বাঁকুড়া : উবের বুক করে মাঝপথে চালককে মেরেধরে ছিনতাই হওয়া গাড়ি সহ ৪জন দুষ্কৃতীকে গ্রেফতার করেছে বাঁকুড়া পুলিশ। কলকাতার গিরিশ পার্ক থেকে একটি সুইফট ডিজায়ার গাড়ি বুক করেছিল ৩ দুষ্কৃতী। তারপর বাঁকুড়ার শালতোড়া এলাকায় চালককে মারধর করে গাড়ি নিয়ে বিহারে চলে যায় দুষ্কৃতীরা। বাঁকুড়া পুলিশের কাছে অভিযোগ দায়ের করেছিলেন ওই চালক। গত ৩ মাস ধরে তদন্ত চালিয়ে ৪ দুষ্কৃতীকে গ্রেফতার করে খোয়া যাওয়া গাড়িটি উদ্ধার করেছে পুলিশ।
বাঁকুড়ার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সিদ্ধার্থ দর্জি শনিবার শালতোড়া থানায় সাংবাদিক সম্মেলনে জানান , গত ১৭ মার্চ ঝালদা যাওয়ার নাম করে দুষ্কৃতীরা কলকাতার গিরিশ পার্ক থেকে ক্যাব সংস্থার গাড়ি বুক করে । সেইমত ১৮ মার্চ গাড়িতে উঠেছিল তিন দুষ্কৃতি। রাত ১২ টা নাগাদ গাড়িটি শালতোড়া এলাকায় ঢোকে । তারপর নিখুঁত পরিকল্পনা মত গাড়ির চালককে মূল সড়ক পথ ছেড়ে বিহারীনাথ পাহাড় যাওয়ার ফাঁকা রাস্তায় নিয়ে যায়। সেখানে চালককে মারধর করে আগ্নেয়াস্ত্র দেখিয়ে ২টি মোবাইল সহ টাকা পয়সা যা ছিল সর্বস্ব লুঠ করে হাত,পা বেঁধে ফেলে রেখে গাড়ি নিয়ে চম্পট দেয় । গাড়ি চালক সম্রাট মিশ্র পরদিন স্থানীয় মানুষের সাহায্যে শালতোড়া থানায় অভিযোগ করেন। এরপর তদন্তে নামে পুলিশ। তদন্তে নেমে পুলিশ জানতে পারে বিহারের পূর্ব চম্পারণ জেলায় সক্রিয় রয়েছে একটি আন্ত:রাজ্য গাড়ি পাচার চক্র।
জেলা পুলিশ বিভিন্ন সূত্র কাজে লাগিয়ে বিহারের গিরিডি থেকে সঞ্জিত কুমার রবিদাস নামে একজন দুষ্কৃতীকে গ্রেফতার করে।সে গাড়ি ছিনতাই কান্ডের ৩ জন যাত্রীর অন্যতম ।সঞ্জিতকে জিজ্ঞাসাবাদ করে পুলিশ জানতে পারে ক্যব বুকিং –এর জন্য যে মোবাইল নম্বর ব্যবহার করা হয়েছিল সেই নম্বরের সিম কার্ড সরবরাহ করেছিল বিহারের বাঁকা জেলার বাসিন্দা বিকাশ কুমার ও বিজয় কুমার। কয়েক দিন আগেই বিহার পুলিশের সাহায্য নিয়ে বিকাশ ও বিজয়কে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয় পুলিশ। তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করে খোয়া যাওয়া গাড়ি কোথায় কাকে বিক্রি করা হয়েছে তার সন্ধান মেলে। তারপর শুক্রবার বিহারের পুর্ব চম্পারণ থেকে বিকাশ সাহানি নামের এক গাড়ি চালককে গ্রেফতার করে নিয়ে আসে শালতোড়া থানার পুলিশ। এই বিকাশ সাহানি চুরি যাওয়া সুইফট ডিজায়ার গাড়িটি কিনেছিল দুষ্কৃতীদের কাছ থেকে বলে জানায় পুলিশ । ধৃত বিকাশকে বাঁকুড়া জেলা আদালতে পেশ করছে পুলিশ। অতিরিক্ত পুলিশ সুপার বলেন এই ঘটনায় এখনও পর্যন্ত গাড়ি চুরি ও চোরাচালানের সঙ্গে যুক্ত ৪ জনকে গ্রেফতার করা হলেও এই ঘটনার কিং পিন সহ চক্রের অন্যান্যদের খোঁজ চলছে।