ডাসেলডর্ফে বেলজিয়ামকে ১-০ গোলে হারিয়ে কোয়ার্টার ফাইনালের ছাড়পত্র সংগ্রহ করে নিল ফ্রান্স। দুই দলের মধ্যে পার্থক্য গড়ে দেয় জ্যান ভারতনঘেনের আত্মঘাতী গোল। আগের ইউরোতে শেষ ষোলো থেকে বিদায় নিতে হয়েছিল। এবার সেই গণ্ডি পার করলেন এমবাপেরা। তবে কোয়ার্টার ফাইনালে গেলেও দলের পারফরম্যান্সে খুশি হতে পারবেন না দিদিয়ের দেশঁ। টুর্নামেন্টের অন্যতম ফেভারিট হিসেবে শুরু করলেও, এখনও পর্যন্ত নজর কাড়তে পারেনি ফ্রান্স। স্টাইকিং ফোর্সের ব্যর্থতা প্রত্যেক ম্যাচেই প্রকট। বেলজিয়ামের পাঁচ শটের তুলনায় এদিন গোল লক্ষ্য করে ১৯টি শট নেয় ফ্রান্স। কিন্তু তারমধ্যে মাত্র দুটো শট টার্গেটে। এটাই চলতি ইউরোয় বিশ্বকাপের রানার্সদের পারফরম্যান্সের নির্যাস। প্রথম ম্যাচ থেকে একই গল্প। যা এদিনও অব্যাহত। ম্যাচের শেষলগ্নে বাঁচিয়ে দেন ব়্যান্ডাল কোলো মুয়ানি। দ্বিতীয়ার্ধে পরিবর্ত ফুটবলার হিসেবে নেমেই নজর কাড়েন। জয়সূচক গোলের নেপথ্যেও ফরাসি স্ট্রাইকার। তাঁর কোনাকুনি শট ভারতনঘেনের পায়ে লেগে গোলে ঢুকে যায়। আত্মঘাতী গোলই দুই দলের মধ্যে পার্থক্য গড়ে দেয়। বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে মরক্কোর বিরুদ্ধেও গোল করেছিলেন কোলো মুয়ানি। দিদিয়ের দেশঁর দল প্রতি ম্যাচেই হতাশ করছে। ফ্রান্সের কাছে হেরে ইউরো থেকে বিদায় নিল বেলজিয়াম।
চলতি ইউরোতে সেরা ছন্দে নেই ফ্রান্স। গ্রুপের দ্বিতীয় দল হিসেবে শেষ ষোলোয় পৌঁছেছে দিদিয়ের দেশঁর দল। এদিনও চেনা ছন্দে পাওয়া গেল না এমবাপেদের। অস্ট্রিয়ার বিরুদ্ধে ইউরোর প্রথম ম্যাচে নাক ভাঙার পর কিছুটা সতর্কতায় মোড়া ফুটবল খেলছেন ফ্রান্সের অধিনায়ক। যা স্বাভাবিক। সেই কারণেই হয়তো তাঁর সেরাটা পাওয়া যাচ্ছে না। চলতি ইউরোয় এখনও গোলের খাতা খুলতে পারেননি এমবাপে।যথারীতি লুকাকু অফকালার।
ফ্রান্সের প্রথম সুযোগ ১০ মিনিটে। গ্রিজম্যানের শট তালুবন্দি করেন কিপার। এরপরও কয়েকটা হাফ চান্স তৈরি হয়। কিন্তু ফায়দা তুলতে পারেনি ফ্রান্স। ২৮ মিনিটে হ্যান্ডবলের দাবি জানায় বেলজিয়াম। ভার প্রযুক্তির সাহায্যে নিয়ে হ্যান্ডবল দেননি রেফারি। প্রথমার্ধে ফ্রান্সের সবচেয়ে সহজ সুযোগ ৩৪ মিনিটে। কুন্ডের ক্রস থেকে থুরামের হেড লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়। তার পাঁচ মিনিট পরে চৌয়ামেনির শট বাইরে যায়। সুযোগ তৈরির দিক থেকে এগিয়ে ছিল ফ্রান্স। নয়তো দুই দলের মধ্যে বিশেষ পার্থক্য ছিল না। তবে একাধিক সুযোগ তৈরি হলেও ফাইনাল থার্ডে নৈপুণ্যের অভাব। বিরতির ঠিক আগে চৌয়ামেনির শট বাইরে যায়। গোল লক্ষ্য করে ১৯টি শটের মধ্যে মাত্র দুটো টার্গেটে ছিল। ম্যাচের ৫১ মিনিটে আবার থুরামের সুযোগ নষ্ট। তাঁর হেড বাইরে যায়। ৫৪ মিনিটে এমবাপে মিস। তিনজন প্লেয়ারকে কাটিয়ে বক্সের মাথা থেকে তাঁর শট পোস্টের ওপর দিয়ে বেরিয়ে যায়। দ্বিতীয়ার্ধেও এমবাপে, গ্রিজম্যানরা একাধিক সুযোগ তৈরি করলেও গোলে রাখতে পারেনি। গোটা ম্যাচেই ব্যাকফুটে ছিল বেলজিয়াম। কাউন্টার অ্যাটাক থেকে আক্রমণে ওঠার চেষ্টা করছিল। কিন্তু সেটাও হাতেগোনা কয়েকবার। রেড ডেভিলসদের সেরা সুযোগ ৭০ মিনিটে। লুকাকুর শট বাঁচায় ফ্রান্সের কিপার। এই প্রথম পরীক্ষার মুখে পড়তে হয় মাইগানকে। ম্যাচের ৮৩ মিনিটে ফের গোলের সুযোগ এসেছিল বেলজিয়ামের কাছে। এবার বক্সের মুখ থেকে ডি ব্রুইনের দূরপাল্লার শট বাঁচান ফরাসি কিপার। শেষমেষ দেশঁর মুখ রক্ষা করেন কোলো মুয়ানি। ম্যাচের ৮৫ মিনিটে গোল লক্ষ্য করে তাঁর শট বেলজিয়ামের ভারতনঘেনের পায়ে লেগে গোলে ঢুকে যায়। এটাই দুই দলের মধ্যে পার্থক্য গড়ে দেয়।