সন্দেশখালির ভাইরাল ভিডিও নিয়ে এবার বিজেপিকে আক্রমণ করলেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। শনিবার সাংবাদিক বৈঠক করে বিজেপির বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগড়ে দিলেন তৃণমূলের সেকেন্ড ইন কমান্ড। তিনি বলেন, ‘বাংলায় রাজনীতি এত নিকৃষ্ট মানের হতে পারে সেটা ভাবতে পারিনি। সন্দেশখালির ঘটনা পুরোটাই বিজেপির বানানো।’
বিজেপিকে নিশানা করে অভিষেক বলেন, ‘বাংলাকে ছোট করার চেষ্টা করা হচ্ছে। এতদিন বিজেপিকে বাংলা বিরোধী দল এমনি বলিনি। বাংলার ভাবমূর্তিকে কালিমালিপ্ত করার চেষ্টা করেছে বিজেপি। স্বাধীনতার পরবর্তী সময় থেকে যত রাজনৈতিক দল আছে, আজকের এই ভিডিওটি সমস্ত নির্লজ্জতার সীমা পার করে দিয়েছে।’
বিজেপিকে অভিষেকের চ্যালেঞ্জ, ‘গঙ্গাধর কয়ালকে হিম্মত থাকলে সাসপেন্ড করুন।’ লোকসভা নির্বাচনে বিজেপির ভোটবাক্সে এর প্রভাব পড়বে বলেও দাবি করেছেন তৃণমূলের ‘সেনাপতি’। বলছেন, ‘বাংলায় আপনারা (বিজেপি) বলছিলেন ৩০টা আসন পাবেন। বাংলাকে ছোট করে আপনারা ৩০টা আসন পাবেন? যে পরিণতি আপনাদের একুশ সালে হয়েছিল, তার থেকেও খারাপ পরিণতি হবে।’ পরিশেষে তাঁর সংযোজন, ‘বাংলাকে ছোট করতে শুধু বিজেপি নয়, বিচারব্যবস্থার একাংশও দায়ী।’
অন্যদিকে, সন্দেশখালির ভিডিও নিয়ে সরব হয়েছে বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি এদিন নদিয়ায় নির্বাচনী সভা থেকে বলেন, ‘সন্দেশখালি নিয়ে ভাল নাটক তৈরি করেছিলেন। আসল তত্ত্ব ফাঁস। অনেক দিন ধরে বলেছিলাম, এটা পরিকল্পনা, বিজেপির তৈরি করা নাটক। ফাঁস হয়ে গিয়েছে।’ গত ৫ জানুয়ারি রেশন দুর্নীতি মামলার তদন্ত করতে গিয়ে সন্দেশখালিতে শেখ শাহজাহানের বাড়িতে যায় ইডি। আর সেখানে গিয়ে জনরোষের সম্মুখীন হয়েছিল কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা। যা নিয়ে উত্তাল রাজ্য- রাজনীতি।
ভিডিওটিতে দেখা গিয়েছে, বিজেপির মণ্ডল সভাপতি গঙ্গাধর কয়াল একটি ঘরে চেয়ারের ওপরে বসে আছেন। কেউ বা কারা তাঁকে সন্দেশখালির ঘটনাটি নিয়ে প্রশ্ন করে চলেছেন। তিনি আড্ডার ছলে প্রশ্নকর্তার সঙ্গে কথা বলছেন। বার বার উঠে আসছে শুভেন্দুর নাম। গঙ্গাধর বলছেন, ‘এই আন্দোলন এত দিন টিকে আছে কেন? তিনটে ছেলে এ দিক ও দিক যাচ্ছে, গোটা বিষয়টি পরিচালনা করছে। শুভেন্দুর আমাদের ওপরে আস্থা আছে। শুভেন্দু এক বার ঘুরে গিয়েছে, তাতেই আন্দোলন এখনও দাঁড়িয়ে রয়েছে।’ ভিডিওতে তাঁকে স্বীকার করতে শোনা গিয়েছে, শুভেন্দু টাকা এবং মোবাইল ফোন দিয়ে গিয়েছেন তাঁদের। কারণ এই ধরনের কাজ খালি হাতে হয় না। আর সেই স্বীকারোক্তির জেরেই এখন রাজ্য রাজনীতিতে তোলপাড় পড়ে গিয়েছে। যদিও এই পুরো ভিডিওর কোনওরকম সত্যতা যাচাই করেনি একদিন।
এদিকে, এই ভিডিওর সত্যতা যাচাই করতে সিবিআই তদন্তের দাবি করেছে রাজ্য বিজেপি।
সিবিআইয়ের কাছে মেইল
করেছে গঙ্গাধর: শুভেন্দু
সন্দেশখালির ঘটনা সাজানো বলে বিজেপি নেতা গঙ্গাধর কয়ালের একটি ভিডিও সোশ্যাল মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। গঙ্গাধর নাম করেছে রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর। ঘটনাটি সম্পূর্ণ সাজানো এবং অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের তৎপরতায় আইপ্যাকের তত্ত্বাবধানে ভিডিওটি এডিট করে ম্যানুফ্যাকচারিং করা হয়েছে বলে জানান রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। শনিবার নদিয়ার নবদ্বীপ সরকারপাড়ায় দলীয় প্রার্থী জগন্নাথ সরকারের সমর্থনে এক নির্বাচনী জনসভায় এসে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে এ কথা জানান রাজ্যের বিরোধী দলনেতা। এই প্রসঙ্গে এ দিন তৃণমূল কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে নিশানা করেন শুভেন্দু অধিকারী। এছাড়াও এই বিষয়ে ইতিমধ্যেই গঙ্গাধর কয়াল সিবিআই-এর কাছে মেইল মারফত অভিযোগ দায়ের করেছেন বলেও দাবি করেন তিনি। কিন্তু ভাইরাল হওয়া এই বিষয়টি সাধারণ মানুষ গ্রহণ করবে না বলেও দাবি করেন বিরোধী দলনেতা। গোটা ঘটনা যে জড়িত অর্থাৎ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে জেলে পাঠানোর হুমকি দিলেন শুভেন্দু অধিকারী। এবারের নির্বাচনে বিপুল ভোটের ব্যবধানে তৃণমূল প্রার্থীদের পরাজিত করে বিজেপি প্রার্থীরা জয়লাভ করবে বলো দাবি করেন শুভেন্দু অধিকারী। গোটা স্টিং অপারেশনের সাথে জড়িত অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় ও তার তিন আইপ্যাক এবং একজন টোটাল সাংবাদিক বলে জানিয়েছেন শুভেন্দু।