ন্যাশনাল মেডিক্যাল কলেজে পুলিশি অতিসক্রিয়তার ঘটনায় স্বাস্থ্য দফতরের তরফে ন্যাশনালের অধ্যক্ষ ও উপাধ্যক্ষ তথা সুপারকে বুধবার স্বাস্থ্যভবনে ডাকা হয়েছে বলে সূত্রে খবর। রবিবার পরিস্থিতি খতিয়ে না-দেখেই আচমকা রোগী-পরিজনের উপর লাঠিচার্জের অভিযোগ ওঠে পুলিশের বিরুদ্ধে। সেই ঘটনার জল গড়ায় নবান্নে। প্রশাসনিক সূত্রের খবর, নবান্ন থেকে এ ব্যাপারে স্বাস্থ্যভবনের কাছে রিপোর্ট তলব করা হয়েছে। ন্যাশনাল কর্তৃপক্ষ মঙ্গলবারই ডিনের নেতৃত্বে একটি ৫ সদস্যের অনুসন্ধান কমিটি তৈরি করে রোগী-পরিজনের অভিযোগের ভিত্তিতে।
রবিবারের পুলিশের লাঠিচার্জের ঘটনার পর সোমবার প্রহৃত রোগী-পরিজন লিখিত অভিযোগ জানিয়েছিলেন কর্তৃপক্ষের কাছে। এদিকে হাসপাতালের চিকিৎসক ও রোগীর পরিজন উভয়েই দু’পক্ষের বিরুদ্ধে পুলিশে অভিযোগ দায়ের করে। লালবাজার সূত্রে খবর, লাঠি চালানোর ঘটনায় বেনিয়াপুকুর থানার সিভিক ভলান্টিয়ার-সহ যে পুলিশকর্মীদের চিহ্নিত করা হয়েছিল, তাঁদের বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা নিতে চলেছেন পুলিশকর্তারা। আপাতত তাঁদের ডিউটি থেকে বিরত রাখা হয়েছে।
পুলিশকর্তারা জানাচ্ছেন, বচসার সময়ে চিকিৎসক-নার্সরা ডেকেছিলেন বলেই পুলিশকর্মীরা গিয়েছিলেন। তবে এই ধরনের ঘটনা সামনে থেকে সিভিক ভলান্টিয়ারের সামাল দিতে যাওয়ার কথা নয়। স্বাস্থ্য দফতর সূত্রের খবর, ন্যাশনাল কর্তৃপক্ষের থেকে স্বাস্থ্যভবন জানতে চেয়েছে, সংশ্লিষ্ট রোগীর কী চিকিৎসা হয়েছিল, তাঁর পরিজন কী অভিযোগ জানিয়েছিলেন হাসপাতালকে, চিকিৎসা সংক্রান্ত অভিযোগের প্রেক্ষিতে কী পদক্ষেপ করেছেন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ইত্যাদি।
প্রসঙ্গত, গত রবিবার বুকে ব্যথা নিয়ে শাহনাজ় বেগম নামে পার্ক সার্কাস এলাকার এক রোগিণীকে আনা হয় ন্যাশানালের জরুরি বিভাগে। সেখানে ইমার্জেন্সি অবজার্ভেশন ওয়ার্ডে তাঁকে একটি ইঞ্জেকশন দেওয়া হয়। তার পরেই হাত ফুলে যায় রোগিণীর। এ নিয়ে প্রশ্ন তোলে রোগীর পরিবার। কর্তব্যরত নার্সের কাছে গেলে ওই নার্স দুর্ব্যবহার করেন বলে অভিযোগ।
এর পরেই দু’পক্ষের বচসা শুরু হয়। তখন ডাক্তার-নার্সরা পুলিশ ডাকলে, পুলিশ এসেই ওই পরিবারকে ধাক্কা মারে এবং লাঠিচার্জ করতে করতে জরুরি বিভাগ থেকে বের করে দেয়। অভিযোগ, মার খান রোগিণী নিজে এবং তাঁর মেয়েও। সেই লাঠি পেটানোর ভিডিয়ো সোমবার ভাইরাল হওয়ার পরেই পুলিশি অতিসক্রিয়তা নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করে।