কলকাতা: রাজ্যে দু’দিনের সফরে এসেছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। তার মধ্যেই বিজেপি নেতার রহস্যমৃত্যু। কলকাতার কাশীপুরের (Kashipur)এক পরিত্যক্ত রেল কোয়ার্টারের ঘর থেকে উদ্ধার হয় ওই বিজেপি যুব নেতার ঝুলন্ত মৃতদেহ। মৃত বিজেপি নেতার নাম অর্জুন চৌরাসিয়া। খবর স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর কানে পৌঁছাতেই উদ্বেগ প্রকাশ করছেন তিনি। ঘটনার জেরে অমিত শাহের (Amit Shah) কর্মসূচিতে রদবদল করা হয়েছে। সূত্রের খবর, নিহত বিজেপি নেতা অর্জুন চৌরাসিয়ার বাড়িতে যাবেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। দেখা করবেন পরিবারের লোকদের সঙ্গে।
পরিবারের তরফে দাবি করা হচ্ছে, যতক্ষণ না স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসছেন ততক্ষণ দেহ ছাড়া হবে না। উল্লেখ্য, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে সংবর্ধনা জানাতে কাশীপুর থেকে একটি বাইক মিছিল করার কথা ছিল। যার নেতৃত্বে ছিলেন অর্জুনই। মৃত্যুর খবর পেতেই সেই অনুষ্ঠান বাতিল করার নির্দেশ দেন অমিত শাহ। এদিকে ঘটনাস্থলে পরিস্থিতি অগ্নিগর্ভ। একদিকে বিজেপি. অন্য দিকে তৃণমূল। মাঝখানে পুলিশ। দুই পক্ষের মধ্যে মাঝেমধ্যেই হাতাহাতির পরিস্থিতি তৈরি হচ্ছে। তৃণমূল নেতা অতীন ঘোষ ঘটনাস্থলে গেলে গো ব্যাক স্লোগান দেয় বিজেপি। আছেন বিজেপি নেত্রী মিনাদেবী পুরোহিত, কল্যাণ চৌবে। অর্জুনের বাড়ি পৌঁছে গেছেন বিজেপির সর্বভারতীয় সহ সভাপতি দিলীপ ঘোষও।
ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়েছেন নর্থ কলকাতার ডিসি ও উচ্চ পদস্থ অফিসাররা। যদিও তাঁদের হাতে ময়নাতদন্তের জন্য দেহ তুলে দিতে নারাজ পরিবারের। কিছুতেই তাঁরা ঘর থেকে দেহ বাইরে নিয়ে যেতে দিচ্ছেন না।
উত্তর কলকাতার বিজেপি সভাপতি কল্যাণ চৌবে জানান, ‘স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী কলকাতা বিমান বন্দরে নেমে কাশীপুর আসবেন।’ যদিও পরিবারের সম্মতি ছাড়া দেহ নিয়ে যাওয়া যাবে না বলেও জানান তিনি। অবশ্য এই ঘটনাতেও বিজেপির দিকেই আঙুল তোলেন তৃণমূল মুখপাত্র। শুক্রবার কাশীপুর কাণ্ড নিয়ে উত্তেজনার মাঝেই একটি টুইট করেন কুণাল ঘোষ (Kunal Ghosh)। লেখেন, “তান্ত্রিকদের নরবলির মত। আত্মহত্যা, নাকি আসলে নিজেদেরই বিক্ষুব্ধ শিবিরের কাউকে শেষ করে ইস্যু তৈরির চেষ্টা? তাঁর সফরের মধ্যে হলে নাটক করার সুযোগও থাকছে। ওদেরই সুপরিকল্পিত চিত্রনাট্য নয় তো? জনবিচ্ছিন্ন সরীসৃপরা প্রচার আর কুৎসার জন্য আর কত নামবে? তদন্ত চলুক।”
শুক্রবার ঝুলন্ত অবস্থায় মেলে অর্জুনের দেহ। ঘটনাস্থলে পৌঁছায় চিৎপুর থানার পুলিশ। তবে ওই ঘর থেকে কোনও সুইসাইড নোট মেলেনি, বলে জানা গিয়েছে। তাই মৃত্যুর কারণ নিয়ে রহস্য তৈরি হয়েছে। পরিবার ও এলাকাবাসীরা, খুনের সন্দেহও উড়িয়ে দিচ্ছেন না। ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ। অর্জুনের পরিবার ইতিমধ্যেই এই মৃত্যুতে সিবিআই তদন্তের দাবি করেছেন।