মেন্টর প্রকাশ পাড়ুকোন বলেই দিয়েছিলেন, ‘দিনটা তোমারই, নিজের ফোকাস হারিও না। স্ম্যাশে যাও। ফোরহ্যান্ডে বেশি খেলাও জোনাথনকে।’ তাই-ই করলেন লক্ষ্য।
দ্বিতীয় গেমটা সহজেই জিতলেন লক্ষ্য। আসলে লক্ষ্যর চমৎকার ছকে বারবার ফেঁসেছেন ইন্দোনেশিয়ার প্লেয়ার। ২১-১২তে জিতলেন লক্ষ্য। গ্রুপ শীর্ষে থেকে শেষ করলেন। সিঙ্গলসে দুই তারকার চমৎকার পারফরম্যান্স কিন্তু ভারতকে ব্যাডমিন্টন থেকেও পদকের স্বপ্ন দেখাতে শুরু করেছে। যদিও লড়াই অনেক বাকি। সিন্ধু আর লক্ষ্য ভালোই জানেন।