সুদে আসলে প্রতিশোধ নিলেন রোহিতরা। গায়ানায় ইংল্যান্ডকে দুরমুশ করে টি-২০ বিশ্বকাপের ফাইনালে ভারত। বৃহস্পতিবার অক্ষর প্যাটেল, কুলদীপ যাদবদের কাছে আত্মসমর্পণ। ৬৮ রানে হার বাটলারদের। দশ বছর পর সংক্ষিপ্ত ফরম্যাটের বিশ্বকাপ ফাইনালে ভারত। মোট তিনবার। ২০০৭ সালে টি-২০ বিশ্বকাপের অভিষেক বছরে এমএস ধোনির নেতৃত্বে চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল ভারত। শেষবার বাংলাদেশের মাটিতে ২০১৪ সালে ফাইনালে উঠেছিল টিম ইন্ডিয়া। কিন্তু শ্রীলঙ্কার কাছে হারে। ক্যারিবিয়ান দ্বীপপুঞ্জে ইংল্যান্ডকে পর্যুদস্ত করে তৃতীয়বার টি-২০ বিশ্বকাপের ফাইনালে ভারত। ফেভারিট হিসেবে টুর্নামেন্ট শুরু করেছিল রাহুল দ্রাবিড়ের দল। নিজেদের নামের প্রতি সুবিচার করে ফাইনালে দক্ষিণ আফ্রিকার মুখোমুখি রোহিতরা। ২০২২ টি -২০ বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে টিম ইন্ডিয়াকে ১০ উইকেটে হারিয়েছিল ইংল্যান্ড। এদিন বিপক্ষের ব্যাটারদের মাথা তুলে দাঁড়াতে দেয়নি অক্ষর প্যাটেল, কুলদীপ যাদবের স্পিন জুটি। মন্থর উইকেটে ভারতীয় স্পিনারদের বলই বুঝতে পারেনি ইংল্যান্ডের ব্যাটাররা। শুধু এলেন এবং গেলেন। ১৭২ রান তাড়া করতে নেমে ৭২ রানে ৭ উইকেট হারায় ইংল্যান্ড। প্রথমে ব্যাট করে ৭ উইকেট হারিয়ে ১৭১ রান তোলে ভারত। জবাবে ১৬.৪ ওভারে ১০৩ রানে অলআউট ইংল্যান্ড। তিনটে করে উইকেট নেন অক্ষর প্যাটেল এবং কুলদীপ যাদব। ইংল্যান্ডের টপ অর্ডারকে গুঁড়িয়ে দেন অক্ষর। টুর্নামেন্টের দুই অপরাজিত দল মুখোমুখি হবে ফাইনালে।
হাই-ভোল্টেজ সেমিফাইনালে পিচের চরিত্র বুঝতে ভুল করেন জস বাটলার। তাই টসে জেতার সুবিধা নিতে পারেননি। ভারতকে ব্যাট করতে পাঠান। যা চেয়েছিলেন রোহিত শর্মা। তাই টসে হার তাঁদের জন্য পার্থক্য গড়ে দেয়নি। চলতি বিশ্বকাপে ব্যর্থতা অব্যাহত বিরাট কোহলির। এদিনও রান পাননি। ছয় মেরে শুরু করেন। কিন্তু রিস টপলের বলে বোল্ড হন। ৯ বলে ৯ রান করে আউট হন। ব্যর্থ ঋষভ পন্থও (৪)। কিন্তু আরও একটি অধিনায়কোচিত ইনিংস রোহিত শর্মার। ৩৯ বলে ৫৭ রান করেন। ইনিংসে ছিল ২টি ছয়, ৪টি চার। সূর্যকুমার যাদবকে নিয়ে তৃতীয় উইকেটে ৭৩ রান যোগ করেন ভারতের নেতা। ৩৬ বলে ৪৭ রান করেন স্কাই। তাতে ছিল ২টি ছয়, ৪টি চার। গুরুত্বপূর্ণ রান যোগ করেন হার্দিক পাণ্ডিয়া (২৩), রবীন্দ্র জাদেজা (১৭)। নির্ধারিত ওভারের শেষে ৭ উইকেট হারিয়ে ১৭১ রানে শেষ করে ভারত।
রান তাড়া করতে নেমে শুরুতেই আত্মসমর্পণ ইংল্যান্ডের। একমাত্র জস বাটলার (২৩), হ্যারি ব্রুক (২৫) এবং জোফ্রে আর্চার (২১) ছাড়া কেউ দু’অক্ষরের রানে পৌঁছতে পারেনি। তৃতীয় ওভারে অক্ষরকে আনা রোহিতের মাস্টারস্ট্রোক। নিজের প্রথম ওভারেই বাটলারকে ফিরিয়ে দেন। এটাই ম্যাচের টার্নিং পয়েন্ট। অক্ষর প্যাটেলের প্রথম বলে রিভার্স সুইপ মারতে গিয়ে উইকেটের পেছনে ধরা পড়েন বাটলার। এই মন্থর উইকেটে স্পিনারের প্রথম বলেই এই শট খেলা ইংল্যান্ড অধিনায়কের ক্ষমাহীন অপরাধ। এই একটি মুহূর্ত পার্থক্য গড়ে দেয়। পাওয়ার প্লেতে ৩ উইকেট হারায় ইংল্যান্ড। যেখান থেকে আর ঘুরে দাঁড়াতে পারেনি। নিয়মিত উইকেট হারানোয় পার্টনারশিপ গড়ে ওঠেনি। দুর্দান্ত বলে আরেক ছন্দে থাকা ব্যাটার ফিল সল্টকে ফেরান বুমরা। জোড়া উইকেট ভারতীয় পেসারের। বাকি কাজটা সারেন কুলদীপ যাদব। ইংল্যান্ডের মিডল অর্ডারকে দাঁড়াতেই দেননি। চলতি টি-২০ বিশ্বকাপে সেরা অলরাউন্ড পারফরম্যান্স ভারতের। আবার বিশ্বকাপ জয়ের হাতছানি রোহিতদের সামনে।