ভুবনেশ্বরের ভুবন ভোলানো স্পেল, রাজস্থানের মুখের গ্রাস কাড়ল হায়দরাবাদ

রোমাঞ্চ কারে কয়, আইপিএলের একাধিক ম্যাচে তা ভালো টের পাওয়া যায়। লক্ষ্মীবারে উপ্পল স্টেডিয়ামে ছিল অরেঞ্জ ও পিঙ্ক আর্মির লড়াই। দুটো টিমই এ বারের আইপিএলে দুরন্ত ছন্দে রয়েছে। একদিকে পয়েন্ট টেবলের টপার রাজস্থান রয়্যালস। যাদের জয়রথ কোনও টিম থামাতে পারছিল না। অন্যদিকে এ বারের আইপিএলে রানের রেকর্ড গড়া সানরাইজার্স হায়দরাবাদ। এই ম্যাচ যে রোমাঞ্চর পসরা নিয়ে বসবে বোঝাই যাচ্ছিল। হায়দরাবাদের ঘরের মাঠে জয়ের মুখে পৌঁছে গিয়েছিল সঞ্জুর রাজস্থান। কিন্তু ভুবনেশ্বর কুমারের ভুবন ভোলানো স্পেলে রাজস্থানের মুখের গ্রাস কেড়ে নিল হায়দরাবাদ।

জোড়া ম্যাচ হারার পর ঘরের মাঠে সঞ্জু স্যামসনের রাজস্থানের বিরুদ্ধে খেলল হায়দরাবাদ। প্রথমে ব্যাটিং করে ৩ উইকেটে ২০১ রান তুলেছিল হায়দরাবাদ। নেপথ্যে ওপেনার ট্রাভিস হেডের ৫৮ রান, নীতীশ কুমার রেড্ডির ৭৬ রানের অপরাজিত ইনিংস এবং হেনরিখ ক্লাসেনের ১৯ বলে ৪২ রানের ক্যামিও ইনিংস। হায়দরাবাদের বিরুদ্ধে ২টি উইকেট নেন রাজস্থানের আবেশ খান। ১টি নেন সন্দীপ শর্মা। আর ৪ ওভারে ৬২ রান খরচ করেন স্পিনার যুজবেন্দ্র চাহাল। যেটি তাঁর কেরিয়ারের সবচেয়ে ব্যয়বহুল স্পেল।

২০২ রানের টার্গেট রাজস্থানের মতো ধারাবাহিক টিমের জন্য কঠিন ছিল না। কিন্তু যে টিমে ভুবনেশ্বর কুমার নামের একজন বোলার রয়েছেন, সেই টিম যে কয়েক যোজন এগিয়ে তা আরও একবার প্রমাণিত হল। জস বাটলার এবং সঞ্জু স্যামসন এই দুই গুরুত্বপূর্ণ উইকেট প্রথম ওভারে পকেটে ভরে ফেলেন ভুবনেশ্বর কুমার। সেখানেই রাজস্থানকে বড়সড় ক্ষত দিয়ে দেয় অরেঞ্জ আর্মি। এরপর অবশ্য যশস্বী জয়সওয়াল ও রিয়ান পরাগ মিলে সেই ক্ষতে খানিক প্রলেপ লাগান। তাঁরা তৃতীয় উইকেটে ঝড় বইয়ে দেন। যশস্বী-রিয়ানের ৭৮ বলে ১৩৪ রানের পার্টনারশিপ হয়।

১৪তম ওভারে টি নটরাজন বোল্ড আউট করেন যশস্বীকে। তিনি ৪০ বলে ৬৭ রান করে মাঠ ছাড়েন। এরপর ১৬তম ওভারে ছন্দে থাকা রিয়ান পরাগকে মাঠ ছাড়া করেন হায়দরাবাদের অধিনায়ক কামিন্স। ৪৯ বলে ৭৭ রান করে মাঠ ছাড়েন পরাগ। রাজস্থানের জয়ের আশা তখনও ছিল। কারণ তাঁদের পাওয়ার হিটারদের নামা তখনও বাকি ছিল যে।

৯ বলে ১৩ রান করেন শিমরন হেটমায়ার। ধ্রুব জুরেল ৩ বলে ১ করে ফেরেন। রোভম্যান পাওয়েল ও রবিচন্দ্রন অশ্বিন শেষ অবধি ক্রিজে ছিলেন। শেষ ওভারে রাজস্থানের জয়ের জন্য প্রয়োজন ছিল ১৩ রান। বল করতে আসেন ভুবনেশ্বর কুমার। প্রথম বলে সিঙ্গল নিয়ে স্ট্রাইক রোভম্যানকে দেন অশ্বিন। দ্বিতীয় বলে ২ রান নেন পাওয়েল। তৃতীয় বলে চার মারেন। এই পরিস্থিতিতে ৩ বলে রাজস্থানের জয়ের জন্য লাগত ৬ রান। ওভারের চতুর্থ বলে রোভম্যান ২ রান নেন। পঞ্চম বলে পড়িমড়ি করে ছুটে ফের ২ রান। ডাইভ দিয়ে রান আউট এড়ান তিনি। শেষ বলে রাজস্থানের জয়ের জন্য প্রয়োজন ছিল ২ রান।

যদি শেষ বলে একও তুলতে পারত পিঙ্ক আর্মি, তা হলে মরসুমের প্রথম সুপার ওভার হত। কিন্তু শেষ বলে যে লেখা ছিল ভুবির নাম। তিনি এলবিডব্লিউ করেন পাওয়েলকে। ১৫ বলে ২৭ করেন তিনি। যার ফলে ১ রানে ম্যাচ জিতে নেয় হায়দরাবাদ। আইপিএলের ইতিহাসে সবচেয়ে কম মার্জিনে জয় এটাই।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

four × 3 =