১২ বছরের অপেক্ষার অবসান ঘটল অবশেষে। এক যুগ পর আবার ট্রফি নিয়ে শহরে ফিরল ইস্টবেঙ্গল। ট্রেভর জেমস মর্গ্যানের আমলে ফেডারেশন কাপ, আইএফএ শিল্ড এসেছিল সে বার। ১২ বছর পর আর এক বিদেশি কোচের হাত ধরে অপেক্ষার অবসান ঘটল। সুপার কাপে টিমকে চ্যাম্পিয়ন করলেন কার্লেস কুয়াদ্রাত। রবি-রাত থেকেই উৎসব শুরু হয়ে গিয়েছিল। কলিঙ্গ স্টেডিয়ামে হাজির ছিলেন অগণিত সমর্থক। সোমবার বিকেলে লাল-হলুদ টিম কলকাতায় পা দিতেই শুরু হয়ে গেল মাত্রাছাড়া উৎসব। বিমানবন্দর যেন লাল-হলুদ সরণি।
গত রাত থেকেই প্রস্তুতি নিতে শুরু করে দিয়েছিলেন ইস্টবেঙ্গল সমর্থকরা। টিমকে উষ্ণ অভ্যর্থনা জানানোর জন্য় লাল-হলুদ আবির, স্মোকবম্ব,পতাকায় ছেয়ে দেওয়া হয় বিমানবন্দর। বাঁধভাঙা উচ্ছ্বাসে ফেটে পড়েন সমর্থকরা। অতীতে এমন দৃশ্য দেখা যেত। প্রায় হাজার দশেক সমর্থক ভিড় করেছিলেন বিমানবন্দরে। সাপোর্টারদের ভিড়ের কারণে টিম বেরতে পারছিল না এয়ারপোর্ট থেকে। প্রায় ৩০ মিনিট অপেক্ষা করতে হয় কুয়াদ্রাত, ক্লেটন, গিলদের। অবশেষে বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ ও পুলিশি তৎপরতায় এক-একজনকে এসকর্ট করে বের করে নিয়ে আসা হয় বিমানবন্দর থেকে।
সুপার কাপ জেতার পর টিমকে দু’দিনের ছুটি দিয়েছেন কুয়াদ্রাত। অনেকেই ভুবনেশ্বর থেকে সরাসরি চলে গিয়েছেন বাড়ি। কয়েকজন ফিরেছেন শহরে। তাতেও উৎসবে কোনও ঘাটতি ছিল না। গত কয়েক বছরে ইস্টবেঙ্গল জুড়়ে শুধুই ব্যর্থতা। ইনভেস্টর বদলের গল্প, কোচ ছাঁটাইয়ের কাহিনি, টিম ভালো না করতে পারার নানা অজুহাত। সব সে অতীত করে ভারতীয় ফুটবলে আবার মাথা তুলে দাঁড়াল ইস্টবেঙ্গল। কুয়াদ্রাত সুপার কাপ জিতিয়েই থামতে চাইছেন না। স্প্যানিশ কোচের এ বার লক্ষ্য আইএসএলের ডার্বি। ৩ ফেব্রুয়ারি যুবভারতীতে মোহনবাগানের বিরুদ্ধে আবার নামবে ইস্টবেঙ্গল। মরসুমে এখনও পর্যন্ত তিনটে ডার্বি খেলেছে ইস্টবেঙ্গল। লাল-হলুদের পক্ষে স্কোরলাইন আপাতত ২-১। কুয়াদ্রাত খুব ভালো করে জানেন, যুবভারতীতে ডার্বি জিততে না পারলে সুপার কাপ জয়ের স্বাদ ভুলে যেতে সময় লাগবে না। সমর্থকদের নয়নের মণি হয়ে উঠেছেন স্প্যানিশ কোচ। সেই তাঁরাই কিন্তু সাফল্য ছাড়া তাঁকে গ্রহণ করবেন না। তাই কুয়াদ্রাতের ভাবনাতে ঢুকে পড়েছে আইএসএলের ডার্বি। সুপার কাপের কারণে ডার্বির প্রস্তুতির জন্য মাত্র দু’দিন সময় পাবে ইস্টবেঙ্গল। তাতেও চেনা শত্রুর বিরুদ্ধে ছক তৈরি করতে অসুবিধা হবে না, এমনই মনে করছেন লাল-হলুদ কোচ।